আমাদের ভারত, ৭ জানুয়ারি: রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায় স্মৃতিসৌধ তৈরি হবে রাজঘাটে। নতুন বছরে এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছে কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদী সরকার। প্রণব মুখোপাধ্যায়ের পরিবারকে চিঠি দিয়ে ইতিমধ্যে সে কথা জানিয়ে দিয়েছে কেন্দ্র। অপ্রত্যাশিত উপহারের জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন প্রণব কন্যা শর্মিষ্ঠা মুখোপাধ্যায়। অন্যদিকে মোদী সরকারের এই সিদ্ধান্তের জন্য বাঙালি তথা বঙ্গের সাংসদ হিসেবে গর্বিত বলে জানালেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার।
মঙ্গলবার এক্স হ্যান্ডেলে কেন্দ্রীয় আবাসন ও নগর উন্নয়ন মন্ত্রকের চিঠি শেয়ার করেন শর্মিষ্ঠা মুখোপাধ্যায়। কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে প্রেরিত চিঠিতে প্রণব মুখার্জির পরিবারকে জানানো হয়েছে, প্রাক্তন রাষ্ট্রপতির স্মৃতি সৌধ তৈরির জন্য রাজঘাট এলাকার মধ্যে রাষ্ট্রীয় স্মৃতি কমপ্লেক্সের একটি জমি বাছা হয়েছে। কেন্দ্রের চিঠি পাওয়ার পর প্রণব কন্যা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে দেখা করে এসেছেন এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় তাঁকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন।
অন্যদিকে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার এই সিদ্ধান্ত জানার পরেই এক্স হ্যান্ডেলে প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। তিনি লিখেছেন, “ভারতবর্ষের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি এবং পশ্চিমবঙ্গের অন্যতম গর্ব প্রয়াত প্রণব মুখোপাধ্যায়কে শ্রদ্ধা জানাতে দিল্লিতে একটি স্মারক প্রতিষ্ঠার অনুমোদন দিয়েছে মোদী নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় সরকার।
কেন্দ্রীয় সরকারের এই সিদ্ধান্তের জন্য পশ্চিমবঙ্গ থেকে নির্বাচিত একজন সাংসদ, সর্বোপরি একজন বাঙালি হিসেবে আমি গর্বিত! ঐতিহাসিক এই সিদ্ধান্তের জন্য সম্মানীয় মোদীজী’কে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই।”
তবে এই সিদ্ধান্তে নতুন করে বিতর্ক উস্কে দেন শর্মিষ্ঠা। কংগ্রেসকে চড়া সুরে আক্রমণ করে তিনি বলেন, প্রণব মুখোপাধ্যায়ের মৃত্যুর পর কংগ্রেসের ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠক ডেকে ন্যূনতম শোক প্রস্তাবও দেওয়া হয়নি। তিনি আরো বলেন, বাবা যখন মারা গেলেন কংগ্রেস শোক প্রকাশের জন্য ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠক ডাকারও প্রয়োজন বোধ করেনি। এই নিয়ে কংগ্রেসের তরফে মিথ্যাচার করা হয় বলে অভিযোগ করেছেন তিনি।
আজকের ঘোষণার পর নরেন্দ্র মোদীর প্রশস্তি শোনা যায় তাঁর মুখে। প্রণব মুখোপাধ্যায় কংগ্রেসের যোগ্য সম্মান পায়নি এই অভিযোগ খুব একটা নতুন নয়। ২০০৪ সালে প্রণববাবুর বদলে মনমোহন সিং’কে প্রধানমন্ত্রী করার পর থেকে প্রণব ঘনিষ্ঠরা মনে করেন তারা বঞ্চিত হয়েছেন। মনমোহন সিং এক সময় নিজেও স্বীকার করেছেন সেই সময় প্রধানমন্ত্রী হওয়ার যোগ্যতম ব্যক্তি ছিলেন প্রণব মুখোপাধ্যায়। পরে প্রণববাবু রাষ্ট্রপতি হন, তবে নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গেও সু-সম্পর্ক ছিল তাঁর। কেন্দ্র ২০১৯ সালে তাকে ভারতরত্ন দেয়। এবার প্রণববাবুর স্মৃতিসৌধি তৈরি করতে চাইছে মোদী সরকার।