আমাদের ভারত, ১৮ ফেব্রুয়ারি: যেমন কথা তেমন কাজ। ভোটের আগে যে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল, ভোটের পরেই সেই প্রতিশ্রুতি মেনে কাজ শুরু হয়ে গেল। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী নিজে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন যে, দিল্লিতে বিজেপি সরকার ক্ষমতায় এলে প্রথম কাজ হবে যমুনার সাফাই অভিযান। প্রধানমন্ত্রী সেই প্রতিশ্রুতি পালন করতে এবার উঠে পড়ে লাগলেন দিল্লির উপ রাজ্যপাল ভি কে সাকসেনা। বিরাট বিরাট মেশিন নামলো প্রায় নর্দমায় পরিণত হয়ে যাওয়া যমুনায়। তিনি জানান, প্রধানমন্ত্রী যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন সেই মতো কাজ ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে।
সদ্য শেষ হয়েছে দিল্লি বিধানসভা নির্বাচন। এখনো নতুন মন্ত্রিসভা শপথ নেয়নি। এবারের ভোটে অন্যতম প্রধান ইস্যু ছিল যমুনা পরিষ্কার। বিজেপির অভিযোগ ছিল, ১০ বছর ক্ষমতায় থেকে যমুনা সাফাইয়ের কোনো উদ্যোগ নেয়নি আপ সরকার। কেন্দ্রের টাকা নয়ছয় করেছে তারা। আপ সরকারকে উৎখাতের পর বিজেপি সরকারের প্রথম কাজ হবে যমুনার হারানো গৌরব ফিরিয়ে আনা। এদিকে আপের যুক্তি ছিল, করোনা পরিস্থিতির জেরে তাদের সরকার এই কাজ করে উঠতে পারেনি। এবার ক্ষমতায় ফিরলেই যমুনা পরিস্কারের কাজ তারা শুরু করবেন।
কিন্তু কেজরির আশ্বাস মনে ধরেনি দিল্লিবাসীর। ৭০ আসনের রাজধানীতে আপ পেয়েছে ২২টি আসন। সেখানে ৪৮টি আসনে জয় পেয়ে ২৭ বছর পর দিল্লিতে ক্ষমতায় ফিরেছে বিজেপি। নয়া সরকার গঠনের আগেই প্রতিশ্রুতি পূরণে কোমর বেঁধে নেমেছে দিল্লির উপ রাজ্যপাল। দিল্লির মুখ্য সচিবের সঙ্গে বৈঠক করে দ্রুত এই বিষয়ে কাজ শুরুর নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
এরপর সোমবারই দেখা যায় যমুনার পলি পরিষ্কারের জন্য ভারি ভারি ড্রেসিং মেশিন উপস্থিত হয়েছে নদীর পাড়ে। দিল্লি প্রশাসনের তরফে বলা হয়েছে, হিন্দুদের ধর্মীয় ভাবনার অন্যতম প্রতীক যমুনা। এই নদী পরিষ্কার করতে বিশেষ পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। নদীতে জমে থাকা ময়লা, জঞ্জাল পরিষ্কার করা হবে। নদীর নব্যতা বাড়াতে তোলা হবে দীর্ঘ বছরের জমে থাকা পলি। যমুনায় যে সব নালা ও নর্দমা এসে মিশছে সেই নর্দমাগুলিকেও পুরোপুরি পরিষ্কার করে নতুন রূপ দেওয়া হবে। পয়ঃ নিষ্কাশন শোধনাগারগুলির ক্ষমতা ও কার্যকারিতা নিয়মিত যাচাই করে দেখা হবে।
নির্বাচনী প্রচারে বিজেপির তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল, ক্ষমতায় আসার পর তিন বছরের মধ্যে যমুনাকে পরিষ্কার করা হবে। সেই লক্ষ্যমাত্রা সম্পূর্ণ করতে একসঙ্গে কাজ করবে দিল্লি জল বোর্ড, সেচ ও বন্যা নিয়ন্ত্রণ বিভাগ, পৌর কর্পোরেশন, পরিবেশ বিভাগ, গণপূর্ত বিভাগ এবং দিল্লি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ সহ বেশ কয়েকটি সংস্থা। শুধু তাই নয়, কারখানার বর্জ্য যাতে সরাসরি যমুনায় না এসে পড়ে তার উপর কড়া নজরদারি চালাবে দিল্লি দূষণ নিয়ন্ত্রণ কমিটি।