সৌভিক বন্দ্যোপাধ্যায়, কলকাতা, ২৩ নভেম্বর: বাবা-মার উচ্চাকাঙ্ক্ষার মূল্য যে কী হারে আজকের যুগের শিশুদের উপর চেপে বসেছে ৭ দিনের মধ্যে পাওয়া গেল তার তৃতীয় প্রমাণ।
১৬ নভেম্বর বাবা-মার ইচ্ছের মূল্য দিতে গিয়ে বাংলা অনার্স পড়তে চেয়েও নার্সিং এ ভর্তি হয়ে পড়াশোনায় অসুবিধা হওয়ায় আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছিল কোচবিহারের বাসিন্দা মেডিকেল কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্রী সমাপ্তি রুইদাস। তারপর পরই ১৮ নভেম্বর অনেক অভিমানে পৃথিবী ছেড়ে সরে গিয়েছিল ফুটবলার হতে চাওয়া ষষ্ঠ শ্রেণির রোহন। এবার ফের ইচ্ছেপূরণ না হওয়ায় ২২ নভেম্বর আত্মহত্যার পথ বেছে নিল দ্বাদশ শ্রেণির এক ছাত্রী। শুক্রবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে দক্ষিণ কলকাতার রানীকুঠি এলাকায় রিজেন্ট পার্ক থানার কে এম নস্কর রোডে।
জানা গিয়েছে, জিডি বিড়লা স্কুলের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রী বছর সতেরোর সুমেধা বসু। পুকুরে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করে সুমেধা। পরিবার সূত্রের দাবি, সুমেধার ইচ্ছে ছিল, মডেলিং করার, মুম্বই যাওয়ার। কিন্তু মানছিল না ছিল তাঁর বাবা মা। আর সেই অভিমানেই রানীদিঘিতে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করে সে।
ছবি: এই পুকুরেই ঝাঁপ দিয়েছিল।
শুক্রবার রাতে পুলিশ সুমেধার সুইসাইড নোট উদ্ধার করে। তার থেকেই প্রাথমিকভাবে পুলিশের অনুমান, সুমেধার ইচ্ছেপূরণ না হওয়ার হতাশা থেকেই আত্মহত্যা করেছে সে। তবে মৃত্যুর কারণ জানতে পুলিশ ইতিমধ্যে ছাত্রীর মৃতদেহ ময়না তদন্তের জন্য পাঠিয়েছে। একইসঙ্গে তার মোবাইল ফোন এবং সুইসাইড-নোটটিও খতিয়ে দেখার কাজ চলছে।
এদিকে মৃত সুমেধার পরিবার সূত্রে খবর, গতকাল সুমেধা রানীদিঘি পুকুরের পাশ দিয়ে টিউশন পড়তে যাচ্ছিল, সেই সময়ই ঘটে এই ঘটনা। এলাকার বাসিন্দারা জানান, আচমকাই রানীদিঘিতে ঝুপ করে একটা আওয়াজ শোনা যায়। পরে ডুবুরি নামিয়ে পুকুর থেকে উদ্ধার করা হয় ছাত্রীটির দেহ। তদন্তকারীরা যে সুইসাইড নোট উদ্ধার করেছে, তাতে লেখা রয়েছে মৃত্যুর জন্য কেউই দায়ী নয়।
ছবি: এখানেই ঝাঁপ দিয়েছিল।
এদিকে তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পেরেছে, মডেলিং করার ইচ্ছা ছিল স্কুল ছাত্রীটির। মুম্বইতে যাওয়ার স্বপ্ন ছিল তাঁর। তবে এই নিয়ে বাবা মা’র সঙ্গে মতবিরোধ লেগেই থাকত, যার জেরে এই আত্মহত্যা। ইতিমধ্যেই পুকুরের পাশ থেকে উদ্ধার হয়েছে সুমেধার মোবাইল ফোনও।