আমাদের ভারত, জলপাইগুড়ি, ২৭ আগস্ট: জন্মাষ্টমী’র পর দুর্গা পুজোর কাঠামো পুজো ও দধিকাদো খেলার মধ্য দিয়ে জলপাইগুড়ির বৈকুন্ঠপুর রাজবাড়ির দুর্গা পুজোর প্রস্তুতি শুরু হল। রাজ পরিবারের এবছরের পুজো ৫১৫ বছরে পড়ল। মঙ্গলবার থেকে পুজোর প্রস্তুতি ও প্রতিমা তৈরির কাজ শুরু হয়ে গেল বলে দাবি। এ দিন পুজোকে কেন্দ্র করে স্থানীয়রা সামিল হয়েছিলেন।
রাজা নেই, রাজত্ব নেই, কিন্তু আজও রাজার নিয়ম নিষ্ঠা বৈকুন্ঠপুর রাজবাড়ির দুর্গা পুজোয় বিরাজ করে। প্রতিবছরের মত এবছরও জন্মাষ্টমী’র পুজো করে দুর্গা প্রতিমা তৈরির কাঠামো পুজো হল। এরপর এলাকায় কিশোররা দধিকাদো খেলায় মেতে উঠেছিল। বেশকিছুক্ষণ দধিকাদো খেলার পর সেই কাদামাটি দুর্গা প্রতিমা গড়ার কাজে ব্যবহার করা হবে, এই নিয়মই চলে আসছে প্রতিবছর। এ দিনও নিয়মে খামতি হল না রাজবাড়ির।
কথিত আছে, এক সময় পুজোকে কেন্দ্র করে নরবলি দেওয়া হত। এখন নরবলি না হলেও প্রতীকি নরবলি হয়ে থাকে অষ্টমী’র গভীর রাতে। মানুষের মত পুতুল বানিয়ে দেওয়া হয় বলি। লাল রক্তে দুর্গা পুজোর প্রচলন হয়েছিল, এই কারণে বৈকুন্ঠপুর রাজবাড়ির দুর্গা প্রতিমার রঙ তপ্তকাঞ্চনবর্ণ। দুর্গার পাশে সন্তানদের পাশাপাশি ব্রহ্মা, বিষ্ণু, মহেশ্বর ও জয়া- বিজয়া, মহামায়া, চন্ডি বিরাজ করে। আলাদা আলাদা পুজো হয়। অন্যদিকে দুর্গার বাহন সাদা সিংহ, সেই সিংহের পাখনা সঙ্গে বাঘ থাকে।
এ দিন রাজ পরিবারের সদস্যা লিন্ডা বসু বলেন, “রাতে জন্মাষ্টমী’র গোপাল পুজো হয়েছে। সেই গোপালকে সামনে রেখে কাঠামো পুজো হল। দধিকাদো খেলা হয়। আজ থেকে পুজোর প্রস্তুতি শুরু হয়ে গেল।”
রাজ পরিবারের সদস্য প্রণত বসু বলেন, “এখন দধিকাদা খেলা হচ্ছে। এই মাটি দুর্গা পুজোর কাজে ব্যবহার করা হবে।”
রাজ পরিবারের পুরোহিত শিবু ঘোষাল বলেন, “৫১৫ বছরে পড়ল রাজ পরিবারের দুর্গা পুজো। কৃষ্ণের জন্মদিনের পরের দিন প্রতিবছরের মত এবছরও দন্দ উৎসবের মধ্য দিয়ে দুর্গা পুজোর সূচনা হয়ে গেল।”