রাজেন রায়, কলকাতা, ১১ জানুয়ারি: তিন বছর আগে ধীরে ধীরে রাজনীতি থেকে সরে গিয়েছিলেন শোভন চট্টোপাধ্যায়। সম্প্রতি শোভন চট্টোপাধ্যায়কে কলকাতা সাংগঠনিক জোনের পর্যবেক্ষক করেছে বিজেপি। বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়কে দেওয়া হয়েছে সহ পর্যবেক্ষকের দায়িত্ব। এই নিয়েই সোমবার বর্ধমানের এক সভা থেকে রসিকতা করে কুনাল ঘোষ বলেন, ‘কিসের পর্যবেক্ষক? গত তিন বছর ধরে শোভন চট্টোপাধ্যায় পর্যবেক্ষণ করেছেন বৈশাখীকে। আর বৈশাখীদেবী পর্যবেক্ষণ করেছেন শোভনদাকে।’
যে জোনের দায়িত্ব শোভন চট্টোপাধ্যায়’কে দেওয়া হয়েছে, সেই জোনের মধ্যে রয়েছে কলকাতা এবং কলকাতা লাগোয়া দক্ষিণ ২৪ পরগনার বেশ কিছু এলাকা। তার পাশাপাশি উত্তর ২৪ পরগনার দমদমের ৯ টি আসন রয়েছে। সব মিলিয়ে জোনের আওতায় রয়েছে ৫১ টি আসন। গত লোকসভা নির্বাচনের ফল বলছে এই আসনগুলির অধিকাংশে এগিয়ে রয়েছে বিজেপি। সেখানে ভালো ফল করার তাগিদে শোভনকে গুরুদায়িত্ব দিয়েছে গেরুয়া শিবির। কারণ তৃণমূলে থাকার সময় কলকাতা এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার দায়িত্বে ছিলেন শোভন। কিন্তু এতদিন নিষ্ক্রিয় থেকে মান-অভিমানের পালা কাটিয়ে বিধানসভা ভোটের মাস কয়েক আগে সক্রিয় হয়েছেন শোভন চট্টোপাধ্যায় এবং তাঁর বান্ধবী বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়।
তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ সোমবার বর্ধমানের খণ্ডঘোষে তৃণমূলের জনসভায় হাজির ছিলেন। সেখানে কুণাল বলেন, ”কিসের পর্যবেক্ষক? গত তিন বছর ধরে শোভন চট্টোপাধ্যায় পর্যবেক্ষণ করেছেন বৈশাখীকে। আর বৈশাখীদেবী পর্যবেক্ষণ করেছেন শোভনদাকে। বিজেপি কর্মীদের কি অবস্থা, যত আবর্জনা তাঁদের দলে আসছেন। অথচ একটা সময় তাঁদের বিরুদ্ধে বিজেপি কর্মীরা লড়াই করেছিলেন। আজ শোভন চট্টোপাধ্যায়ের জন্য তাঁর বান্ধবীকে তেল মারতে হচ্ছে। কি অবস্থা হয়েছে! বলছে ক্ষমতায় আসবে!
কেউ বলছে মুকুলদা চলে এসো। তখন সমীক্ষায় দেখা যাচ্ছে বিজেপি ৪৫ আসনে জিততে পারে। তখন বলছে শোভনকে ধরো। তখন কেউ বলছেন শোভন কথা বলবেন না। তখন আবার তারা বলছে ঠিক আছে, বৈশাখীর কাছে যাও। তিনি আবার সেজেগুজে চলে আসেন। শিক্ষিতা, সুন্দরী মহিলা। কথা বলতে ভালো লাগে। তখন আবার দেখা যাচ্ছে আসন সংখ্যা কমে ৪২ হয়ে যাচ্ছে। এই তো বিজেপির অবস্থা। তখন তৃণমূলের নেতা পিছু ইডি, সিবিআইকে লাগিয়ে দেওয়া হচ্ছে।” এভাবে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার তদন্ত নিয়ে মুকুল রায়কে ব্যাপক আক্রমণ করেছেন কুণাল।
তারপর শোভন চট্টোপাধ্যায় কে নিশানা করে কুণাল বলেন, ”আমার বিরুদ্ধে তুমি মামলা করিয়েছিলে। কিন্তু আমি ভয় পাই না। মাথা উঁচু করে চলি। বাঘছাল পরা বেড়াল নই যে বিজেপিতে চলে যাব।”