আমাদের ভারত, আলিপুরদুয়ার, ৫ ডিসেম্বর: জেলাসদরের গুরুত্বপূর্ণ বক্সা ফিডার রোডের দুইধারের ফুটপাতে বিভিন্ন পসরা সাজিয়ে ব্যবসা চলছিল। স্বাভাবিকভাবেই ফুটপাত দিয়ে সাধারণ মানুষের চলাফেরা প্রায় বন্ধই হয়ে গেছে। গত কয়েকদিন ধরে আলিপুরদুয়ার পুরসভার পক্ষে ফুটপাত ফাঁকা করবার আবেদন জানিয়ে
শহরজুড়েই চলছিল মাইকে প্রচার। কিন্তু তাতেও কাজ হয়নি। অবশেষে শনিবার মাত্র ঘন্টাদুয়েক ধরে জেলা পুলিশ প্রশাসন ও মহকুমা শাসক শ্রী রাজেশ অভিযান চলিয়ে ফুটপাত দখল মুক্ত হল। দুপুর ১২টা নাগাদ মহকুমা শাসক শ্রী রাজেশ, মহকুমা পুলিশ আধিকারিক কুতুবউদ্দিন খানের নেতৃত্বে জেলাসদরের কলেজ হল্ট এলাকা থেকে অভিযান শুরু হয়। শেষ হয় বাটা মোড়ে। তবে অভিযানের প্রথমদিন ফুটপাতের উপর বিভিন্ন ধরনের দোকান খুলে বসে পড়া ব্যবসায়ীদের প্রথমবার সতর্ক করে ছেড়ে দেওয়া হয়। পরবর্তীতে তারা আবার পসরা সাজিয়ে বসলে ফাইন সহ কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান মহকুমা শাসক। তবে বিকল্প পুনর্বাসনের ব্যবস্থা না করে প্রশাসনের এই ফুটপাথ জবরদখল মুক্ত অভিযানকে কেন্দ্র করে অস্থায়ী দোকানদারদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ছড়িয়েছে।
জেলাসদরের গুরুত্বপূর্ণ বক্সা ফরেস্ট রোডের দুধারেই প্রচুর অর্থ ব্যয়ে ফুটপাত সৌন্দর্যায়নের কাজ চলছে।শুধু অস্থায়ী দোকানই নয় যারা স্থায়ী ব্যবসায়ী তারাও দোকানের মালপত্র ফুটপাতে নামিয়ে এনেছেন। এদিন কার্যত সব ব্যবসায়ীদেরই একদফা সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে। উল্লেখ্য, জেলা সদরের গুরুত্বপূর্ণ বক্সা ফরেস্ট রোডে প্রায় প্রতিদিন ছোট বড় দুর্ঘটনা ঘটছে।অভিযোগ, শহরের এইসব গুরুত্বপূর্ণ রাস্তায় অস্থায়ী ও স্থায়ী দোকানদাররা ফুটপাথ দখল করে থাকায় সাধারণ পথচারীদের বাধ্য হয়েই রাস্তা দিয়েই হেঁটে যেতে হয়।সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়ছেন বয়স্করা। এদিকে, প্রশাসন অভিযান শুরু করতেই এদিন আগে ভাগেই ফুটপাত দখল করে বসে থাকা ব্যবসায়ীদের অনেকেই আগাম জায়গা ছেড়ে সরে যান।
শহরের একটি মহল সাফ জানিয়েছেন, সবকিছুই শহরের ব্যবসায়ী সমিতিগুলির চোখের সামনে হচ্ছে। তবে তারা ব্যবসায়ীদের সতর্ক করার কাজ করে না।
উল্লেখ্য, এদিন পর্যন্ত জেলা সদরের গুরুত্বপূর্ণ রাস্তার উপর কোনও যাত্রী প্রতিক্ষালয় না থাকায় মাঝে মাঝেই চরম ভোগান্তি হয় বক্সা ফরেস্ট রোড ধরে যাতায়াতকারীদের। পাশাপাশি লাগামহীন অটো টোটো চলছে। এই পরিস্থিতিতে ফুটপাত দখল হয়ে থাকায় শহরের বিভিন্ন স্থানে সমস্যা বাড়ছিল।
মহকুমা শাসক শ্রী রাজেশ বলেন, আজ কাউকেই আমরা জরিমানা করিনি। তবে একই কাজ আগামীতে করা হলে আইন মেনে কড়া পদক্ষেপ নেওয়া হবে। ফুটপাত দখলমুক্ত রাখতে আমাদের অভিযান চলবে।” অন্যদিকে অস্থায়ী অভিযান নিয়ে দোকানদারদের অভিযোগ, রাস্তার পাশে স্থায়ী দোকানদাররাও তো ফুটপাথ দখল করে ব্যবসা করছে।অথচ প্রশাসনের যত উচ্ছেদ অভিযান অস্থায়ী ব্যবসায়ীদের ক্ষেত্রে। করোনা আবহে এখন পরিবার নিয়ে আমরা কোথায় যাব। বিকল্প ব্যবস্থা না করে প্রশাসন উচ্ছেদ চালাতে পারে না।
তবে টাউন ব্যাবসায়ী সমিতির সম্পাদক প্রসেনজিৎ দে বলেন, “অস্থায়ী ব্যবসায়ীদের অভিযোগ ঠিক নয়। অস্থায়ী দোকানদাররা খোঁজ নিয়ে দেখতে পারেন এদিন প্রশাসন শহরের বিভিন্ন রাস্তায় ফুটপাত দখল করে যে সমস্ত স্থায়ী দোকানদার ব্যবসা করছে তাদের বিরুদ্ধেও অভিযান চালিয়েছে প্রশাসন। আমাদের সংগঠন প্রশাসনের এই অভিযানকে সমর্থন করছে।