Sur O Dhvani, Nadia, শতকন্ঠে রবীন্দ্র সঙ্গীতের আয়োজন করল চাকদহ সুর ও ধ্বনি

মিলন খামারিয়া, আমাদের ভারত, নদিয়া, ৪ জানুয়ারি:
দিকে দিকে যেখানে ভারতীয়ত্বকে অপমান করার প্রয়াস করা হচ্ছে, ভারতীয় সভ্যতাকে ধ্বংস করার জন্য; তার সংস্কৃতিকে নষ্ট করার প্রচেষ্টা করা হচ্ছে তখন আর এক শ্রেণির ভারতপ্রেমী মানুষ ভারতের আত্মাকে তুলে ধরার চেষ্টা করছেন। বড়দিন ও খ্রিষ্টানী নববর্ষ পালনের হিড়িকের মাঝেও ভারত প্রেমের জয়গান গাইলেন একদল মানুষ রবীন্দ্রনাথের গানের মাধ্যমে।

গত ২৮ শে ডিসেম্বর’২৪, নদিয়া জেলার চাকদহে, সম্প্রীতি মঞ্চে, রবীন্দ্রনাথের সৃষ্টি কর্মের গভীর দ্যোতনাবাহী ‘জীবনদেবতা তত্ত্ব’কে শতাধিক কন্ঠের সম্মেলনে চাকদহ ‘সুর ও ধ্বনি’র প্রযোজনায় গান, কবিতা এবং ভাষ্যপাঠের মাধ্যমে উপস্থাপিত করা হলো। বিশিষ্ট রবীন্দ্র সঙ্গীত শিল্পী এবং নাট্যকার ও নাট্য নির্দেশক ঋতুরাজ গোস্বামীর সঙ্গীত পরিচালনায়, বিশিষ্ট বাচিক শিল্পী সুস্মিতা কাপুরিয়ার আবৃত্তি ও ভাষ্যপাঠের নির্দেশনায় শতাধিক শিল্পীর কন্ঠ নিঃসৃত সুর ও কথা এক মোহময় রাবীন্দ্রিক আবহে আচ্ছন্ন করে রেখেছিল শ্রোতামন্ডলীকে। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের একুশটি গান ও কিছু কবিতার অংশবিশেষকে এক সূত্রে গেঁথে ভাষ্য নির্মাণ করেছিলেন ডঃ সত্যরঞ্জন বিশ্বাস। উদ্বোধনী মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক বিপুল রঞ্জন সরকার, ২নং তাতলা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি অশোক মন্ডল, চাকদহ সুর ও ধ্বনির সভাপতি অধ্যাপক ডঃ উত্তম পাল, সম্পাদক তন্ময় মজুমদার সহ আরো বিশিষ্টজন।

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের অধ্যাত্মচেতনা ভারতীয় সভ্যতার মূল সুর ‘তেন ত্যক্তেন ভঞ্জিথাঃ ‘ অর্থাৎ ‘ত্যাগপূর্বক ভোগ’ – এই দর্শনের উপর প্রতিষ্ঠিত। স্রষ্টার অপরূপ লীলাভূমি এই বিশ্বব্রহ্মাণ্ড। সীমায়ত জায়গায় তাঁকে অনুভব করা যায় না। ব্যক্তি জীবনের প্রতিটি যাপনের মধ্য দিয়ে তাকে খুঁজে নিতে হয়। রবীন্দ্রনাথের অজস্র সৃষ্টির মধ্যে এই মার্গ প্রতিফলিত, এই মার্গই হল তাঁর ‘জীবন দেবতা’।

কেন এই আয়োজন, কেনই বা রবীন্দ্রনাথের জীবনদেবতা তত্ত্বকে গ্রহণ করা হলো, এই প্রশ্নের উত্তরে চাকদহ ‘সুর ও ধ্বনি’র অন্যতম প্রাণপুরুষ, ঋতুরাজ গোস্বামী জানালেন, বিশ্বব্রহ্মাণ্ডকে চেনার, তাঁকে অন্তর দিয়ে উপলব্ধি করার অনেক পথ আছে, কিন্তু বাঙালি তথা সমস্ত ভারতীয়র কাছে সহজতম ও সহজশ্রেষ্ঠ পথ হল রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। শতাধিক রবীন্দ্র প্রেমিকে একত্রিত করে দীর্ঘদিন ধরে রবীন্দ্রনাথের গান ও কবিতাগুলিকে অনুশীলনের মাধ্যমে সেগুলিকে আত্মস্থ করার, সেগুলির মধ্যে দিয়ে ভারতীয়ত্বকে অনুভব করার উদ্দেশ্য নিয়েই রবীন্দ্রনাথের জীবনদেবতাদর্শনকে গ্রহণ করা হয়েছে। রবীন্দ্রনাথের গান ও কবিতার সুর, তাল, ধ্বনি ও ছন্দের মাধ্যমে শ্রোতামণ্ডলীর কাছেও রবীন্দ্র জীবন দর্শনকে পৌঁছে দেওয়ার একটা ক্ষুদ্র প্রচেষ্টায় এই অনুষ্ঠান।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *