মে মাসে বিজেপি সরকার গড়ার হুঙ্কার শুভেন্দু বাবুলের

আমাদের ভারত, মেদিনীপুর, ২ জানুয়ারি: একুশের নির্বাচনের আর মাত্র কয়েকমাস বাকি। এরই মধ্যে প্রায় প্রত্যেক দিন তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগদানের হিড়িক পূর্ব মেদিনীপুর জেলায়। শনিবার পূর্ব মেদিনীপুর জেলার সুতাহাটা ব্লকের দ্বারিবেড়িয়াতে বিজেপির এক যোগদান মেলা অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে আগামী মে মাসে বিজেপিকে নিয়ে সরকার গড়ার হুংকার দিলেন বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী ও বাবুল সুপ্রিয়। 

এদিনের মঞ্চ থেকে শুভেন্দু বলেন, “২০০১ সালে তৃণমূলের খুঁটি পোতার লোক পাওয়া যেত না। আজ আমি আর বাবুলজি আসছি বলে এত পতাকা টাঙিয়েছে তৃণমূল একশো দিনের কাজের মেরে নেওয়া টাকায়। পিপিলিকার পাখা গজায় মরিবার তরে। ১৫ মে’র পরে তৃণমূল কংগ্রেস থাকবে না।” এদিন  তিনি তাঁর বিজেপিতে যোগদানের কারণ হিসেবে বলেন, “আমি গত কয়েকটি সভায় বলেছি তৃণমূল পার্টিটা একটি কোম্পানিতে পরিণত হয়ে গিয়েছে এটা আর  রাজনৈতিক দল নেই। আমাদেরকে কর্মচারি করে রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। তার কর্মচারি হয়ে থাকতে এই মেদিনীপুরের মানুষরা জানে না।” শুভেন্দু প্রকাশ্য মঞ্চ থেকে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম না করে কটাক্ষ করে বলেন, “তোলাবাজ ভাইপো কয়েকদিন আগে বলেছিল  এক বাপের ব্যাটা হলে আঞ্চলিক দল করলোনা কেন। বিজেপিতে কেন? তার কারণ হচ্ছে আমি আঞ্চলিক দল করলে ছোটখাটো একটা পার্টি করতে পারতাম। কিন্তু সেই পার্টিটাতে আমার পর আমার ভাইপো নেতা হতো। সেই জন্য আঞ্চলিক দল বানাইনি। পৃথিবীর সর্ব বৃহৎ রাজনৈতিক দল ভারতীয় জনতা পার্টিতে গেছি।” এদিন শুভেন্দু আরও বলেন, “ভোট এলেই বলে শংকরপুরে বন্দর হবে। হলদিয়া উন্নয়ন পর্ষদের আমি চেয়ারম্যান ছিলাম। এর যা শিল্পনীতি কোথাও একটাও শিল্প হবে না। চপ ভাজা শিল্পও হবে না। এই অত্যাচার চলবে না একটু অপেক্ষা করুন আদর্শ নির্বাচন বিধি চালু হতে দিন।” অভিষেককে নাম না করে শুভেন্দু বলেন, “তোলাবাজ ভাইপো বলেছিলাম তাই ভীষণ কাজে লেগে গেছে।  এই তো আস্তে আস্তে করে এগোচ্ছে। লালা, এনামূল, কে বিনয় মিশ্র? যার চারটে বাড়িতে ইতিমধ্যে সিবিআই ঢুকে পড়েছে। তিনি রাজ্য তৃণমূল যুব কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক। তার সভাপতির নাম হচ্ছে তোলাবাজ ভাইপো। তারপর মাননীয় তোলাবাজ ভাইপো আপনার তো রাজনীতি ছেড়ে দেওয়ার কথা ছিল। অর্জুন সিং ও সৌমিত্র খাঁন যদি জিতে যায় উনি বলেছিলেন রাজনীতি ছেড়ে দেব। আমি আজ শুরু করে দিয়ে গেলাম। আপনারা অনেক এগিয়ে দিয়ে গেছেন। আমি বলেছি ৪৯ করে দিয়ে গেছেন ৫১ করতে হবে।”

অন্যদিকে খোলা মঞ্চ থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে আক্রমণ করলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়। তিনি বলেন, “তুমিতো পিসির ভাইপো।  তুমি তো নিজে কিছু করোনি। তোমার তো কোনো অবদানই নেই রাজনীতিতে। যেটুকুনি আছে সেটা অবদান নয় অনুদান সেটা সরকার থেকে নিয়ে তুমি নিজের ঘরে রেখে দিয়েছো।” তিনি আরও বলেন, “গরু পাচার, লোহা পাচার, কয়লা পাচার সব পাচারের টাকা আমাদের বোলপুরের শান্তিনিকেতন নয়, আরেকটা শান্তিনিকেতন আছে সেখানে পৌঁছায়। পাঁচ বছর আগে আমি আসানসোলে বলেছিলাম যত কয়লা মাফিয়া আছে তারা সবাই গ্রেফতার হবে আপনারা একটু ভরসা করুন। এখন বোঝা যাচ্ছে যাহা এনামুল তাহাই তৃণমূল।” তিনি বলেন, “আমি ভাইপোর নাম করে বলছি উনি পশ্চিমবঙ্গের সমাজবিরোধীদের লালন পালন করেন। নীলসাদা রঙ করা আলিপুর জেল তৃণমূলে ভরে যাবে।”

এদিনের সভায় পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পরিষদের সদস্য সোমনাথ ভুঁইঞা, ইটামগরা- ২ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান রামকৃষ্ণ দাস সহ বেশ কয়েকজন জনপ্রতিনিধি ও কয়েকশো কর্মী বিজেপিতে যোগদান করেন।  সভায় শুভেন্দু অধিকারী ও মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয় ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন তমলুক সাংগঠনিক জেলা বিজেপির সভাপতি নবারুণ নায়েক সহ অন্যান্য নেতৃত্বরা। 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *