জাতীয় মহিলা কমিশনকে তোপ! নারী নির্যাতন এবং পাচারের অভিযোগ ওড়ালেন সৌগত

রাজন রায়, কলকাতা, ১২ ডিসেম্বর: রীতিমতো ঘুঁটি সাজিয়ে সাজিয়ে তৃণমূলকে আক্রমণের ছক সাজাচ্ছে বিজেপি সরকার, এই অভিযোগ তুলল তৃণমূল। প্রথমে বিজেপির উত্তরকন্যা অভিযানে শটগানের গুলিতে বিজেপি কর্মীর মৃত্যু, তারপর বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডার কনভয় হামলা এবং শুক্রবার রাতে জাতীয় মহিলা কমিশনের চেয়ারম্যান রেখা শর্মার রাজ্যে নারী নির্যাতন ও পাচার বৃদ্ধির অভিযোগ রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র বলে মনে করছে তৃণমূল। রাজনীতির স্বার্থে জাতীয় মহিলা কমিশনের পার্সন কলকাতায় এসেছেন বলে তোপ দাগলেন বর্ষীয়ান তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায়।

শনিবার তৃণমূল ভবনে এক সাংবাদিক বৈঠকে সৌগত রায় জাতীয় মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন রেখা শর্মার অভিযোগকে কার্যত উড়িয়ে বলেন, ‘রাজনীতি করার জন্য জাতীয় মহিলা কমিশনের চেয়ার পার্সন রেখা শর্মা কলকাতায় এসেছেন। তাঁর সব আভিযোগ ভিত্তিহীন।’

শুক্রবারই বাইপাসের ধারে এক বেসরকারি হোটেলে সাংবাদিক বৈঠকে রেখা শর্মা জনিয়েছিলেন, এ রাজ্যে নারী নির্যাতন ও পাচার তুলনামূলক ভাবে বাড়ছে। তাঁর কাছে এ পর্যন্ত ২৬০ টি অভিযোগ জমা পড়েছে। একই সঙ্গে প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তা নিয়েও তিনি প্রশ্ন তুলেছিলেন। পাশাপাশি তিনি আরও জানিয়েছেন, রাজ্যের তরফে তিনি কোনও প্রকার সহযোগিতাও পাচ্ছেন না। এদিন তারই পালটা দিলেন সৌগত রায়। তিনি বলেন, এ রাজ্যে অন্যান্য ক্রাইম রেট অনেক কম। যেখানে বাংলার থেকে অন্যান্য রাজ্যে তা অনেক বেশি।

সৌগত এদিন ২০১৪ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন রাজ্যের ক্রাইম রেটের পরিসংখ্যান তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ‘দিল্লিতে জেনারেল ক্রাইম রেট ১৪৫৭, আহমেদাবাদে ৮২৬, সে তুলনায় কলকাতায় মাত্র ১৫২। অন্যদিকে ২০১৪ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত রাজ্যে ‘ইনক্রিজিং ক্রাইম রেটও’ অনেক কমে গিয়েছে। তুলনামূলক ভাবে কেন্দ্রে মোদী সরকার আসার পর থেকে বিভিন্ন রাজ্যে ক্রাইম রেট বেড়ে গিয়েছে। উদাহরণ স্বরূপ উত্তরপ্রদেশে বেড়েছে ৫৬ শতাংশ, মহারাষ্ট্রে ৩৯ শতাংশ, রাজস্থানে ৩৩ শতাংশ। সেদিক থেকে দেখতে গেলে পশ্চিমবাংলায় ২১ শতাংশ ক্রাইম রেট কমে গিয়েছে।’

এদিন সকলেই জাতীয় মহিলা কমিশনের চেয়ার পার্সন রেখা শর্মা রাজভবনে গিয়েছিলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকরের সঙ্গে বৈঠক করতে। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘কেন্দ্রীয় মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন রেখা শর্মা একজন বিজেপির মানুষ। তিনি বাংলার ক্রাইম রেট প্রসঙ্গে কিছুই জানেন না। রাজ্যপালের কাছ থেকে বুদ্ধি নিচ্ছেন। তিনি আজকে জগদীপ ধনকরের কাছে দু’ঘণ্টা ছিলেন। ওটাই তো এখন বিজেপির হেডকোয়ার্টার। তারপরে এ সব বলেছেন। সুতরাং তিনি কলকাতায় রাজনীতি করতে এসেছেন।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *