আমাদের ভারত, ১৭ আগস্ট: অখিল ভারতীয় রাষ্ট্রীয় শৈক্ষিক মহাসঙ্ঘের পক্ষ থেকে সুরক্ষার আবেদনে মুখ্যমন্ত্রী সহ রাজ্যের সমস্ত থানার পুলিশ প্রশাসনকে রাখিবন্ধনের ডাক দিয়েছে।
‘রাখি সুরক্ষার প্রতীক’ এই ভাবনাকে সামনে রেখে পশ্চিমবঙ্গের ছাত্র-ছাত্রী, শিক্ষক-শিক্ষিকা, অধ্যাপক-অধ্যাপিকা, শিক্ষাকর্মী, চিকিৎসক সহ সমস্ত কর্মচারীদের সুরক্ষার আবেদনে মুখ্যমন্ত্রী ও রাজ্যের সমস্ত থানার পুলিশ প্রশাসনকে সোমবার রাখিবন্ধনের কার্যক্রম নেওয়া হয়েছে।
অখিল ভারতীয় রাষ্ট্রীয় শৈক্ষিক মহাসঙ্ঘ, পশ্চিমবঙ্গর (বিদ্যালয় শিক্ষা) রাজ্য সাধারণ সম্পাদক বাপি প্রামাণিক এক বিবৃতিতে শনিবার জানান, বিগত কয়েক বছর ধরে ক্রমাগত পশ্চিমবঙ্গের ছাত্র-ছাত্রী, শিক্ষক-শিক্ষিকা, অধ্যাপক-অধ্যাপিকা, শিক্ষাকর্মী ডাক্তার সহ সমস্ত কর্মচারীর ওপর নানারকম আক্রমণ ও হত্যালীলা চলছে। এই নিপীড়ন ও মৃত্যু মিছিলের বিভীষিকা আমাদের রাতের ঘুম কেড়ে নিয়েছে, উৎসবের দিনগুলোকেও এক বিষাদের মেঘে ঘিরে রেখেছে। তা আপনাদের সামনে তুলে ধরি আরও একবার-
১) রায়গঞ্জ কলেজের অধ্যক্ষের ওপর বহিরাগতদের আক্রমণ,
২) রামপুরহাট কলেজে অধ্যক্ষ ও এক শিক্ষাকর্মীকে মানসিক নির্যাতন ও নিগ্রহ এবং ঝাড়গ্রাম কলেজেও একইরকম ঘটনা,
৩) ভাঙ্গর কলেজের শিক্ষিকাকে জগ ছুঁড়ে মারা,
৪) দাঁড়িভিট উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে ছাত্র ছাত্রীদের আন্দোলনকে প্রতিহত করতে গিয়ে রাজেশ ও তাপসের হত্যা,
৫) ভোট নিতে গিয়ে শিক্ষক রাজকুমার রায়ের মৃত্যু,
৬)বিদ্যালয়ের নির্দিষ্ট পোশাক পরতে বলায় সুতির প্রধান শিক্ষক দীনবন্ধুবাবুর ওপর হামলা এবং তাঁকে সেই বিদ্যালয় থেকে অন্যত্র বদলি করানো,
৭) হিলির ত্রিমোহিনী উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা স্কুল ইউনিফর্ম নিয়ে কথা বলায় বিদ্যালয়ের ভেতরে তার ওপর আক্রমণ এবং বস্ত্র হরণের চেষ্টা,
৮) আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের ওপর আক্রমণ এবং অকথ্য গালিগালাজ,
৯) হাওড়ার শ্যামপুর থানার নওদা নয়ণচন্দ্র বিদ্যাপীঠের স্টাফরুমে ঢুকে শিক্ষকদের ওপর শারীরিক নিগ্রহ,
১০) সোনারপুর বলরামপুর এম এন বিদ্যামন্দিরের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের উপর বহিরাগতদের আক্রমণ,
১১)যাদবপুরের ছাত্র স্বপ্নদীপের হত্যা,
১২) গঙ্গারামপুর থানার অশোক গ্রাম হাইস্কুলের শিক্ষক স্কুল ইউনিফর্ম নিয়ে কথা বলায় তাকে গ্রেফতার করে হাজতবাস করানো,
১৩)কোন্নগরের হীরালাল পাল কলেজে শিক্ষক নিগৃহীত,
১৪) কলকাতার বিদ্যাসাগর কলেজে ক্লাসে ঢুকে কু- কথা ও দুর্ব্যবহারের ঘটনায় নিগৃহীত শিক্ষিকা,
১৫) কোচবিহার ঠাকুর পঞ্চানন বর্মা
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে জাতি তুলে অপমান,
১৬) ছোট জাগুলিয়া হাইস্কুলে অস্থায়ী কর্মচারী শিবু সি এর মৃত্যু,
১৭)উত্তর দিনাজপুর জেলার চোপড়া ও কালিয়াগঞ্জ ছাত্রীর ধর্ষণ ও খুন,
১৮)পুরুলিয়া জেলার বান্দোয়ান থানার ছাত্রীর ধর্ষন ও খুন,
১৯) সর্বশেষ কলকাতার আর জি কর মেডিক্যাল কলেজে এক তরুণী চিকিৎসককে হাসপাতালের ভেতরেই ধর্ষণ করে খুন।
আমরা ছাত্র- ছাত্রী, শিক্ষক-শিক্ষিকা, অধ্যাপক -অধ্যাপিকা, শিক্ষাকর্মী ডাক্তার সহ সমস্ত কর্মচারীরা এই রাজ্যে আতঙ্কিত, ভীত এবং অসুরক্ষিত। এই সমস্ত আক্রমণ, হামলা, নিগ্রহ ও হত্যার নিরপেক্ষ তদন্ত এবং শাস্তির মাধ্যমে সুরক্ষিত পরিবেশ তৈরি করতে হবে। এই অভূতপূর্ব পরিস্থিতিতে রাখীবন্ধনের মাধ্যমে মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী সহ রাজ্যের সমস্ত থানার পুলিশ প্রশাসনের নিকট সুরক্ষার আবেদন করছি।