শ্রীরূপা চক্রবর্তী, আমাদের ভারত, ১০ সেপ্টেম্বর: গার্ডেনরিচে এক পরিবহন ব্যবসায়ীর বাড়িত থেকে টাকার পাহাড় উদ্ধার ঘিরে রাজ্য রাজনীতি সরগরম। ইডির তল্লাশি নিয়ে যেমন রাজ্যের শাসক দল সরব। তেমনি পাল্টা জবাব দিয়েছেন বিজেপি রাজ্য সভাপতিও। সুকান্ত মজুমদারের মতে গার্ডেনরিচের ঘটনায় ফিরহাদ হাকিমের বক্তব্য থেকে আসলে বোঝা যাচ্ছে, তিনি ওই ব্যবসায়ীকে বাঁচানোর চেষ্টা করছেন। একই সঙ্গে তাঁর অভিযোগ, তৃণমূলের আমলে পশ্চিমবঙ্গ কালোটাকা জমিয়ে রাখার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে।
শনিবার সকাল সাড়ে আটটা থেকে কলকাতায় ছটি জায়গায় তল্লাশি অভিযান শুরু করে ইডি। তল্লাশি অভিযানে গার্ডেনরিচের পরিবহন ব্যবসায়ী আমির খানের বাড়ি থেকে অন্তত ১৭ কোটি ৩২ লক্ষ টাকা উদ্ধার হয়েছে। ৭ কোটি উদ্ধারের পরই দুপুরে পুরসভায় সাংবাদিক বৈঠকে ফিরহাদ হাকিম প্রশ্ন তোলেন, বাছাই করে অবিজেপি রাজ্যগুলোকে টার্গেট করা হচ্ছে, বিজেপির বিরুদ্ধে প্রতিবাদের মুখ বন্ধ করতে। এর পাল্টা জবাব দিয়েছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি। তিনি বলেন, “যে টাকা উদ্ধার হচ্ছে সেটা বেআইনি টাকা। কালো টাকা। তৃণমূলের কংগ্রেসের আমলে গোটা পশ্চিমবঙ্গ কালোটাকার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে।”
ফিরহাদ হাকিম অভিযোগ করেছেন, কেন্দ্রের বিজেপি সরকার ইচ্ছাকৃতভাবে রাজ্যে ভাবমূর্তি নষ্ট করে বিজেপি শাসিত রাজ্যে বিনিয়োগ টেনে নিয়ে যেতে চাইছে। বাংলার ব্যবসাকে ধ্বংস করতে চাইছে। ভীতি সঞ্চার করতে চাইছেন, যাতে বিনিয়োগকারীরা এরাজ্যে বিনিয়োগ না করে বিজেপি শাসিত রাজ্যে বিনিয়োগ করতে বাধ্য হন।
এর উত্তরে সুকান্ত মজুমদার বলেন, “বিনিয়োগকারীরা স্বচ্ছ টাকায় বিনিয়োগ করেন। কালো টাকায় তারা বিনিয়োগে আগ্রহী হন না। আর এখানে তো কালো টাকা উদ্ধার হচ্ছে। আসলে এই সমস্ত কথা বলে ফিরহাদ হাকিম ওই ব্যবসায়ীকে বাঁচানোর চেষ্টা করছেন, এটাই ওনার উদ্দেশ্য।”
কোনও বিধানসভা এলাকা থেকে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা টাকা উদ্ধার করলে তার জবাব কেন সংশ্লিষ্ট বিধায়ককে দিতে হবে? প্রশ্ন তুলেছেন কলকাতা বন্দরের বিধায়ক তথা রাজ্যের মন্ত্রী ও কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম। এপ্রসঙ্গে বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, “এই ঘটনা আসলে ফিরহাদ হাকিমের দুর্বল জায়গায় আঘাত হয়েছে। ওই বন্দর এলাকার তিনি জনপ্রতিনিধি, আবার তিনি মন্ত্রী ও মেয়র। তাহলে ওই ছোট্ট এলাকা সম্পর্কে তাঁর কাছে তথ্য নেই, এটা কি হতে পারে? সেই কারণেই তাঁর দিকে সন্দেহ ঘনীভূত হচ্ছে।”
ফিরহাদ দেশ থেকে পালিয়ে যাওয়া শিল্পপতির নিরব মোদী কথা তুলে বলেন, দেশ থেকে নিরব মোদী হাজার হাজার কোটি টাকা ঋণ নিয়ে পালিয়ে গিয়েছে। তার পরে কি দেশের প্রধানমন্ত্রী কোনো জবাব দিয়েছিলেন? তাহলে কেন আমাদের জবাবদিহি করতে হবে? এই প্রসঙ্গে বিজেপি রাজ্য সভাপতি বলেন, এই ঘটনার সাথে এই মন্তব্য যুক্তিহীন। তারপরেও বলব, যে পরিমাণ টাকা তারা নিয়ে পালিয়েছিল সেই টাকা ইতিমধ্যেই ইডি অ্যাটাচ করেছে।