২০২১এ রাজ্যে ক্ষমতায় আসতে গেলে কি করতে হবে? প্রধানমন্ত্রী জানতে চাইলেন সাংসদের কাছে

আমাদের ভারত, ৬ মার্চ: প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী পশ্চিমবঙ্গের বর্তমান পরিস্থিতির খবর নিলেন উত্তরবঙ্গের বালুরঘাটের সাংসদ সুকান্ত মজুমদারের কাছ থেকে। বর্তমান পরিস্থিতির পাশাপাশি তিনি জানতে চান কি কি করলে ২০২১ এর বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি ক্ষমতা দখল করতে পারবে। সুকান্তবাবু প্রধানমন্ত্রী প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার পাশাপাশি উত্তরবঙ্গে উন্নয়নে জোর দেওয়ার আবেদন জানিয়েছেন।

বিজেপির লক্ষ্য ২০২১এর নির্বাচন। এই নির্বাচনে কিভাবে রাজ্যের ক্ষমতায় আসা যায় সেটাই এখন বিজেপির মূল লক্ষ্য। সেইমত নির্বাচনী রণকৌশল তৈরি করছে তারা– বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রীর নরেন্দ্র মোদী এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। পশ্চিমবঙ্গে ক্ষমতায় আসতে কি করা প্রয়োজন তার রূপরেখা তৈরি করতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী যেমন রাজ্যে এসে দলীয় নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করছেন, তেমনি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও দলের সাংসদদের সঙ্গে আলাদা আলাদা বৈঠক করছেন। সেই বৈঠকে প্রত্যেক সাংসদের কাছ থেকে রাজ্যের বর্তমান পরিস্থিতির পুঙ্খানুপুঙ্খ রিপোর্ট নিচ্ছেন। সাংসদদের কাছে জানতে চাইছেন কি করলে তৃণমূল সরকারকে ক্ষমতা থেকে সরানো যায়? ইতিমধ্যেই বেশ কয়েকজন সাংসদের সঙ্গে একান্ত বৈঠক করেছেন প্রধানমন্ত্রী। এদের মধ্যে রয়েছেন, লকেট চট্টোপাধ্যায়, নিশীথ প্রামানিক সৌমিত্র খাঁ সহ এক ঝাঁক সাংসদ। আজও তিনি আলাদাভাবে বৈঠক করলেন দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাটের সাংসদ সুকান্ত মজুমদারের সঙ্গে। সকালে এই বৈঠক হয়। প্রধানমন্ত্রী তাঁর কাছে রাজ্যের বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে জানতে চান। এছড়া কি করলে আগামী বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি ক্ষমতা দখল করতে পারবে তা–ও জানতে চান।

সুকান্ত মজুমদার প্রধানমন্ত্রীকে বলেন, বর্তমান রাজ্য সরকার পুলিশ এবং জেলাশাসকদের ব্যবহার করে রাজ্যের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে ভূলুণ্ঠিত করেছে। এ ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ দাবি করেন তিনি। এছাড়া বিভিন্ন দুর্নীতির কথাও তুলে ধরেন। তিনি বলেন, কেন্দ্রীয় সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পে ব্যাপক দুর্নীতি হচ্ছে, কেন্দ্রীয় সরকারের টাকা নয়ছয় করা হচ্ছে। এই প্রসঙ্গে তিনি এমজিএনআরইজিএস প্রকল্পের কথা তুলে ধরেন। এই প্রকল্পে বহু টাকা নয়ছয় করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।

এছাড়া তিনি বলেন, সারদা মামলার দ্রুত সমাধান করা উচিত, কারণ এর সঙ্গে যুক্ত রয়েছে বহু মানুষ। তারা এখনো তাদের টাকা পাননি। তাই এই মামলা দ্রুত শেষ করে মানুষের টাকা ফেরত দেওয়ার অনুরোধ করেন সুকান্তবাবু। রাজ্যের ক্ষমতা দখলের ক্ষেত্রে বিভিন্ন প্রস্তাব দেওয়ার পাশাপাশি উত্তরবঙ্গকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়ার আবেদন জানান সুকান্তবাবু। তিনি বলেন, উত্তরবঙ্গ বরাবরই অবহেলিত। সেখানকার যোগাযোগ ব্যবস্থা অত্যন্ত খারাপ, স্বাস্থ্যব্যবস্থা তথৈবচ। স্বাস্থ্য ব্যবস্থার বেহাল অবস্থা তুলে ধরে তিনি বলেন, উত্তর বঙ্গের একমাত্র মেডিকেল কলেজ রয়েছে শিলিগুড়িতে। অথচ সেখানে কোনো নিউরোসার্জন নেই। এই এলাকা দিয়ে চলে গেছে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক এবং এশিয়ান হাইওয়ে। প্রতিমুহূর্তে দুর্ঘটনার আশঙ্কা। অথচ মেডিকেল কলেজে কোনও নিউরো সার্জন না থাকায় দুর্ঘটনায় আহত রোগীর সঠিক চিকিৎসা পাওয়া সম্ভব হচ্ছে না।
তাই উত্তরবঙ্গের উন্নয়নের দিকে যথেষ্ট গুরুত্ব দেওয়া উচিত বলে তিনি প্রধানমন্ত্রীকে জানান। এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, উত্তর পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলির জন্য যেমন বিশেষ ব্যবস্থা আছে ঠিক একইভাবে উত্তরবঙ্গের জন্য বিশেষ প্যাকেজ ঘোষণা করা উচিত। সুকান্ত মজুমদার জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রী তাঁর সব কথাই গুরুত্বসহকারে শুনেছেন এবং তিনি বিষয়টি দেখবেন বলেও আশ্বাস দিয়েছেন।

সাংসদ সুকান্ত মজুমদার আজ প্রধানমন্ত্রীকে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার প্রসিদ্ধ শিল্পীদের বানানো উত্তরীয় এবং হাতে তৈরি একটি তোয়ালে উপহার দেন। এছাড়া জেলার বিখ্যাত শিল্পীদের বানানো একটি মুখা উপহার হিসেবে তুলে দেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *