সাথী দাস, পুরুলিয়া, ১৯ মে: ভারত সেবাশ্রম, ইসকন, রামকৃষ্ণ মিশনকে উপেক্ষার অভিযোগ করে রাজ্যের বিরুদ্ধে তোপ দাগলেন নরেন্দ্র মোদী। একই সঙ্গে একটি বিশেষ সম্প্রদায়কে নিয়ে মাতামাতি। ওবিসি’কে এ ক্যাটাগরি করে বেশি সুযোগ সুবিধা করে দিচ্ছেন রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান। মঞ্চে তখন বসেছিলেন পুরুলিয়া ভারত সেবাশ্রম সংঘের যুগ্ম সম্পাদক নিত্য শুদ্ধানন্দজি মহারাজ। এইভাবেই একের পর ইস্যু নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তাঁর মন্ত্রীদের একাংশের বিরুদ্ধে দুর্নীতি নিয়ে সরব হলেন প্রধানমন্ত্রী।
রবিবার, দুপুরে দলীয় প্রার্থী জ্যোতির্ময় সিং মাহাতোর সমর্থনে আয়োজিত জনসভায় আগাগোড়া এভাবেই পশ্চিমবঙ্গের দুর্নীতি নিয়ে কঠোর সমালোচনা করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তিনি বলেন, “শিক্ষা ক্ষেত্রে শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতি। মন্ত্রীদের বাড়ি থেকে নোটের পাহাড় দেখা গিয়েছে। আমি জীবনে দেখিনি। মানুষ তৃণমূল থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন।” খানিকটা সুর চড়িয়ে বাংলায় প্রধানমন্ত্রী বলেন, “৪ জুনের পর ভ্রষ্টাচারীদের উপর অ্যাকশন আরও তীব্র হবে।”
এদিন খানিকটা দৃঢ়তার সঙ্গে দুর্নীতিবাজ অভিযুক্তদের উদ্দেশ্যে সতর্ক করে বলেন, “পরবর্তী জীবন জেলেই কাটবে, এটা মোদীর গ্যারেন্টি।” তিনি যোগ্য চাকরি প্রার্থী এবং পরিস্থিতির শিকার হওয়া আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্তদের উদ্দেশ্যে আক্ষেপের সুরে বলেন, “ধীরে ধীরে ক্ষতিগ্রস্তদের টাকা ফিরিয়ে দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হবে।”
এদিন সভা মঞ্চেই পুরুলিয়া পুরসভার অনৈতিক কাজ কর্ম নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে অভিযোগ করেন স্থানীয় বিধায়ক সুদীপ মুখার্জি। তিনি অভিযোগ করে প্রধানমন্ত্রীকে জানান যে, কেন্দ্রের জল জীবন মিশনে এখানে আড়াই হাজার টাকা করে প্রতি বাড়িতে সংযোগ পিছু নিচ্ছে পুরসভা। এই অভিযোগের পরই পরবর্তী সভায় প্রধানমন্ত্রী কটাক্ষ করে তীব্র প্রতিবাদ করেন। তিনি বলেন, “সারা দেশে নলবাহিত পানীয় জলের সংযোগে দুর্নীতি করছে তৃণমূলের কিছু লোক। এটা বরদাস্ত করা হবে না।”
এদিন প্রধানমন্ত্রী নির্ধারিত সময়ের একটু দেরিতে পৌঁছোন পুরুলিয়া শহর থেকে ৬ কিলোমিটার দূরে গেঙ্গাড়া গ্রামের সভাস্থলে। হেলিকপ্টারে পৌঁছে তিনি হুড খোলা গাড়িতে হেলিপ্যাডের কাছে থাকা হাজার হাজার মানুষের আবেগের কাছে পৌঁছানোর চেষ্টা করেন। তার পর সভামঞ্চে পৌঁছান। বিজেপির জেলা সভাপতি বিবেক রাঙা, প্রার্থী জ্যোতির্ময় সিং মাহাতো তাঁকে স্বাগত জানান। তাঁর হাতে পুরুলিয়ার সংস্কৃতি কৃষ্টি বহন করা ছৌ মুখোশ তুলে দেন। সুরজিৎ মিত্র নামের এক কর্মকর্তার আঁকা প্রধানমন্ত্রীর ছবি তুলে দেওয়া হয়।