আমাদের ভারত, ১৭ এপ্রিল: ওয়াকফ সংশোধনী আইনের প্রতিবাদে যে হিংসা ও অশান্তির ছবি মুর্শিদাবাদে দেখা গেছে তার কোনটাই স্বতঃস্ফূর্ত জনরোষের কারণে নয়, বরং পরিকল্পিত। সুতি, ধুলিয়ান, সামসেরগঞ্জের বিভিন্ন অংশে উপদ্রব চালানোর ব্লু প্রিন্ট তিন মাস ধরে তৈরি হয়েছিল। তদন্ত করে নাকি গোয়েন্দারা এমনটাই জানতে পেরেছে। সবটাই নাকি শুধু একটা উপলক্ষ্য বা সুযোগের অপেক্ষায় ছিল। আর সেই সুযোগ এনে দিয়েছে ওয়াকফ আইন। আর এখানেই প্রশ্ন তুলেছেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। তিনি প্রশ্ন তোলেন, তাই যদি হয় তাহলে সব জানার পরেও কেন আগে থেকে কোনো পদক্ষেপ করল না পুলিশ মন্ত্রীর গোয়েন্দারা?
বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজ্যপালের সঙ্গে মুশিদাবাদের ঘরছাড়াদের সাক্ষাৎ করিয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন সুকান্ত মজুমদার। তখনই ধরে ধরে পরিস্থিতির ব্যাখ্যা করতে গিয়ে কাঠগড়ায় তোলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তার পুলিশ প্রশাসনকে। তাঁর প্রশ্ন পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ বলে তো একটা বিভাগ ছিল, তারা কী করছিল? সবই তো শুনলাম। ওরা জানত বলেছে, তিন মাস ধরে মুর্শিদাবাদে অশান্তির ছক কষা হয়েছে। তুরস্ক থেকে নাকি টাকা এসেছে। তা যদি এতদিন ধরে ছক করা হয়েই থাকে, তাহলে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর তত্ত্বাবধানে থাকা গোয়েন্দা বিভাগ কী করছিল? ওয়েব সিরিজ বানাচ্ছিল? নাকি বসে বসে ফ্যাক্ট চেক করছিল। ওদের এখন কাজই হচ্ছে ফ্যাক্ট চেক করা।
মুর্শিদাবাদের ঘরছাড়াদের পাশে দাঁড় করিয়ে বিজেপির রাজ্য সভাপতি মনে করিয়ে দেন, এরা মুখ্যমন্ত্রীর উপর ভরসা রেখেছিলেন। কিন্তু তারপর কি হলো? পুলিশের সামনেই ঘর লুট হলো, নির্যাতনের শিকার হলেন হিন্দুরা। এর দায় কার তাহলে?
দু’দিন আগে খবর হয়েছিল মুর্শিদাবাদের ওই তিন অংশে যে কায়দায় হিংসাত্মক ঘটনাগুলি ঘটেছে তাতে বাংলাদেশের সাম্প্রতিক বিশৃঙ্খলার মিল স্পষ্ট। এমনকি গত শুক্রবার হাঙ্গামার দিনও নির্দেশ দিতে সীমান্তের ওপার থেকে ৩০টির বেশি ফোন এসেছে জঙ্গিপুর মহকুমায়। কেবল তাই নয়, গোয়েন্দাদের দাবি, আন্দোলনকে ঢাল করে কিভাবে হিংসা ছড়াতে হবে তার নির্দেশও দেওয়া হয়। সেই রকয় ৭০টি ঘরোয়া মোবাইল ইতিমধ্যে চিহ্নিত করা হয়েছে। এমন ৫০ জনের হদিস তদন্তকারীরা পেয়েছেন, যারা এই হাঙ্গামার পরিকল্পনায় যুক্ত ছিল।
জানা গিয়েছে, রেললাইনের পাথর মজুদ করা, দোকানপাট লুট, বাছাই করে কিছু হিন্দু বসতবাড়িতে হামলা, সরকারি সম্পত্তি ধ্বংস, অগ্নি সংযোগ, সড়ক ও রেল যোগাযোগের মাধ্যম থমকে দেওয়া সবই পূর্ব-পরিকল্পিত। এবার এই পূর্ব পরিকল্পনা জানা সত্ত্বেও কেন পদক্ষেপ করা হলো না তা নিয়ে সরব হলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি।