আমাদের ভারত, ১৮ সেপ্টেম্বর: ভারত নিজের শক্তি দেখিয়েছে বিশ্বকে। জি-২০ সম্মেলন থেকে শুরু করে চন্দ্রযান -৩ এর সাফল্য তুলে ধরে এমন-ই মন্তব্য করলেন প্রধানমন্ত্রীর নরেন্দ্র মোদী। জানালেন ২০৪৭ সালের মধ্যেই ভারতকে উন্নত দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে চাইছেন তিনি। বিশেষ অধিবেশন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এই অধিবেশন আয়তনে ছোট হলেও খুব গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এই অধিবেশনে একাধিক ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে। তাই বিরোধীদের কটাক্ষের সুরে তাঁর পরমর্শ, অনেক সময় পাবেন কান্নাকাটি করার, সংসদের কাজে মন দিন।
সোমবার থেকে সংসদের বিশেষ অধিবেশন শুরু হয়েছে। তার আগে লোকসভার বাইরে দাঁড়িয়ে পাঁচ মিনিটের জন্য ভাষণ দেন প্রধানমন্ত্রী। একাধিক বিষয়ে তাঁর বক্তব্যে উঠে আসে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই বিশেষ অধিবেশন হয়তো দৈর্ঘ্যে অনেক ছোট কিন্তু এই বিশেষ অধিবেশনের গুরুত্ব অপরিসীম। কারণ এই অধিবেশনে বেশ কয়েকটি ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
আগেই এই অধিবেশনে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ বিল নিয়ে আলোচনা হতে পারে বলে জানা গিয়েছিল। তার মধ্যে নির্বাচন কমিশনার নিয়োগের মত বিল রয়েছে বলে শোনা যাচ্ছে।
অধিবেশনে শুরুতেও দেশের সাফল্যের কথাই উঠে এসেছে প্রধানমন্ত্রীর মুখে। জি-২০ সম্মেলনের মাধ্যমে বিশ্বের দরবারে নিজের শক্তি তুলে ধরেছে ভারত। আফ্রিকা ইউনিয়নকে এই গোষ্ঠীর সদস্যপদ দেওয়া হয়েছে। গ্লোবাল সাউথের কন্ঠস্বর হিসেবেও পরিচিতি পেয়েছে ভারত। চন্দ্রযান-৩ এর সাফল্যের বিষয়টি তুলে ধরতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, চাঁদের শিবশক্তি পয়েন্ট ভারতকে নতুন উদ্দীপনা জুগিয়েছে।
তবে ভাষণ দিতে গিয়ে বিরোধীদের এক হাত নেন প্রধানমন্ত্রী। সংসদের বাদল অধিবেশনের একটা বিরাট সময় ধরে একাধিক ইস্যুতে সংসদের দুই কক্ষেই প্রতিবাদ করেছেন বিরোধীরা। এই আচরণকেই বিঁধে মোদী বলেছেন, এই অধিবেশন খুবই ছোট তাই নিজেদের পুরো সময় অধিবেশনের কাজে দেওয়া উচিত সাংসদদের। কান্নাকাটির সময় তারা অনেক পাবেন। তাঁর কথায়, জীবনে খুব কম সময় আসে যখন মানুষের জীবনে উৎসাহ উদ্দীপনা দেখা যায়। সংসদের বিশেষ অধিবেশনকে ঐতিহাসিক বলে অভিহিত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাঁর জীবনের উৎসাহ বাড়িয়ে তুলেছে এই বিশেষ অধিবেশন।
সংসদের অধিবেশন শুরু হওয়ার পরে অবশ্য বিরোধী দলগুলোর প্রশংসা শোনা যায় প্রধানমন্ত্রীর মুখে।পুরনো সংসদ সদস্যদের স্মৃতি রোমন্থন করেন প্রধানমন্ত্রী। সেখানে জহরলাল নেহেরু এবং তার মন্ত্রিসভাকে প্রশংসায় ভরিয়ে দেন মোদী। নেহেরু ছাড়াও লাল বাহাদুর শাস্ত্রী, ইন্দিরা গান্ধী, মনমোহন সিং এর অবদানের কথা নিজের বক্তব্যে তুলে ধরেন। তাঁর কথায়, এই পুরনো সংসদ ভবন বহু কিছুর সাক্ষী। যেমন তিন প্রধানমন্ত্রীকে তাদের কার্যকালে হারিয়েছিল এই সংসদ ভবন। এদিন পুরনো সংসদ ভবনের প্রায় ৮ দশকে যাত্রার কথা তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন নেহেরুজির মধ্য রাতের ভাষণ চিরকাল আমাদের অনুপ্রাণিত করবে। অটল বিহারী বাজপেয়ী বলেছিলেন ,”সরকার আসবে এবং যাবে কিন্তু এ দেশ থাকবে।” তিনি বলেন সংসদ ভারতীয় গণতন্ত্রের গর্ব। অগুন্তি সংসদ সদস্যের অবদানে গড়ে উঠেছে এই দেশ, যা ভারতীয় গণতন্ত্রের গর্ব।