Sukanta, Anubrata, “অনুব্রত মণ্ডলকে গ্রেপ্তার করার সাহস নেই পুলিশের”

আমাদের ভারত, ৩ জুন:বেশ কয়েকদিন ধরেই
অনুব্রত মণ্ডলকে নিয়ে বিতর্ক চলছে। এই ইস্যুতেই রাজ্য সরকার তৃণমূল কংগ্রেস ও পুলিশকে একসঙ্গে আক্রমণ শানালেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। মঙ্গলবার কলকাতা বিমানবন্দরের বাইরে দাঁড়িয়ে তিনি দাবি করলেন অনুব্রত মণ্ডলকে গ্রেপ্তার করার সাহস নেই পুলিশের।

গত সপ্তাহে অনুব্রত মণ্ডলের একটি ফোন কল প্রকাশ্যে আসে, সেখানে বোলপুর থানার আইসির সঙ্গে অশ্লীল শব্দ ব্যবহার করে কথা বলতে শোনা যায়। এমনকি ওই আধিকারীকের স্ত্রী ও মা’কে নিয়ে অশ্লীল কথা বলতে শোনা যায়। অডিওটি নিয়ে বিতর্ক তৈরি হতেই তৃণমূল কংগ্রেস অনুব্রত মণ্ডলকে ক্ষমা চাওয়ার নির্দেশ দেয়। চার ঘণ্টা সময় দেওয়া হয় অনুব্রতকে। দলের নির্দেশ মেনে তৃণমূল নেতা ক্ষমা চেয়ে নিলেও পুলিশের তরফে তাকে থানায় হাজিরার নোটিশ এড়িয়ে যান। হাজিরা না দিয়ে উল্টে আইনজীবী মারফত অসুস্থতার কথা জানিয়েছেন তিনি পুলিশকে।

এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার বলেন, পুলিশ গ্রেফতার করতে না চাইলে আপনি কিভাবে গ্রেফতার করবেন? হাজিরার সঙ্গে কি সম্পর্ক? বাড়ি থেকে তো তুলে আনতে পারে, আনছে না কেন? পুলিশ গ্রেপ্তার করবে না। পুলিশের সেই সাহস নেই।

এদিকে অনুব্রত মণ্ডলের বিরুদ্ধে আবার সক্রিয় হয়েছে সিবিআই বলে খবর। গরু পাচার মামলায় ধৃত অনুব্রত মণ্ডল শর্তাধীন জামিন পেয়েছিলেন। অন্যতম শর্ত ছিল সাক্ষীদের হুমকি দেওয়া যাবে না। কিন্তু অনুব্রত যেভাবে একজন পুলিশ আধিকারিককে হুমকি দিয়েছেন তাতে তিনি গরু পাচার মামলার সাক্ষীদেরও হুমকি দিয়ে থাকতে পারেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। তাই বিষয়টি খতিয়ে দেখতে শুরু করেছে সিবিআই।

এই প্রসঙ্গে সুকান্ত মজুমদার বলেন, সিবিআই নিজের কাজ করবে। অনুব্রত মণ্ডলের মতো লোক সমাজে না থেকে জেলের ভেতরে থাকাই ভালো।

বীরভূমের এক টিএমসি নেতা অনুব্রতর পাশে দাঁড়িয়ে বোলপুর থানার আইসিকে হুমকি দিয়েছিল। তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে তৃণমূল। কিন্তু অনুব্রতর বিরুদ্ধে তেমন কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এ প্রসঙ্গে সুকান্ত মজুমদার বলেন, এটা হচ্ছে “ঝি-কে মেরে বউকে শাস্তি দেওয়া।” এখনকার দিনে ওটা অবশ্য চলে না। কিন্তু তৃণমূল কংগ্রেস এটাই করার চেষ্টা করছে। অনুব্রত মণ্ডলকে কিছু করা যাবে না। যে নিরীহ, মানে যে পাল্টা কোনো কিছু করতে পারবে না তাকে শাস্তি দেওয়া হলো।”

অনুব্রত মণ্ডলের মতো গত রবিবার মুর্শিদাবাদের তৃণমূল নেতা তথা ভরতপুরের বিধায়ক হুমায়ুন কবিরও পুলিশকে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। পরে পুলিশের সিপির সঙ্গে বৈঠকের পর নিজের মন্তব্য ফিরিয়ে নেন। এ প্রসঙ্গে সুকান্ত মজুমদার বলেন, “আমি তো আগেও বলেছি, যাদের মনে হচ্ছে অনুব্রত খারাপ, তৃণমূল খারাপ নয়, তারা মূর্খের স্বর্গে বাস করছেন। প্রতিটি তৃণমূল নেতা পুলিশের সঙ্গে এই ভাবেই কথা বলে।”

সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া দেওয়ার জন্য বিএসএফকে রাজ্য সরকারের তরফে জমি দেওয়ার প্রসঙ্গে সুকান্ত মজুমদার বলেন, যতক্ষণ না জমি বিএসএফ পাচ্ছে ততক্ষণ পর্যন্ত আমি এই সরকারকে বিশ্বাস করতে পারছি না। আশা করবো পলিটিক্যাল জাগ্লারির বাইরে দেশের কথা চিন্তা করে জমি দেওয়া উচিত। পশ্চিমবঙ্গের সীমানা বরাবর পুরো ফেন্সিং হওয়া উচিত, যাতে বাংলাদেশ থেকে অনুপ্রবেশ আটকানো যায়।

পাকিস্তানপন্থীদের সংখ্যা বাড়ছে বলে অভিযোগ করে তিনি বলেন, আমরা আগেও বহুবার চিৎকার করে বলেছি, এই সরকারের আমলে এই রাজ্য বিশেষ করে কলকাতা এবং তার সংলগ্ন বেশকিছু জেলা যেমন দক্ষিণ ২৪ পরগনা থেকে উত্তর ২৪ পরগনা সহ রাজ্যের বিভিন্ন জায়গা পাকিস্তানপন্থীদের জায়গায় পরিণত হয়েছে। তাঁর দাবি, দেশ বিরোধী কার্যকলাপের এপিক সেন্টার বা কেন্দ্র ভূমি হিসেবে পরিণত হয়েছে ওই সব জায়গা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *