খয়রাশোলে জলের তোড়ে ভেঙ্গেছে কজওয়ে, বিচ্ছিন্ন দুই জেলার যোগাযোগ

আশিস মণ্ডল, সিউড়ি, ২৮ মে: জলের তোড়ে ভেঙ্গে গিয়েছে অস্থায়ী কজওয়ে। ফলে বিচ্ছিন্ন দীপের মতো বসবাস করছেন খয়রাশোল ব্লকের কয়েক হাজার মানুষ। যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন বীরভূমের সঙ্গে পশ্চিম বর্ধমানের। নদী পারাপার করতে এখন মানুষের ভরসা মহিষের গাড়ি। তাতেই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পারাপার করা হচ্ছে মানুষ থেকে মোটরবাইক। জানা গিয়েছে, অজয় নদীর উপর খয়রাশোল ব্লকের পারসুন্ডি পঞ্চায়েতের পশ্চিম বড়কোলা চুরুলিয়া ঘাটে অস্থায়ী সেতু রয়েছে। ওই সেতু বীরভূম ও পশ্চিম বর্ধমান জেলার যোগাযোগ সংযোগকারী অন্যতম রাস্তা। যসের প্রভাবে ঝাড়খণ্ডে ভারি বৃষ্টিপাত হওয়ায় অজয়ের জল বৃদ্ধি পায়। ফলে ভেসে যায় ওই অস্থায়ী কজওয়ে। ফলে পশ্চিম বর্ধমান জেলার জামুড়িয়া ব্লকের চুরুলিয়া ও বীরভূমের খয়রাশোল ব্লকের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন। এই সেতু দিয়েই বীরভূমের সহস্রাধিক মানুষ প্রতিদিন নিত্যকাজে পশ্চিম বর্ধমান জেলার জামুরিয়া,
আসানসোল, রানীগঞ্জ যাতায়াত করেন। খয়রাশোল ব্লকের কাঁকড়তলা থানার গ্রামগুলির সঙ্গে জেলার সদর শহর সিউড়ির দূরত্ব প্রায় ৭০ কিমি হওয়ায় এলাকার মানুষ নিত্য প্রয়োজনে জামুরিয়া, আসানসোল বেশি যান।

পারসুন্ডির অঞ্চল তৃণমূল সভাপতি তথা অধ্যাপক উৎপল বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “বীরভূমের এই বিস্তীর্ণ এলাকায় কর্ম সংস্থানের কোন সুযোগ না থাকায় পেটের টানে এলাকার মানুষকে জামুরিয়া শিল্পতালুকে যেতে হয়। এছাড়াও উচ্চশিক্ষা এবং চিকিৎসার জন্য আসানসোল যেতে হয় ছেলেমেয়েদের। আসানসোল, রানীগঞ্জে থাকা কেন্দ্রীয় সরকারের বহু সংস্থার কর্মী এই রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করেন। কিন্তু কজওয়ে ভেঙ্গে যাওয়ায় দুর্ভোগে পরেছেন তারা। এখন পারাপারের ভরসা মহিষের গাড়ি”। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, অবিলম্বে নদীর উপর স্থায়ী সেতু নির্মাণ করা হোক।

খয়রাশোল পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি শ্যামল গায়েন বলেন, “অজয় নদীর উপর প্রায় এক কিলোমিটার কজওয়ে। আমরা প্রতিবছর টেন্ডার ডেকে ওই কজওয়ে নির্মাণের ছাড়পত্র দিই। যারা টেন্ডার পান তারা গাড়ি পারাপারের জন্য সামান্য পয়সা নিয়ে ওই কজওয়ে নির্মাণ করেন। আমরা জেলা পরিষদে কংক্রিট সেতু নির্মাণের আবেদন করেছিলাম। প্রাথমিক বাজেট ধরা হয়েছিল ১০ কোটি টাকা। কিন্তু জেলা থেকে মঞ্জুর হয়নি”।

দুবরাজপুর বিধায়ক বিজেপির অনুপ সাহা বলেন, “পশ্চিম বড়কোলা এলাকায় অজয়ের উপর স্থায়ী সেতুর খুব প্রয়োজন। নির্বাচনী প্রচারে গিয়ে আমি সেই সমস্যা দেখছি। সেই সঙ্গে লোবা অঞ্চলের দেবীপুর চড়ের মানুষ দুটি নদীর মাঝে বসবাস করেন। তারা বাসের অস্থায়ী কাঠামোর উপর দিয়ে যাতায়াত করেন। কিন্তু সেই বাঁশের কাঠামো ভেঙ্গে গিয়েছে। আমি এনিয়ে বিধানসভায় সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করব”।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *