সৌভিক বন্দ্যোপাধ্যায়, কলকাতা, ১৮ মার্চ: প্রত্যেক বছরই গরমে চূড়ান্ত রক্তসংকটের সম্ভাবনা তৈরি হয়। তার জন্য আগেভাগেই বিভিন্ন রক্তদান শিবির থেকে রক্তদান কর্মসূচি আয়োজন করেন বিভিন্ন এলাকার বিভিন্ন স্থানীয় ক্লাব সদস্যরা। কিন্তু এ বছর করোনা সংক্রমণের ভয়ে কোনওরকম ঝুঁকি নিতে নারাজ কলকাতা পুলিশ। সেই আশঙ্কাতেই বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে সপ্তাহে সপ্তাহে রক্তদান কর্মসূচি এবং সমস্ত রক্তদান শিবিরও। ফলে গরমে রক্ত সংকটের সম্ভাবনা থাকলেও বিষয়টি নিয়ে চূড়ান্ত জটিলতা দেখা দিয়েছে।
কিন্তু গরমে কেন বাড়ে রক্তসংকটের সম্ভাবনা?
প্রথমত, শীতকালের তুলনায় গরমে অসুস্থতা বেশি হয়। অনেক অসুস্থতাতেও শরীরে রক্তাল্পতা তৈরি হয়। সেই কারণে রক্তের চাহিদা বেড়ে যায়। দ্বিতীয়ত রক্ত সংরক্ষিত থাকলেও তার নির্দিষ্ট সময়সীমা থাকে। ফলে নতুন করে রক্ত জোগানের প্রয়োজনীয়তা হয়ে পড়ে। আর প্রচণ্ড গরমে রক্তদান শিবির আয়োজন করাও অসম্ভব হয়ে পড়ে। তাই শীত থেকে গরমের মধ্যেও রক্তদান শিবির আয়োজন করে নেওয়া হয়। এছাড়াও যে কোনও দুর্ঘটনা হোক বা অস্ত্রোপচার পরবর্তী সময়ে প্রচুর পরিমাণ রক্ত সবসময়েই দরকার পড়ে।
কিন্তু একই সঙ্গে রক্তের মাধ্যমেই সংক্রমণের আশঙ্কাও সবচেয়ে বেশি থাকে। আর বুধবার কলকাতায় প্রথম করোনা পজিটিভ যুবককে বেলেঘাটা আইডিতে চিহ্নিত করার পর কলকাতায় করোনা সংক্রমণের সম্ভাবনা আরও বেশি ছড়িয়েছে। এটাও জানা গিয়েছে ওই যুবক লন্ডন থেকে ফিরে আবাসনের বাসিন্দা থেকে বন্ধুবান্ধবের সঙ্গে আড্ডা দিয়েছেন। শপিং মল, গড়িয়াহাট, পার্কস্ট্রিটের ক্লাব, নবান্ন, রাইটার্স সহ বিভিন্ন জায়গায় গিয়েছেন এবং একাধিক মানুষের সংস্পর্শে এসেছেন। তাই তার মাধ্যমে কার কার মধ্যে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ছড়িয়ে গিয়েছে, তা বোঝা সম্ভব নয়। সেই কারণে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে অনির্দিষ্টকালের জন্য রক্তদান শিবির বন্ধ রাখার নির্দেশ জারি করল কলকাতা পুলিশ। এর ফলে গরমের সময় রক্ত সংকট হলেও সাম্প্রতিক পরিস্থিতি বিচারে এই নির্দেশ বদল সম্ভব নয় বলে লালবাজার সূত্রের খবর।