আমাদের ভারত, আলিপুরদুয়ার, ২ ফেব্রুয়ারি: চা-সুন্দরী প্রকল্পের সুদৃশ্য বাড়ির মডেল এবার সামনে এল। উল্লেখ্য, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মাসকয়েক আগেই প্রকল্পের ঘোষণা করেন শিলিগুড়িতে। তারপর থেকেই শুরু জল্পনা।কেমন দেখতে হবে বাড়িগুলি। চা নিয়েও উৎসুক ছিল উত্তরবঙ্গের ৩০২টি চা-বাগানের প্রায় সাড়ে ৩ লক্ষ চা-শ্রমিক। প্রশাসনের তরফে সেই বাড়ির ছবি প্রকাশ করা হল। আর তাতেই উচ্ছ্বাসে ফেটে পড়েছে চা–শ্রমিকরা।
জানা গেছে, আলিপুরদুয়ার জেলার মুজনাই চা-বাগানে প্রথম ধাপের বাড়িগুলি তৈরির কাজ শুরু হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী নিজেই মঙ্গলবার ফালাকাটায় সরকারি অনুষ্ঠানের মঞ্চ থেকে বাড়ির মালিকানা পত্র তুলে দেওয়ার কাজ শুরু করবেন। তৈরি হতে চলা বাড়ির প্রাথমিক মডেলের ছবি দেখে উচ্ছ্বসিত বিভিন্ন মহল। জানা গেছে, সুদৃশ্য একচালার বাড়িগুলি অনেকটাই বাংলো ধরনের। প্রতিটি বাড়ি প্রায় ৩৫০ বর্গফুটের কাছাকাছি কার্পেট এলাকা যুক্ত। থাকছে দুটি বেডরুম, সাথে ডায়নিং এবং একটি রান্নাঘর, শৌচাগার। বাড়ির সামনে পেছনে থাকছে খোলা জমি।চা-বাগানের সাথে সাদৃশ্য রেখেই বাড়িগুলি একই সারিতে থাকবে পরপর।
উল্লেখ্য, দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার তিন জেলার কমবেশি ৯০০০ চা-শ্রমিক পরিবার প্রথম ধাপে চা সুন্দরী প্রকল্পের ঘর পেতে চলেছে। বাড়ি তৈরির মূল দায়িত্বে রয়েছে হিডকো। প্রতিটি বাড়ি একই রকমের দেখতে হচ্ছে। পাহাড় থেকে সমতল মোট ১২টি চা-বাগানে খুশির হাওয়া।
চা-বাগান তৃণমূল কংগ্রেস মজদূর ইউনিয়নের রাজ্য সভাপতি মোহন শর্মা বলেন, “চা-বাগানের শ্রমিক ও তাদের পরবর্তী প্রজন্মের জমি বাড়ির অধীকার নিশ্চিত করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আজ উত্তরবঙ্গের চা-বাগানের জন্য একটি ঐতিহাসিক দিন। এত সুন্দর বাড়ির কল্পনাও অনেকে করতে পারেনি। ধাপে ধাপে প্রতিটি বাগানেই বাড়ি তৈরি হবে। ২ লক্ষ ৫০ হাজারের বেশি বাড়ি তৈরি হবে। জানা গেছে, আলিপুরদুয়ার জেলায় ঢেকলাপাড়া, মুজনাই, তোর্সা, লঙ্কাপাড়ার মত চা-বাগানে প্রায় ৩০০০ ঘর তৈরি হতে চলেছে। চা-বিশেষজ্ঞদের একাংশ বলেন, চা-বাগানে এতদিন শ্রমিক লাইন, লেবার লাইন দুটি প্রচলিত শব্দ ছিল। সেই শব্দগুলি এই বাড়িগুলির সাথে বেমানান। প্রকৃতই চা-শ্রমিকদের বা একজন কর্মীর স্বাভাবিক বাসস্থান বলে মনে হচ্ছে বাড়িগুলিকে, যা বর্তমান চা শ্রমিকদের বাসস্থান থেকে শতগুনে ভাল। জানা গেছে, একএকটি বাড়ি তৈরিতে খরচ হবে প্রায় সাড়ে ৫ লক্ষ টাকা। বন্ধ, রুগ্ন, দুর্বল চা বাগানগুলি আগামীতে অগ্রাধিকার পাচ্ছে বলে জানা গেছে।