সোমনাথ বরাট, আমাদের ভারত, বাঁকুড়া, ১৩ ফেব্রুয়ারি: ফসল বিমায় ক্ষতিপূরণ না পেয়ে ক্ষুব্ধ জেলার ক্ষতিগ্রস্ত চাষিরা। জেলায় এবার আমন ধানের ফলন ভাল হয়েছে, তাই প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে ক্ষতিগ্রস্থ চাষিরা পাচ্ছেন না বাংলার ফসল বিমা যোজনার ক্ষতিপূরণের টাকা। বাঁকুড়া জেলায় এবার আমন ধানের ফলন হয়েছে ১২ লক্ষ ৯ হাজার মেট্রিক টন। যা গত বছরের তুলনায় অনেকটাই বেশি। জেলায় সারা বছরের জন্য ধানের প্রয়োজন হয় ৩ লক্ষ ৬০ হাজার মেট্রিক টন। এ বছর জেলার মোট চাহিদার তিন গুণ ধান উৎপন্ন হয়েছে। অন্যদিকে প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে ধানের ব্যাপক ক্ষতি হওয়ায় বাংলার ফসল বিমা যোজনায় ক্ষতিপূরণের জন্য আবেদন জানায় ৪ লক্ষ ৬৩ হাজার ২৯৮ জন চাষি। এখনও পর্যন্ত জেলার কোনো চাষিই ক্ষতিপূরণের টাকা পাননি। এতে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
উল্লেখ্য, এবার পুজোর ঠিক আগে ডিভিসি থেকে প্রচুর পরিমাণে জল ছাড়ার কারণে দামোদর সংলগ্ন বিভিন্ন ব্লকের প্রচুর ধান জমি জলে ডুবে যায়। দীর্ঘ সময় জলে ডুবে থাকায় ধান গাছ পচে নষ্ট হয়ে যায়। জেলার অনেক জায়গায় প্রাকৃতিক বিপর্যয় ডানার প্রভাবে পাকা ধান নষ্ট হয়। চাষিদের অভিযোগ, ধান চাষের পাশাপাশি আলু চাষেও ক্ষতি হয়েছে। কুয়াশার কারণে আলুতে ধসা রোগ ছড়িয়ে পড়ে। কিন্তু তারা বিমার ক্ষতিপূরণের টাকা পাচ্ছে না। চাষিদের আরও অভিযোগ, বাঁধা ও ফুল কপি চাষেও ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন তারা। জেলার বাজারগুলিতে বাঁধা ও ফুল কপির দাম একেবারে পড়ে গেছে। সব মিলিয়ে জেলার অনেক চাষি ক্ষতিগ্রস্ত।
চাষিদের বক্তব্য, শষ্য বিমার প্রিমিয়াম এতদিন পর্যন্ত তারা দিতেন। বর্তমানে রাজ্য সরকার বিমা কোম্পানীগুলিকে চাষিদের প্রিমিয়ামের টাকা দিচ্ছে। তবে এই পরিবর্তনের পর থেকেই বিমার টাকা নিয়ে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে তাদের।এই প্রেক্ষিতে উল্লেখ্য, সম্প্রতি মুর্শিদাবাদের খড়গ্রাম ও কান্দি এলাকার চাষিদের একই অভিযোগে সরব হতে দেখা যায়। বসন্তপুর, সাবলদহ, বিশ্বনাথপুর, কাদিপুর, পদমকাদি, ঝাঁঝড়া ইত্যাদি বিভিন্ন এলাকার চাষিরা অভিযোগ করেন যে, পুজোর মুখে প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও দ্বারকা নদীর বন্যায় ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়। তারা আবেদন করেও ক্ষতিপূরণের জন্য বিমার টাকা পাচ্ছেন না।
বাঁকুড়া জেলার চাষিদের অভিযোগ, কুয়াশা ও অন্য কারণে আলু চাষে এবার কী ক্ষতি হয়েছে তা দেখার জন্য সম্প্রতি রাজ্য থেকে একটি প্রতিনিধি দল এসেছিল। আমনের ক্ষেত্রে সেরকম কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।