Sukanta, BJP, “সুকান্ত মজুমদার ভয় পায় না, নিজের পথেই চলবে”

আমাদের ভারত, ১০ নভেম্বর: রাজ্যে ছয় আসনে উপনির্বাচন। তার আগে নির্বাচন কমিশনে সুকান্ত মজুমদার ও কেন্দ্রীয় বাহিনীর বিরুদ্ধে এক যোগে অভিযোগ জানিয়েছে তৃণমূল। এর পাল্টা জবাব দিয়ে বিজেপির রাজ্য সভাপতির হুঙ্কার সুকান্ত মজুমদার ওদের অভিযোগে ভয় পায় না। সুকান্ত মজুমদার নিজের পথে চলছে নিজের পথেই চলবে। বিজেপির হয়ে লড়াই করছে, আগামী দিনেও করবে।

তৃণমূলের তরফে সুকান্ত মজুমদারের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা এবং মন্ত্রীত্ব পদ থেকে সরানোর দাবি উঠেছে। এই প্রসঙ্গে এক রকম কটাক্ষ করেই বিজেপির রাজ্য সভাপতি তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী পাল্টা দিয়ে বলেন, মামার বাড়ির আবদার নাকি? মন্ত্রীত্ব থাকবে কি থাকবে না সেটা প্রধানমন্ত্রীর দেখার বিষয়। প্রধানমন্ত্রী আর যাই হোক, তৃণমূল কংগ্রেসের মামা তো হয় না, বাবা হতে পারে।”

কেন্দ্রীয় বাহিনী বিজেপির হয়ে কাজ করছে , বিজেপিকে ভোট দেওয়ার জন্য বলছে। কমিশনে এমনটাই নালিশ করেছে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রতিনিধি দল। এই প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে সুকান্ত মজুমদার বলেন, উপনির্বাচনের আগে তৃণমূল কংগ্রেস একটা হাওয়া তৈরির চেষ্টা করছে। কেন্দ্রীয় বাহিনী নিরপেক্ষভাবে কাজ করে। জনগণের কাছ থেকে কোথাও কোনো অভিযোগ আসেনি। কেন্দ্রীয় বাহিনী নিরপেক্ষ না হয়ে পক্ষপাতিত্ব মূলক কাজ করছে এমন অভিযোগ কেউ করেনি।

অশোক স্তম্ভের জায়গায় হাওয়াই চটি লাগান, নির্বাচনী জনসভা থেকে কটাক্ষ করে পুলিশের উদ্দেশ্যে একথা বলেছেন সুকান্ত মজুমদার। এরফলে জাতীয় প্রতীকের অবমাননা করেছেন তিনি। এমনই অভিযোগ নিয়ে সুকান্ত মজুমদারের বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশনের দ্বারস্থ হয় তৃণমূল কংগ্রেস। এর পাল্টা জবাব দিয়ে বিজেপির রাজ্য সভাপতি তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বলেন, “চোরের মায়ের বড় গলা। তৃণমূল কংগ্রেসের মুখ্যমন্ত্রী থেকে শুরু করে নেতারা নির্বাচনী বিধি লাগু থাকার সময় তার উলঙ্ঘন করে নির্বাচনী প্রচার করেন। তারা প্রধানমন্ত্রীকে কোমরে দড়ি পরাবো থেকে শুরু করে, হোঁদল কুতকুত কিংভূত কিমাকার বলেছেন। হসপাতালের ২০০ মিটারের মধ্যে মুখ্যমন্ত্রীর সভা করা। এরকম একের পর এক নিদর্শন আছে আমি তো কিছুই সেরকম বলিনি।” বরং বিজেপির রাজ্য সভাপতি আবার জোরের সঙ্গে বলেন, আমি আজও বলছি যে, সমস্ত পুলিশ আধিকারিকরা যারা জনগণের টাকায় মাইনে নিয়ে তৃণমূলের দালালি করে, একটি বিশেষ রাজনৈতিক দলের দালালি করে, তাদের অশোক স্তম্ভ মাথায় রাখার অধিকার নেই। অশোক স্তম্ভ মাথায় রাখতে গেলে, কাঁধে রাখতে গেলে, নিরপেক্ষ হতে হয়। অশোক স্তম্ভটা অত সহজ জিনিস নয়। তাকে ধারণ করতে গেলে তার সঙ্গে সঙ্গে অনেক দায়িত্ব আসে। গ্রেট পাওয়ার ব্রিংস গ্রেট রেস্পন্সিবিলিটি। সেটা মানতে হয়।”

প্রসঙ্গত, তালডাংরায় উপনির্বাচনের প্রচারে গিয়ে তৃণমূলকে নিশানা করার সঙ্গে সঙ্গে পুলিশের প্রসঙ্গ টানেন সুকান্ত মজুমদার। তিনি বলেন, পুলিশের উর্দি পড়ে তৃণমূলের হয়ে দালালি করবেন না। পুলিশের যে টুপিটা পরেন, ঘাড়ে যে অশোক স্তম্ভটা পরেন, তৃণমূলের হয়ে দালালি করলে সেই অশোক স্তম্ভ টুপি থেকে খুলে রাখুন। তার বদলে একটা হাওয়াই চটি সিম্বল ওখানে লাগিয়ে নিন। তাঁর কথায়, পুলিশ সরিয়ে নিলে ১৫ মিনিটও তৃণমূল কংগ্রেস বলে কোনো রাজনৈতিক দল থাকবে না। পুলিশকে বলতে চাই, পরিষ্কার করে শুনে রাখুন, সময় আসছে। মনে রাখবেন, চিরকাল কারো সমান যায় না। কখনো নৌকার ওপরে গাড়ি ওঠে, কখনো গাড়ির উপরে নৌকা উঠে। তাই পরিষ্কার করে বলে দিচ্ছি, যদি দালালি করতে হয়, খাঁকি ছাড়ুন। তৃণমূলের ঝান্ডা ধরে রাস্তায় নেমে রাজনীতি করুন। কত দম আছে আমরা দেখে নেব। পুলিশের উর্দি পরে তৃণমূলের হয়ে দালালি করবেন না। একটা হাওয়াই চটি সিম্বল ওখানে লাগিয়ে নিন, জনগণ সম্মান করবে। কমসে কম বলবে যে তৃণমূল করছে। বুক ফুলিয়ে তৃণমূল করছে। চুপ করে, চুরি করে তৃণমূল কংগ্রেস করছে না। তৃণমূল কংগ্রেস পুলিশের জন্য টিকে আছে।

এরপরই শনিবার দিল্লি নির্বাচন কমিশনে যায় তৃণমূলের একটি প্রতিনিধি দল। ওই দলে ছিলেন সুস্মিতা দেব, ডেরেক ও ব্রায়েন, কীর্তি আজাদ, সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। কমিশনে সুকান্ত মজুমদারের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানান তারা। তৃণমূলের অভিযোগ পত্রে পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের বিরুদ্ধে সুকান্ত মজুমদারের মন্তব্য মিথ্যা, অবমাননাকর, অসম্মানজনক বলে দাবি করা হয়েছে। একইসঙ্গে জাতীয় প্রতীকের অবমাননা করেছেন তিনি বলেও জানানো হয়েছে। অন্যদিকে বিজেপি কেন্দ্রীয় বাহিনীকে ব্যবহার করছে, ও কেন্দ্রীয় বাহিনী বিজেপিকে ভোট দেওয়ার প্রচার চালাচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন তারা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *