আমাদের ভারত, কলকাতা, ৫ ফেব্রুয়ারি: এবার নরেন্দ্র মোদীর স্বপ্ন সফল করতে প্রচারে নামছে আরএসএস। এ বছরই সংঘের শতবর্ষ পূরণ হচ্ছে। সেই উপলক্ষে দেশ জুড়ে প্রচার কর্মসূচির পাশাপাশি ব্যাপকভাবে জনসংযোগে নামছে সংঘ। সেই প্রচার কর্মসূচির অন্যতম লক্ষ্যই হবে আত্মনির্ভর ভারত গড়ে তোলা।
ক্ষমতায় এসেই নরেন্দ্র মোদী আত্মনির্ভর ভারত গড়ার ডাক দিয়েছিলেন। সর্বক্ষেত্রে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার বার্তা দিয়েছিলেন তিনি। এইজন্য দেশে উৎপাদিত জিনিসপত্র ব্যবহারের উপরে জোর দিয়েছিলেন। শুধু তাই নয়, ভোকাল ফর লোকাল অর্থাৎ স্থানীয় উৎপাদিত জিনিসপত্র কেনার উপরে গুরুত্ব দেওয়ার কথা বলেছিলেন। এবার তাঁর সেই স্বপ্নকে বাস্তবায়িত করতে এগিয়ে এল আরএসএস।
১৯২৫ সালের বিজয়া দশমীর দিন প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল আরএসএস। সেই হিসাবে এ বছরই সংঘের শতবর্ষ পূরণ হচ্ছে। আর এই শতবর্ষে বিভিন্ন কর্মসূচি নিয়েছে সংঘ, তার মধ্যে অন্যতম কর্মসূচি হচ্ছে আত্মনির্ভর ভারত গড়া। তারজন্য মানুষকে স্বদেশী আনায় দীক্ষিত করতে স্বদেশী ভাবনা চিন্তার ওপর গুরুত্ব দিয়ে প্রচার করা হবে। মানুষ যাতে দেশে তৈরি জিনিসপত্র ব্যবহার করে সেই প্রচার করা হবে। শুধু তাই নয় স্থানীয় বিভিন্ন প্রথাকে যাতে মানুষ ফের শ্রদ্ধা করে তার কথাও প্রচারে তুলে ধরা হবে। এজন্য স্থানীয় পোশাকপরিচ্ছদ ব্যবহারের জন্য প্রচার করা হবে। মানুষ যাতে তার ঐতিহ্যবাহী পোষাক পরিচ্ছদকে আবার গুরুত্ব দিয়ে ব্যবহার করে সেই আবেদন জানানো হবে। এছাড়া শুদ্ধ মাতৃভাষার ব্যবহারের জন্য প্রচার করা হবে।
বুধবার কলকাতায় কেশব ভবনে এক সাংবাদিক সম্মেলনে এমনই বললেন সংঘের সহ ক্ষেত্র প্রচার প্রমূখ ড. জিষ্ণু বসু এবং দক্ষিণ বঙ্গ প্রান্ত প্রচার প্রমুখ বিপ্লব রায়। যিষ্ণু বসু বলেন, এই প্রচার কর্মসূচিতে সংঘের প্রতিটি স্বয়ংসেবকের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা থাকবে। প্রত্যেক স্বয়ংসেবক তার নিজের এলাকায় মানুষের মধ্যে স্বদেশী ভাবনার জাগরণ ঘটাতে প্রচার করবেন। আত্মনির্ভর ভারত গড়ার জন্য তারা দেশের উৎপাদিত জিনিস ব্যবহার করা, স্থানীয় বেশভূষার ব্যবহার এবং শুদ্ধ মাতৃভাষায় কথা বলার জন্য মানুষের কাছে আবেদন রাখবেন স্বয়ংসেবকরা।
আত্মনির্ভর ভারত গড়ার প্রচার কাজ কিভাবে হবে তার দিকনির্দেশ দিতে রাজ্যে আসছেন সংঘের সর্বোচ্চ পারাধীকারী সরসংঘ চালক মোহন ভাগবত। ৬ ফেব্রুয়ারি রাতে তিনি কলকাতায় আসছে। তারপর থেকে ১৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত টানা নানা কর্মসূচি রয়েছে তাঁর। এর আগে কখনো পশ্চিমবঙ্গে টানা দশ দিন থাকেননি মোহন ভাগবত। স্বাভাবিকভাবেই ২০২৬ এর বিধানসভা নির্বাচনের আগে তাঁর এই কর্মসূচি নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে রাজনৈতিক মহলে।
এই দশ দিনে তিনি সংঘের বিভিন্ন ক্ষেত্রের কার্যকর্তাদের সঙ্গে আলাদা আলাদা বৈঠক করবেন। বর্ধমানে একটি বড় জনসভায় বক্তব্য রাখবেন তিনি। শুধু তাই নয় সংঘের যেসব স্বয়ংসেবক এবং কার্যকর্তা বিজেপিতে বিভিন্ন দায়িত্বে আছেন তাদের সঙ্গেও বৈঠক করবেন। রাজনৈতিক মহলের বক্তব্য ২৬’এর নির্বাচনের দিকে তাকিয়ে সংঘের শতবর্ষ উপলক্ষে দ্বিমুখী প্রচারে নামছে সংঘ। একটি হচ্ছে সংঘের নিজস্ব সামাজিক প্রচার, অন্যটি হচ্ছে বিজেপির প্রচারকাজকে আরো জোরদার করা।