সুশান্ত ঘোষ, আমাদের ভারত, উত্তর ২৪ পরগণা, ৬ এপ্রিল: সন্দেহের বসে স্ত্রীকে কুড়ুল দিয়ে খুন করল স্বামী। নিজেই থানায় ফোন করে বলেন, স্ত্রীকে খুন করেছি আপনারা আমাকে গ্রেফতার করুন। পরে হুঁশ ফিরতেই নিজেই গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করে স্বামী। ওই ব্যক্তিকে পরে পাকড়াও করে স্থানীয়রা। রবিবার সাত সকালে ঘটনাটি ঘটেছে উত্তর ২৪ পরগনার বাগদা থানার কোলাগ্রামে।
অভিযোগ, স্ত্রীকে অন্যের সঙ্গে ভিডিও কলে কথা বলতে দেখেছিল। স্ত্রী পরকিয়ায় জড়িয়ে আছে, এই সন্দেহে কুড়ুল দিয়ে কুপিয়ে ‘খুন’ করল স্বামী। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতের নাম অর্পিতা বিশ্বাস (২৮)। পরে পুলিশ প্রসেনজিৎ বিশ্বাসকে গ্রেফতার করেছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর সাতেক আগে অর্পিতার সঙ্গে বাগদার কোলাগ্রামের বাসিন্দা প্রসেনজিতের বিয়ে হয়েছিল। তাদের পাঁচ বছরের একটি কন্যা সন্তান রয়েছে। অর্পিতা সামাজিক মাধ্যমে ভিডিও বানাতেন। সেই সূত্রে বেশ কয়েকজনের সঙ্গে তাঁর পরিচয় হয় বলেও খবর। রাতের দিকে প্রায়ই অর্পিতার মোবাইলে ফোন আসত বলে অভিযোগ। স্বামী প্রসেনজিৎ সে সব পছন্দ করত না। অর্পিতার প্রতি ক্রমে সন্দেহ বাড়তে থাকে। বিষয়টি নিয়ে পরিবারের মধ্যে অশান্তি শুরু হয়। তারই মধ্যে অর্পিতা মাঝেমধ্যে বাড়ি থেকে একা বেরিয়ে যেতেন। ফিরতেন রাত করে। এমন অভিযোগও উঠেছে। প্রসেনজিতের সন্দেহ, স্ত্রী পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েছে। বিষয়টি নিয়ে পরিবারের মধ্যে অশান্তি চরমে পৌঁছয়। রবিবার সকালে অর্পিতা রান্না ঘরে কাজ করছিলেন। সেই সময় স্ত্রীকে ভিডিওকলে কারও সঙ্গে কথা বলতে দেখে প্রসেনজিৎ। সন্দেহের বশে কুড়ুল নিয়ে এসে স্ত্রীকে কোপাতে থাকে সে। ঘটনাস্থলেই মারা যান অর্পিতা। এরপর থানায় নিজেই ফোন করে স্ত্রীকে খুনের কথা জানায়। এরপর প্রসেনজিৎ গলায় ফাঁস লাগিয়ে নিজে আত্মহত্যার চেষ্টা করে।
খুনের কথা জানাজানি হতেই এলাকার বাসিন্দারা সেখানে পৌঁছে যায়। তারাই প্রসেনজিৎকে আটকে রাখেন। বাগদা থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করে। মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। প্রসেনজিতের বৃদ্ধা মা গোটা ঘটনায় স্তম্ভিত। সন্দেহের বশে যে এমন ঘটনা ঘটাতে পারে, ভাবতে পারছেন না প্রতিবেশীরাও।