আমাদের ভারত, উত্তর ২৪ পরগণা, ২৭ জানুয়ারি: উত্তর ২৪ পরগনা জেলা পরিষদের শিল্প ও সড়ক দপ্তরের প্রাক্তন কর্মাধ্যক্ষ গোলাম বিশ্বাসের ভাই আব্দুল বারিক বিশ্বাসের বাড়িতে সিবিআইয়ের হানা। বুধবার সকালে সিবিআই এর একটি বিশেষ দল বারিক বিশ্বাসের বাড়িতে হানা দেয় এবং খানাতল্লাশি করে।
তার ইমপোর্ট এক্সপোর্টের ব্যবসা আছে এই নামেই এলাকায় পরিচিত আব্দুল বারিক বিশ্বাস। কিন্তু তার আড়ালেই যে তার কয়েকশো অবৈধ ব্যবসা ছিল তাও অজানা নয় বসিরহাট বাসীর। রাজনীতি থেকে প্রশাসন সবার ঘরে তার যাতায়াত অবাধ। ২০০৬ সাল থেকে বিশ্বাস পরিবারের সঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে ঘনিষ্টতা বৃদ্ধি পায়। এর আগে বারিক বিশ্বাস বাম নেতাদের ছত্রছায়ায় ছিল। ২০০৮ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনে বামেদের ক্ষমতা হারাতে দেখে বারিকও বিকল্প ছাতা খুঁজতে থাকে। তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে ঘনিষ্টতা বৃদ্ধি করে এবং তার চোরাই কারবারের ব্যবসা অব্যাহত রাখে।
ভারত–বাংলাদেশ সীমান্তে অবৈধ ভাবে গরু থেকে মানুষ সব বিষয়েই পাচারের অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। বেশ কয়েকবার বিএসএফ, কেন্দ্রীয় সরকারের শুল্ক বিভাগ ও আয়কর দপ্তরের হাতে গ্রেফতার হয়। কিন্তু কোনোটাতেই তাকে বেশি দিন শ্রীঘরে আটকে রাখা সম্ভব হয়নি এই প্রভাবশালী চোরাকারবারীরকে। সোনা, মাদক, আগ্নেয়াস্ত্র, বিভিন্ন রাসায়নিক, ইলেকট্রনিক্স পণ্য,খাদ্য সামগ্রী, বস্ত্র , জ্বালানী তেল এমন কি ওষুধ পাচারেও আব্দুল বারিক বিশ্বাসের সমান দক্ষতা ছিল। বিএসএফ ও পুলিশের একাংশের সঙ্গে মাসিক চুক্তিতে এই কারবার যে ভাবে চলত সেটা বসিরহাটের কোনো মানুষের অজানা নয়। একথায় বলা যায় বসিরহাটের ডন বারিক বিশ্বাস।
২০১১ তে রাজ্যের ক্ষমতায় তৃণমূল কংগ্রেস আসার পরে বারিক বিশ্বাসের ব্যবসা আরো রমরমা হয়। ভাই গোলাম বিশ্বাসকে জেলা পরিষদের শিল্প ও সড়ক দপ্তরের কর্মাধ্যক্ষ পদে আসীন করে প্রভাব বিস্তার করে জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের ওপরেও। বলা বাহুল্য তাকে আর ছোঁয় কে ? কিন্তু লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য ব্যাপী আশানুরূপ ফল না হওয়ায় এরাও চিন্তিত হয়ে পড়ে। কিভাবে টিম রক্ষা করবে, চেন ব্যবসা বেহাত হলে বেচেঁ থাকা কঠিন। ফের ঘুর পথে শুরু করে নানা চোরাকারবারীর ব্যবসা। কিন্তু শেষ রক্ষা হলো না।