আমাদের ভারত, ১৭ এপ্রিল: বৃহস্পতিবার সুকান্ত মজুমদারের সঙ্গে যাওয়া মুর্শিদাবাদের ঘরছাড়াদের মুখে এলাকার কথা শুনে তৎক্ষণাৎ সেখানে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। এ কথা প্রথমে জানান বিজেপির রাজ্য সভাপতি। রাজ্যপাল বৃহস্পতিবার রাতেই মুর্শিদাবাদ পৌঁছবেন। সেখানে জেলা সার্কিট হাউসে রাত্রি যাপন করে শুক্রবার যাবেন বিভিন্ন এলাকায়।
মুর্শিদাবাদের অশান্তিতে যারা ঘরছাড়া হয়েছেন বলে অভিযোগ, তাদের একাংশকে নিয়ে বৃহস্পতিবার রাজভবনে যান সুকান্ত মজুমদার সহ বিজেপি নেতৃত্ব। রাজ্যপালের কাছে পাঁচ দফা দাবি পেশ করেন তাঁরা। সামসেরগঞ্জ, ধুলিয়ানে গিয়ে পরিস্থিতি সরেজমিনের দেখার অনুরোধ করেন তারা। সুকান্ত মজুমদারের দাবি, সেই অনুরোধে সাড়া দিয়েই সফরে যাওয়া সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বোস।
রাজভবন থেকে বেরিয়ে সংবাদ মাধ্যমকে সুকান্ত মজুমদার বলেন, রাজ্যপালকে আমরা অনুরোধ করেছি নিজে গিয়ে পরিস্থিতি দেখে আসতে। রাজ্যপাল রাজি হয়েছেন। যারা আশ্রয় শিবিরে রয়েছেন, রাজ্যপাল তাদের কাছেও যাবেন। অশান্তি যেখানে হয়েছে সেই এলাকাতেও যাবেন। সুকান্ত মজুমদারের ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য, রাজ্যপালকে আমরা বলেছি আগে দেখে আসুন, তারপরে প্রয়োজনে কঠোর পদক্ষেপ করুন। সংবিধান অনুযায়ী কী পদক্ষেপ করা সম্ভব দেখে নিন। সেই অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নিন।
আজ সুকান্ত মজুমদারের সঙ্গে যে ঘর ছাড়ারা রাজ্যপালের কাছে গিয়েছিলেন তাদের সঙ্গে রাজ্যপাল আলাদা করে কথা বলেন। বিজেপি রাজ্যপালের কাছে যে পাঁচ দফা দাবি পেশ করেছে, সেগুলি হল- অশান্তি কবলিত এলাকায় স্থায়ী বিএসএফ ক্যাম্প তৈরি করা, যাদের বাড়ি ভাঙ্গা হয়েছে তাদের বাড়ি পুর্ননির্মাণ করে দেওয়া, পরিবার পিছু ৫ লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ, প্রত্যেক আক্রান্ত পরিবারের একজনকে স্থায়ী সরকারি চাকরি দেওয়া, দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা।
এদিকে রাজ্যপালের এই মুশিদাবাদ সফরের কথা শুনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরাসরি তাঁকে এখনই ওই সফরে না যাওয়ার আবেদন করেন। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আমি রাজ্যপালকে অনুরোধ করবো আরো কয়েকটা দিন অপেক্ষা করে যান। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রীর সেই অনুরোধে রাজ্যপাল সাড়া দেননি, যা থেকে আবারো একটা সংঘাতের সম্ভবনা তৈরি হলো নবান্ন ও রাজভবনের মধ্যে বলে মনে করা হচ্ছে।
মুখ্যমন্ত্রী তাঁর অনুরোধের ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে বলেছেন, আমি রিকোয়েস্ট করব বাইরে থেকে এখন কেউ যাবেন না। আমি তো যেতে পারতাম, যাইনি। আমি গেলে অন্যরাও যাবেন। আমাদের মহিলা কমিশনের টিমও যেতে চেয়েছিল, কিন্তু আমি বলেছি এখনই যেতে হবে না। ওখানে শান্তির বাতাবরণ ফিরে এসেছে এখন কাজ কনফিডেন্স বিল্ডিং- এর, সেই কাজ চলছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে মুর্শিদাবাদে যাবেন বলে জানিয়েছেন মমতা। তাঁর বক্তব্য, ঠিক সময় যাব। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রীর সেই অনুরোধে সাড়া না দিয়েই মুর্শিদাবাদ সফরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন রাজ্যপাল।