আমাদের ভারত, ব্যারাকপুর, ১১ ডিসেম্বর: বিজেপি নেতা মণীশ শুক্লা হত্যাকাণ্ডে অবশেষে সি আই ডির হাতে ধরা পড়ল মূল অভিযুক্ত নাসির আলি। বৃহস্পতিবার রাতে তাকে সি আই ডি তদন্তকারী দল গ্রেপ্তার করার পর শুক্রবার দুপুরে ব্যারাকপুর মহকুমা আদালতে পেশ করে। আদালত ধৃতকে ১৪ দিনের সিআইডি হেফাজতের নির্দেশ দেয়।
কুখ্যাত দুষ্কৃতী নাসির আলি বিজেপি নেতা ও আইনজীবী মণীশ শুক্লা হত্যাকাণ্ডে মূল অভিযুক্ত ছিল। দীর্ঘদিন সে পলাতক ছিল। তাকে হন্যে হয়ে খুঁজছিল সিআইডি তদন্তকারী দল। জানা গিয়েছিল সে বাংলাদেশে গা ঢাকা দিয়েছে। শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশ থেকে ফিরেই নাসির আলি ধরা পড়ে গেল সি আই ডির হাতে।
মণীশ শুক্লার খুনের ঘটনার পর সে দীর্ঘদিন বাংলাদেশে পালিয়ে ছিল। সম্প্রতি সে আবার দেশে ফিরে আসে। তার গতিবিধি নজরে রাখছিল সিআইডি তদন্তকারী দলের অফিসাররা। এদেশে আসার পর সি আই ডি তদন্তকারী দলের অফিসাররা গোপন সূত্রে জানতে পারে সে বৃহস্পতিবার রাতে ব্যারাকপুর কল্যাণী এক্সপ্রেসওয়ে সংলগ্ন এলাকায় ঘাঁটি গেড়েছে। বৃহস্পতিবার গভীর রাতে সেখানে হানা দিয়ে গ্রেপ্তার করে মণীশ শুক্লা হত্যা কান্ডের অন্যতম মূল অভিযুক্ত নাসির আলিকে।
গত ৪ নভেম্বর রাতে টিটাগড় থানার সামনে প্রকাশ্যে গুলি করে খুন করা হয়েছিল টিটাগডের জনপ্রিয় বিজেপি নেতা ব্যারাকপুরের সাংসদ অর্জুন সিং ঘনিষ্ঠ মণীশ শুক্লাকে। সেই ঘটনা রাজ্য রাজনীতিতে হৈচৈ ফেলে দিয়েছিল। বিজেপি মণীশ শুক্লা হত্যার ঘটনায় সিবিআই তদন্তের দাবিতে অনড় রয়েছে। তবে মণীশ শুক্লা হত্যার পরের দিনই রাজ্য সরকার এই খুনের ঘটনা সিআইডির হাতে তদন্তভার দেয়। সিআইডি ঘটনার তদন্তে নেমে এখনো পর্যন্ত মণীশ শুক্লা খুনের ঘটনায় মোট ১০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে।
নাসির আলিকে শুক্রবার সিআইডি টিম ব্যারাকপুর মহকুমা আদালতে পেশ করে। কড়া নিরাপত্তার মধ্যে দিয়ে তাকে নিয়ে আসা হয় ব্যারাকপুর মহকুমা আদালতে। নাসিরের বিরুদ্ধে ৩০২, ১২০ বি, ৩৪, ২৫/২৭ অস্ত্র আইনে মামলা রুজু করা হয়েছে। সি আই ডির তদন্তকারী অফিসাররা এদিন অভিযুক্তকে নিয়ে তদন্ত প্রক্রিয়া এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য ১৪ দিনের পুলিশি হেফাজতের আবেদন জানায় বিচারকের কাছে। মামলার গুরুত্ব বুঝে ব্যারাকপুর আদালত সিআইডির সেই আবেদন মঞ্জুর করে। এই মামলার সরকারি আইনজীবী সুদীপ সরকার বলেন, “নাসির আলীকে অনেকদিন ধরেই সিআইডি খুঁজছিল। মণীশ শুক্লা খুনের পর মাঝখানে সে বাংলাদেশে পালিয়ে গা ঢাকা দিয়েছিল। কিন্তু সম্প্রতি সে আবার দেশে ফিরে আসে। তারপরই বৃহস্পতিবার রাতে তাকে ব্যারাকপুর কল্যাণী এক্সপ্রেসওয়ে সংলগ্ন এলাকা থেকে সিআইডি দল গ্রেপ্তার করেছে। আজ তাকে ব্যারাকপুর মহকুমা আদালতে পেশ করা হলে আদালত অভিযুক্ত নাসির আলিকে ১৪ দিনের সিআইডি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছে। এই ঘটনায় আরো কেউ জড়িত আছে কি না, তা ধৃতকে নিজেদের হেফাজতে নিয়ে জেরা করে জানার চেষ্টা করবে সিআইডি তদন্তকারী দল। এখনো পর্যন্ত মণীশ শুক্লা হত্যায় মোট ১০ জন গ্রেপ্তার হয়েছে।”