গঙ্গারামপুরের নারী নিগ্রহের ঘটনার প্রতিবাদে দিল্লিতে গান্ধী মূর্তি পাদদেশে বিক্ষোভ দেখালেন বিজেপি সাংসদরা

আমাদের ভারত, শ্রীরূপা চক্রবর্তী, ৭ ফেব্রুয়ারি: গঙ্গারামপুরের ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে আগেই দেখা করেছিলেন বাংলার বিজেপি সাংসদরা। জানিয়েছিলেন পশ্চিমবঙ্গে গণতন্ত্র ভুলুন্ঠিত, একের পর এক ঘটে চলেছে নারী নিগ্রহের ঘটনা। কিন্তু তাতে রাজ্য সরকারের কোনো হেলদোল নেই। এবার এই ইস্যুগুলি নিয়ে রাজধানী দিল্লিতে আরো একবার সোচ্চার হলেন বিজেপির সাংসদরা। শুক্রবার গান্ধী মূর্তির পাদদেশে গঙ্গারামপুর ঘটনার প্রতিবাদে বিক্ষোভ দেখান রাজ্যের বিজেপি সাংসদরা।

গত সপ্তাহেই এক মধ্যযুগীয় বর্বরতার ঘটনার সাক্ষী হয়েছে রাজ্যবাসী। ব্যক্তিগত সম্পত্তির উপর দিয়ে জোর করে রাস্তা তৈরিতে বাধা দেওয়ায় বিজেপির কর্মী তথা শিক্ষিকা ও তার দিদিকে কুকুরের মত বেঁধে টেনে হিঁচড়ে প্রকাশ্যে রাস্তা দিয়ে নিয়ে গেছে স্থানীয় তৃণমূলের নেতারা। দক্ষিণ দিনাজপুরের গঙ্গারামপুরের এই ঘটনায় উত্তাল হয়েছে রাজ্য রাজনীতি। প্রতিবাদের কারণে কিছুটা হলেও নড়েচড়ে বসতে বাধ্য হয়েছে রাজ্য প্রশাসন। ঘটনায় তিন জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। প্রথমটায় এই ঘটনায় মূল অভিযুক্ত তৃণমূল কংগ্রেসের পঞ্চায়েতের উপপ্রধানকে গ্রেফতার করেনি পুলিশ। কিন্তু শেষ পর্যন্ত চাপ বাড়তেই তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
এই ঘটনা সম্পর্কে রিপোর্ট তলব করেছেন হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতিও।

বর্বোরোচিত ঘটনার প্রতিবাদে দিল্লিতেও সোচ্চার হলেন বিজেপির সাংসদরা। আগেই এই ঘটনার সম্পর্কে জানিয়ে রাজ্যের আইন শৃঙ্খলা অবনতির অভিযোগ করেন তারা রাষ্ট্রপতির কাছে। শুক্রবার এই ঘটনার প্রতিবাদে সংসদ চত্বরে গান্ধী মূর্তির পাদদেশে তারা বিক্ষোভ দেখান তারা।

বিজেপি সাংসদ সুকান্ত মজুমদার বলেন,
দক্ষিণ দিনাজপুরের গঙ্গারামপুর থানার নন্দনপুর এলাকায় মহিলাকে হেনস্থার ঘটনার পাশাপাশি রাজ্যের সমস্ত জেলায় আইনশৃঙ্খলার অবনতি হয়েছে, রাজ্যে গণতন্ত্র ভুলুন্ঠিত, একের পর এক নারী নির্যাতনের ঘটনা ঘটে চলেছে রাজ্যে। দলিতদের সেখানে বৈষম্যের শিকার। এই সমস্ত বিষয়ের প্রতিবাদ জানাতে তারা এদিন গান্ধী মূর্তি পাদদেশে বিক্ষোভ দেখালেন। তাদের অভিযোগ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী সিএএ নিয়ে ধর্না মঞ্চে গিয়ে বসে পড়ছেন অথচ সংবিধানের প্রস্তাবনায় যে গণতান্ত্রের কথা লেখা আছে তা রাজ্যে কোথাও বলবৎ করছেন। পশ্চিমবঙ্গে গণতন্ত্র নেই বলে এদিন অভিযোগ করেন বিজেপির সাংসদরা।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, গত শনিবার দক্ষিণ দিনাজপুরের গঙ্গারামপুরে ব্যাক্তিগত সম্পত্তির উপর দিয়ে জোর করে রাস্তা তৈরিতে বাধা দেওয়ায় মধ্যযুগীয় বর্বরতার শিকার হন এক শিক্ষিকা। মারধরের পাশাপাশি দড়ি দিয়ে কুকুরের মতো বেঁধে টেনে হিঁচড়ে প্রকাশ্য রাস্তা দিয়ে নিয়ে যান তৃণমূলের নেতারা বলে অভিযোগ। এই ভয়ঙ্কর ঘটনার ছবি ভাইরাল হয়ে যায় সোশ্যাল মিডিয়ায়। দড়ি দিয়ে বেঁধে টেনেহিঁচড়ে
নেওয়াই নয় ওই শিক্ষিকার শ্লীলতাহানিও করা হয়েছে বলে অভিযোগ ওঠে এলাকার তৃণমূলের উপপ্রধান সহ তাঁর দলবলের বিরুদ্ধে। মারধর করা হয়েছে মহিলার দিদিকেও। প্রাণে মারার হুমকি দেওয়া হয়েছে শিক্ষিকা স্মৃতিকনা দাসকে। ঘটনা জানিয়ে তারা গঙ্গারামপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। তৃণমূল কংগ্রেসের তরফে ওই উপপ্রধানকে দল থেকে সাসপেন্ড করা হয়। পুলিশ ওই ঘটনায় অভিযুক্ত পঞ্চায়েতের উপপ্রধান সহ তিন জনকে গ্রেফতার করেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *