রাজেন রায়, কলকাতা, ১১ জানুয়ারি: মঙ্গলবার গোটা রাজ্যজুড়ে পালিত হবে বিবেকানন্দের জন্মদিন। বিধানসভা ভোটের আগে বিবেকানন্দের জন্মদিনে সাধারণ মানুষের মন জয় করতে বিজেপি যে ঝাঁপিয়ে পড়বে, তা অনুমান করছে শাসক শিবির। তাই সোমবার তৃণমূল ভবনে ব্রাত্য বসু বলেন, এক মিছিলে বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভেঙ্গেছিল। বিবেকানন্দর জন্মদিনে মিছিল করতে গিয়ে এবার তাঁর মূর্তি ভাঙ্গতে পারে। পুলিশকে সতর্ক নজর রাখতে অনুরোধ করব।’
মঙ্গলবার বিবেকান্দর জন্মদিবসে রাজ্যজুড়ে কর্মসূচি রয়েছে বিজেপির, আবার কর্মসূচি রয়েছে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূলেরও। বাঙালি আবেগকে হাতিয়ার করে চলতি বছরে এই ধরনের অনুষ্ঠানে বিশেষ জোর দিতে চাইছে দুই রাজনৈতিক দলই। উত্তর কলকাতায় শ্যামবাজার থেকে সিমলা স্ট্রিট পর্যন্ত বড় মিছিল করবেন সদ্য বিজেপিতে যোগ দেওয়া শুভেন্দু অধিকারী। সেই প্রসঙ্গ তুলে ব্রাত্য বসু বলেন, “ওঁরা হয়তো এখন সাময়িকভাবে ভাবছে বিবেকানন্দকে নিয়ে যদি কিছু করা যায়। কিন্তু মিছিল যখন হবে আমাদের সচেতন থাকতে হবে যাতে আবার মূর্তি না ভেঙ্গে দেয়। রামকৃষ্ণ ও বিবেকানন্দ যে আদর্শে মানুষের সেবার কথা বলেছিলেন, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাকেই তুলে ধরেছেন। আর শিকাগো বক্তৃতার স্মরণে স্মারক বক্তৃতার অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রীর কর্মসূচি বাতিল করা হল। কে কী উদ্দেশ্যে সেই কলকাঠি নেড়েছিল? কেন তা বাতিল করা হয়েছিল? মুখ্যমন্ত্রী রামকৃষ্ণ, বিবেকানন্দের আদর্শকে সামনে রেখে একমাত্র মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই কাজ করছিলেন বলে?”
১০ জানুয়ারি থেকে ১২ জানুয়ারি দেশব্যাপী বিবেক চেতনা উৎসব তৃণমূলের। স্বামী বিবেকানন্দের পৈত্রিক ভিটে রাজ্য সরকার অধিগ্রহণ করে তা তুলে দিয়েছে রামকৃষ্ণ মিশনের হাতে। বাগবাজারের সারদা মায়ের বাড়িকে হেরিটেজ ঘোষণা করে রাজ্য সরকার। ভগিনী নিবেদিতার বাড়িও রাজ্য সরকার অধিগ্রহণ করেছে। তাকে হেরিটেজ তকমা দেওয়া হয়েছে। রাজ্য সরকার স্কাইওয়াক তৈরি করেছে। যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনের নাম রাজ্য সরকার বদলেছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নাম রেখেছেন বিবেকানন্দ যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গন।
ব্রাত্য বসুর অভিযোগ, বিজেপি রামকৃষ্ণ, নজরুল ইসলাম, চৈতন্যদেব, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর নিয়ে ভুল তথ্য দিচ্ছে। বিবেকানন্দ নিয়েও ভুল তথ্য দিয়েছে বিজেপি। দৈনন্দিন রাজনীতিতে বিবেকানন্দকে টেনে নামিয়ে আনছে বিজেপি। কিন্তু আমরা তাকে মাথার উপর তুলে রেখেছি। প্রসঙ্গত, আগামী কাল বিবেকানন্দের জন্ম জয়ন্তী উপলক্ষ্যে বিজেপি “বিবেকের ডাকে” কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। শুভেন্দু অধিকারীর নেতৃত্বে বিজেপি কলকাতায় একটি পদযাত্রা করবে। আবার অন্যদিকে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে একটি পদযাত্রা করবে তৃণমূল যুব কংগ্রেস। একুশের ভোটের আগে বাংলায় মনীষীরা যেন রাজনৈতিক লড়াইয়ে হাতিয়ার হতে চলেছে।