প্রশাসকের স্বেচ্ছাচারিতা ও অনৈতিক কাজের অভিযোগে পৌরসভা ঘেরাও ঝালদার নাগরিকদের

সাথী দাস, পুরুলিয়া, ১৫ ডিসেম্বর: প্রশাসকের স্বেচ্ছাচারিতা ও অনৈতিক কাজের অভিযোগ জানিয়ে পৌরসভা ঘেরাও করল  ঝালদার নাগরিক। আজ ঝালদা পুর এলাকার বাসিন্দা ও বঞ্চিত অস্থায়ী কর্মীদের নিয়ে এই কর্মসূচিতে নাগরিকদের পক্ষে নেতৃত্ব দেন প্রাক্তন পৌর প্রধান প্রদীপ কর্মকার। তাঁরা বিভিন্ন দাবি পূরণ করার জন্য ঝালদা প্রশাসনিক মন্ডলীর
সদস্যদের হাতে স্মারকলিপি তুলে দেন। 

নাগরিকের পক্ষে প্রদীপ কর্মকার বর্তমান পৌর প্রশাসক সুরেশ আগরওয়ালের বিরুদ্ধে সরাসরি স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ করেন। তিনি বলেন, “নিজের পছন্দের কর্মচারীকে রেখে অধিকাংশ কর্মচারীকে বিনা কারণে ছাঁটাই করেছেন। যেদিন থেকে তিনি পৌর প্রশাসক হিসেবে পৌরসভায় বসেছেন সেদিন থেকে নিজের কাজে ব্যবহার করছে প্রশাসনকে। পাইপলাইনের জল নিজের বাড়ি ঢুকিয়েছেন, অথচ সাধারণ মানুষ পানীয় জল পাচ্ছেন না। হাউস ফর অল- এ ডিপিআর-এ নাম না থাকা লোকেদের অ্যাকাউন্টে ছাড়া হচ্ছে টাকা। অথচ, দীর্ঘদিন ধরে অর্ধনির্মিত অবস্থায় পড়ে থাকা বাড়ির ব্যক্তিদের টাকা দিচ্ছেন না এই প্রশাসক।” এছাড়া প্রশাসকের বিরুদ্ধে অভিযোগ, “২০১৫ সালের কাজের বিল করিয়ে নিয়েছেন। বর্তমানে অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া দিচ্ছে না। টাকা নেই তাহবিলে। পেনশন ভোগীরা পাচ্ছেন না টাকা। শ্রমিকরা কাজ করেও তাদের বেতন বন্ধ। যাঁরা কোভিড  মোকাবিলার সময় দীর্ঘদিন কাজ করেছে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সেই সব শ্রমিকের নাম ছাঁটাইয়ের তালিকায়। এমন অন্যায় মেনে নেওয়া যায় না। অবিলম্বে ছাঁটাই করা শ্রমিকদের পুনরায় কাজে নিযুক্ত না করলে ঝালদার নাগরিক মঞ্চ ডাক দেবে বৃহত্তর আন্দোলনের।”

কাজ হারা কাকলি দত্ত ও বাবলি দাস জানান, “আমরা করোনা মহামারিতে কঠিন পরিস্থিতিতে কাজ করে আসছি জানুয়ারি মাস থেকে ডেঙ্গু থেকে করোনা সবকিছুই এতদিন কাজ করেছি। কিন্তু নতুন প্রশাসক বসেই আমাদের বেতন বন্ধ করে দিয়েছেন। আমরা চাই আমাদের বেতনের সাথে সাথে কাজের নিশ্চয়তা।”

এদিন পৌর প্রশাসক উপস্থিত না থাকায় সহকারি প্রশাসক মহেন্দ্র কুমার রুংটা ও কাঞ্চন পাঠক স্মারকলিপি গ্রহণ করেন। কাঞ্চন পাঠক ও মহেন্দ্র বাবু বলেন, “আজও পর্যন্ত প্রশাসনিক বৈঠক পৌরসভাতে না হওয়ায় আমরাও বুঝতে পারছি না কোন কাজ কখন কোথায় হচ্ছে। আজকের দাবিপত্র পেয়েছি। মহকুমা শাসককে বলেছি অবিলম্বে প্রশাসনিক বৈঠক করার ব্যবস্থা করতে।”

প্রশাসনিক বোর্ডের চেয়ারম্যান সুরেশ আগরওয়াল বলেন, “১১ নভেম্বর দায়িত্ব পেয়েছি। এর মধ্যে আমাদের একাধিক বৈঠক হয়েছে। এছাড়া এর আগের বোর্ড সরকারি টাকার অপচয় করেছে। কিছু মানুষকে ললিপপ তুলে চমক দেখিয়েছিল। এটা অন্যায় করেছে ওরা। এখন ঝালদা পুর এলাকায় উন্নয়নে সবাইকে সাথ দেওয়া উচিৎ। একই দলে থেকে ভাবমূর্তি খারাপ করা উচিৎ নয়।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *