সুশান্ত ঘোষ, আমাদের ভারত, উত্তর ২৪ পরগণা, ১০ ডিসেম্বর: একদিকে যখন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দলের পুরনো কর্মীদের যোগ্য সম্মান দেওয়ার কথা বলছেন। তখন জেলার নেতাদের মন্তব্যে অপমানিত বোধ করে পদ ছাড়লেন উত্তর ২৪ পরগনার জেলা পরিষদের খাদ্য কর্মাধক্ষ্য রতন ঘোষ। বুধবার জেলা শাসকের কাছে চিঠি দিলেন তিনি। বনগাঁয় মুখ্যমন্ত্রীর সভাতেও দেখা মেলেনি তাঁর। বিষয়টা নিয়ে তৃণমূলের অন্দরে সোরগোল শুরু হয়েছে।
তৃণমূলের জন্ম থেকে জেলায় মমতা সভা করছেন অথচ রতন ঘোষ নেই এমন ঘটনা বনগাঁর মানুষের মনে পড়ে না। কি এমন ঘটনা ঘটল যে তিনি পদ ছাড়লেন। রতন ঘোষের সঙ্গে কথা বলে মনে হল তিনি হতাস। খুব আস্তে আস্তে বলে উঠলেন, “এতো অপমান আর নিতে পারছি না। তবে এখনই আমি অন্য কোনও দলে যোগদান করছি না। তবে তৃণমূলের প্রাথমিক সদস্যপদ ছেড়ে দেওয়ার কথা ভাবছি।”
তৃণমূল ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, তৃণমূলের জন্মলগ্ন থেকেই রতন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাশে। তৃণমূল দল প্রতিষ্ঠা হওয়ার পর যাঁদের হাত ধরে তৃণমূল বনগাঁয় শক্তিশালী হয়েছিল, তার মধ্যে প্রথম সারিতে ছিলেন বর্তমান জেলা তৃণমূলের কার্যকরী সভাপতি রতন। আগে জেলা যুব তৃণমূলের সভাপতির পদ সামলেছেন। সে সময় তিনি বারাসতে একটি বিশাল সভার আয়োজন করেন। যা কর্মীরা আজও মনে রেখেছেন। বাম আমলে বনগাঁয় তৃণমূলের আন্দোলনের মুখ ছিলেন তিনি। আন্দোলন করতে গিয়ে জেলও খাটেন।
রতন ঘনিষ্ঠদের সূত্রে জানা গিয়েছে, বেশ কিছু বছর ধরেই দলে তাঁর গুরুত্ব কমছে বলে মনে করেন তিনি। জেলা তৃণমূলের কার্যকরী সভাপতি হলেও তাঁকে পদের যোগ্য সম্মান দেওয়া হচ্ছিল না। বিভিন্ন বিষয়কে কেন্দ্র করে দলের জেলা সভাপতির সঙ্গেও তাঁর দূরত্ব বাড়ছিল। বিশেষ করে বনগাঁয় দল পরিচালনা নিয়ে মতপার্থক্যের কথা শোনা যায় দলের অন্দরে।
সূত্রের খবর, তৃণমূলের পদত্যাগী মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী, দলতেগী মুকুল রায়ের সঙ্গে রতনের অনেক দিনের সম্পর্ক। শুভেন্দুর সঙ্গে দলের দূরত্ব বেড়েছে। এই পরিস্থিতিতে এদিন মুখ্যমন্ত্রীর সভায় গরহাজির থেকে জল্পনা বাড়িয়ে দিলেন রতন ঘোষ। বনগাঁ উত্তর কেন্দ্রের বিধায়ক তথা বিজেপির বারাসত সাংগঠনিক জেলার সহ সভাপতি বিশ্বজিৎ দাসের সঙ্গে রতনবাবুর দীর্ঘদিনের সম্পর্ক। বিশ্বজিৎ তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে গেলেও ব্যক্তিগত সম্পর্ক নষ্ট হয়নি তাদের। বিশ্বজিৎ বলেন, ‘‘রতনদা বিজেপিতে আসতে চাইলে দল গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করবে।’
’এ বিষয়ে জেলা তৃণমূল সভাপতি জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বলেন, রতনবাবুর পদ ছাড়া ‘‘এটা ওঁর ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত। এ নিয়ে আমার কিছু বলাই নেই।’’