সিরাজউদ্দৌলাকে বাংলার মানুষ সম্মান করে কিন্তু মীরজাফরকে নয়, দলত্যাগীদের তোপ মমতার

রাজেন রায়, কলকাতা, ৪ ফেব্রুয়ারি: প্রত্যেক দিনই রাজ্যে একের পর এক তৃণমূল নেতা দলবদলের দিকে পা বাড়াচ্ছেন। বৃহস্পতিবার কসবার গীতাঞ্জলি স্টেডিয়ামে তফসিলিদের অনুষ্ঠানে এদিন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই রাজ্যের তৃণমূল ত্যাগীদের উদ্দেশ্যে কড়া প্রতিক্রিয়া জানান। তিনি বলেন, ‘বাংলায় থেকে যাঁরা বাংলাকে খাটো করেন, তাঁদের কেউ ক্ষমা করবে না।’ সিরাজদৌল্লাকে মানুষ সম্মান করে। কিন্তু মীরজাফরকে কেউ ক্ষমা করেনি।’

বিজেপি শাসিত বিভিন্ন রাজ্যের পরিসংখ্যান তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘ত্রিপুরায় ১০ হাজার লোককে পার্মানেন্ট করবে বলেছিল। সবার চাকরি উল্টে খেয়ে নিয়েছে। অসমে গিয়ে দেখে আসুন কত লোককে এনআরসির নামে খুন করা হয়েছে। বাংলায় কত ভালো আছেন। শান্তিতে আছেন। অনেক আসন ওরা আমাদের কাছ থেকে নিয়ে গেছে। আজ পর্যন্ত কিছু দিয়েছে ওরা। পুরো জঙ্গল মহল নর্থ বেঙ্গল নিয়ে গেছে আজ পর্যন্ত কিছু দিয়েছে।’

বৃহস্পতিবার কসবায় গীতাঞ্জলি স্টেডিয়ামে তপসিলি জাতি উপজাতির ভাই বোনদের নিয়ে সভা করেন মুখ্যমন্ত্রী। সেখানে তিনি কেন্দ্রের সরকারের বিরুদ্ধে সুর ছড়িয়ে বলেন, ‘এ রাজ্যে কোনও ভাবেই এনআরসি ও এনপিআর করতে দেব না।’ একই সঙ্গে উদ্বাস্তু কলোনীকে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে বলেও মুখ্যমন্ত্রী জানান তার ভাষণে।

সামনেই একুশের বিধানসভা নির্বাচন। তার আগেই এনআরসি ও এনপিআর নিয়ে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে মানুষের ক্ষোভকে কাজে লাগাতে বদ্ধ পরিকর তৃণমূল। তাই এদিন মুখ্যমন্ত্রী শুরু থেকেই কেন্দ্রকে নিশানা করলেন এনসিআর ও এনপিআর ইস্যুতে। এই ইস্যুতে এদিন মমতা বলেন, ‘কখনো বলছে এনআরসি হবে। কখনো বলছে হবে না। আগে আইন টা প্রত্যাহার কর। আইন তো এখনও প্রত্যাহার করা হয়নি। সেটা তো এখনও লেখা আছে। তার মানে আইনটা এখনও আছে। যে কোনও সময়ে ওই আইনে তুমি কাজ করতে পারো। আমরা বলেছি এনআরসি করতে দেব না। এনপিআর করতে দেব না। আমরা সবাই নাগরিক। মনে রাখবেন আমরা আমরা সবাই নাগরিক। প্রত্যেকের নাগরিকত্বের অধিকার আছে।’ পশ্চিমবঙ্গের উদ্বাস্তু কলোনি গুলিকেও সম্প্রতি তালিকাভুক্ত করার কাজ শুরু করেছে রাজ্য সরকার। সেকথা এদিনের সভা থেকে মুক্ত কন্ঠ ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘যত উদ্বাস্তু কলোনি আছে আমরা সব কলোনিকে তালিকা ভুক্ত করে দিয়েছি। কেউ আজকে ভাববেন না আপনার মাথার ওপর কোনও ঠিকানা নেই। প্রত্যেকের মাথার ওপরে সরকারি বা বেসরকারি ভাবে ঠিকানা করে দিয়েছি। চা বাগানের শ্রমিক থেকে বাংলার আবাস যোজনায় প্রায় বিশ লক্ষ বাড়ি আমরা করে দিয়েছি। এমনকি তপশিলি আদিবাসী ভাই বোনেরাও পেয়েছে। আগে কাস্ট সার্টিফিকেট পেতে জুতোর সোল ক্ষয়ে যেত, এখন আমি বলে দিয়েছি এ সব হবে না। বাহান্ন সালের কাগজ চাইবে তা হবে না। বাই বার্থ একজন যদি তপসিলি থাকে সে কাস্ট সার্টিফিকেট পাবে। তাকে ঘোরানো যাবে না। দুয়ারে সরকারের মাধ্যমে ১৮ লক্ষ কাস্ট সার্টিফিকেট দেওয়া হয়েছে।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *