Devatanu Bhattacharya, BJP, প্রার্থী বদল প্রভাব ফেলবে না! মানুষ পদ্মফুল- মোদীর উন্নয়ন দেখে ভোট দেবে, জয়ের বিষয়ে আত্মবিশ্বাসী বীরভূম কেন্দ্রের বিকল্প পদ্ম প্রার্থী দেবতনু ভট্টাচার্য

আমাদের ভারত, ২৬ এপ্রিল: বীরভূম কেন্দ্রের প্রাক্তন আইপিএস আধিকারিক দেবাশীষ ধরের প্রার্থী পদ খারিজ হবার আশঙ্কা থেকেই বিজেপি নেতা দেবতনু ভট্টাচার্যকে বিকল্প প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দাখিল করেছিল বিজেপি। এই বিকল্প প্রার্থী দেওয়া নিয়ে তরজা শুরু হয়েছিল রাজ্য রাজনীতিতে। কিন্তু আখেরে বিজেপি এই বিকল্প প্রার্থীর মনোনয়ন দাখিল দলের জন্য সঠিক সিদ্ধান্ত হিসেবে উঠে এলো। কারণ নো ডিউজ সার্টিফিকেট দিতে না পারায় বিজেপি প্রার্থী দেবাশীষ ধরের প্রার্থী পদ খারিজ হলেও লড়াইয়ের ময়দান থেকে বিজেপিকে সরানো গেলো না। পদ্মর বিকল্প প্রার্থীর দেবতনু ভট্টাচার্য দলের পুরোনো সৈনিক। শেষ বেলায় প্রার্থী বদল হলেও নিজের জয়ের ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী তিনি। তাঁর দাবি, মানুষ প্রার্থী নয়, মানুষ পদ্ম ফুল তথা বিজেপিকে ভোট দেবে।

বীরভূম কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী শতাব্দী রায় দাবি করেছেন, দেবাশীষ ধর থাকুক বা না থাকুক তিনি জিতবেন। কারণ বিজেপি ওই এলাকায় মানুষের কাছে যেতে পারেনি। আর মাত্র ১৫ দিন বাকি আছে তার মধ্যে বিজেপির বিকল্প প্রার্থীর মানুষের কাছে পৌঁছানো সম্ভব নয়। কিন্তু বিরোধী প্রার্থীর এই দাবিকে সম্পূর্ণ নস্যাৎ করে দিয়েছেন বীরভূমের বর্তমান বিজেপি প্রার্থী দেবতনু ভট্টাচার্য। তাঁর দাবি, বিজেপি একটি সংগঠন ভিত্তিক দল। যারা প্রতিনিয়ত বুথে গিয়ে মানুষের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করছ। ফলে মানুষ বিজেপির চিহ্নে ভোট দেয় দলকে ভোট দেয়। তাঁর কথায়, “আমরা অনেক আগে থেকেই মানুষের কাছে গিয়েছিলাম। আমরা বুথ ভিত্তিক সংগঠন করেছি। বুথে বুথে গিয়ে আমরা মিটিং করেছি সাধারণ মানুষের কাছে আমরা পৌঁছেছি। মানুষের দরজায় দরজায় প্রচার করেছি। বিজেপি একটা সংগঠন ভিত্তিক দল। সেই জন্য বিজেপির ভোট চিহ্ন, আমাদের নেতা নরেন্দ্র মোদীর ইমেজ এবং তাঁর গত ১০ বছরের মানুষের জন্য করা বিভিন্ন জনমুখী প্রকল্পের যে সুবিধা সাধারণ মানুষ পেয়েছে তার উপরে এবার ভোট হবে।”

দেবতনু ভট্টাচার্যের দাবি, “প্রার্থী এখানে কে থাকলো সেটা খুব একটা প্রাসঙ্গিক নয়। প্রার্থী বদল এখানে কোনভাবেই কোনরকম প্রভাব ফেলবে না। সাধারণ মানুষ পদ্ম ফুলের দিকে তাকিয়ে এবং মোদিজীর উন্নয়নমুখী প্রকল্পগুলি দেখেছে। একই সঙ্গে বীরভূম এবং তার সাথে গোটা পশ্চিমবঙ্গে যে অপশাসন চলছে, সেই অপসারণের বিরুদ্ধে পশ্চিমবঙ্গের ভোটাররা তাঁকে ভোট দেবে। সেখানে বিজেপির প্রতিনিধি হিসেবে আমাকে সামনে রাখা হয়েছে। আমার যা করণীয় সেই কাজ আমি করব।”

দেবতনু ভট্টাচার্যের দলে আলাদা বড় দায়িত্ব ছিল। তিনি বীরভূমের চারটি কেন্দ্রের ক্লাস্টার ইনচার্জ। কিন্তু এখন তিনি তার মধ্যেই একটি কেন্দ্রের প্রার্থী। এবার সেই দায়িত্ব কী হবে? এই প্রশ্নের উত্তরে দেবতনু ভট্টাচার্যের জবাব, দল যা সিদ্ধান্ত নেবে, সেটাই তিনি মেনে এসেছেন। বার বার নিজেকে দলের অনুগত সৈনিক হিসেবেই তুলে ধরেন তিনি। তাঁর কথায়, “দল যা সিদ্ধান্ত নেবে তা আমি মেনে নেব। এখানে দলই শেষ কথা। দল যা বলবে দলের সৈনিক হিসেবে আমি তাই করবো। দল আমাকে যা দায়িত্ব দেবে আমি সেই কাজ করব।”

৯০- এর দশক থেকে তিনি গেরুয়া শিবিরের সৈনিক হিসেবে এই বীরভূমের প্রান্তিক অঞ্চলে সংগঠনের কাজ করেছেন। সেই পরিশ্রম কি আজ তাকে বাড়তি সুবিধা দেবে? তিনি বলেন, অবশ্যই, এটা আমাকে বাড়তি সুবিধা দেবে। পায়ে হেঁটে, সাইকেলে চেপে, বাসে করে গ্রামে গ্রামে ঘুরেছি। বহু পুনো লোকের সঙ্গে আমার পরিচয় আছে, আবার তাদের সঙ্গে যোগাযোগ হবে। এটা বাড়তি সুবিধা আমার জন্য।

দেবাশীষ ধরের প্রার্থী পদ খারিজের পেছনে অবশ্যই রাজনৈতিক অভিসন্ধি রয়েছে বলে মনে করেন দেবতনুবাবু। তাঁর কথায়, দেবাশীষ ধর একজন ভালো প্রার্থী, উনি হেভি ওয়েট প্রার্থী। উনি লড়াইয়ে নেমেছিলেন। তৃণমূল কংগ্রেস সেটাকে থ্রেট মনে করেছে। সেই কারণেই তাকে আটকাতে তারা সর্বশক্তি লাগিয়েছে। সাময়িকভাবে তারা সে কাজে সফল হয়েছে। তাঁর আরো দাবি, সারা রাজ্যজুড়ে তৃণমূল কংগ্রেস পরাজয়ের আশঙ্কায় ভুগছে। ওদের পায়ের তলার মাটি সরে গেছে। সেই জন্য ওরা গণতান্ত্রিক লড়াইয়ের পরিবর্তে রাজনৈতির মঞ্চে অন্যভাবে লড়াই করার চেষ্টা চালাচ্ছে। ওরা সাধারণ মানুষকে ভোট দিতে দেয় না। তাদের গণতান্ত্রিক অধিকার কেড়ে নেয়। কিন্তু মানুষ বিজেপিকে মন থেকে গ্রহণ করেছে। আর প্রার্থী সেখানে পরবর্তীতে যোগ হয়েছে। ফলে দলে কে প্রার্থী হচ্ছে তার পরিবর্তে মানুষ প্রাধান্য দিচ্ছে দলের চিহ্ণ পদ্মফুল বা বিজেপি, কিংবা নরেন্দ্র মোদিজীর উন্নয়নকে। ফলে প্রার্থী বদল নিয়ে কোনরকম বিভ্রান্তি হবে না বলেই দাবি বীরভূম কেন্দ্রের নতুন বিজেপি প্রার্থী দেবতনু ভট্টাচার্যের।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *