মমতার পরিবর্তে বাংলা এই ১০ বছরের নির্মমতার শিকার: মোদী

আমাদের ভারত, ৭ ফেব্রুয়ারি: ২১- নির্বাচনে বিজেপির প্রচারের একেবারে নির্দিষ্ট করে সুর তাল ছন্দ আজ হলদিয়ার সভা থেকে বেঁধে দিয়ে গেলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। অতীতে বাংলার গুরুত্ব ও ঐতিহ্য স্মরণ করিয়ে বর্তমানে সেই বাংলার করুণ দশা নিয়ে সরব হলেন মোদী। হলদিয়ার জনসভা থেকে তিনি সরাসরি নিশানা দাগলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্দ্যেশ্যে। মোদী বলেন, বাম শাসনের পর বাংলার মানুষ মমতার মধ্যে দীর্ঘদিন আশায় বুক বাঁধছিল। কিন্তু সেখানে মমতার বদল রাজ্যবাসী ১০ বছরে নির্মমতার শিকার। তৃনমূলের শাসন আসলে বামেদের পুনরুজ্জীবন তাও আবার সুদ সমেত।

অতীতের বাংলার গৌরব ঐতিহ্য কেন কিভাবে হারিয়ে গেল? সেই প্রশ্নই আজ তুলেছেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, “আজ যখন পশ্চিমবঙ্গে এসেছি একটা প্রশ্ন করতে চাই, পরাধীন ভারতে পশ্চিমবঙ্গ দেশের উন্নত রাজ্যগুলির মধ্যে অন্যতম ছিল। দেশের বাকি সব অংশের তুলনায় পরিকাঠামোগত ভাবে অনেক এগিয়ে ছিল বাংলা। এখানে অনেক বেশি কর্মসংস্থানের সুযোগ ছিল। এখানে পাট শিল্প ও সামুদ্রিক বাণিজ্যের পীঠস্থান ছিল। গোটা দেশে বাংলার সমস্তরীয় কেউ ছিল না। শিক্ষায় শীর্ষে ছিল বাংলা। সেই সময়কার জন্য আজও বাইরে গেলে বাংলার মানুষ সম্মান পান। বাংলা ছিল পথপ্রদর্শক। দেশকে দিশা দেখিয়েছে বাংলা। কেন সেই গতি ধরে রাখতে পারল না বাংলা? সেই গতি থাকলে আজ বাংলা কোথায় পৌঁছে যেত? অন্য রাজ্যগুলিতে ব্যবসা-বাণিজ্য জমে উঠলো আর বাংলা পিছিয়ে পড়ল।”


মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিশানা করে মোদী বলেন, “আপনারা ভাবুন গত ১০ বছর এখানে কত কলকারখানার শিলান্যাস বা উদ্বোধন করেছেন। স্টিল প্ল্যান্টের কি হল? অরাজকতার জন্য কিছু করা গেল না। স্বাধীনতার পর উন্নয়নের রাজনীতি হয়নি এখানে। কংগ্রেসের শাসনের হয়েছে শুধুই দুর্নীতি। এরপর দীর্ঘ বাম জমানায় ছিল দুর্নীতির সঙ্গে অত্যাচার। উন্নয়ন আটকে ছিল। ২০১১ সালে গোটা দেশের নজর ছিল বাংলার দিকে। বামপন্থীদের হিংসা ও দুর্নীতির শেষ হাওয়ার উপক্রম হয়েছিল। কারণ মমতা দিদি পরিবর্তনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। তাতে ভরসা করেছিল মানুষ। বাংলার মানুষ আশায় বুক বাঁধছিল। কিন্তু তার বদলে ১০ বছরে তারা পেল নির্মমতা। মমতার অপেক্ষায় নির্মমতার শিকার হল বাংলা। বাংলা আসলে যা পেল তা পরিবর্তন নয় বামপন্থীদের পুনর্জীবন। তাও একেবারে সুদ সমেত। বামপন্থীদের পুনরুজ্জীবনের অর্থ অপরাধ-দুর্নীতি হিংসা ও গণতন্ত্রের উপর হামলার পুনরুজ্জীবন।”

মোদী আরো বলেন, “বাংলায় আপনি দিদির কাছে অধিকারের কথা বললে তার মেজাজ বিগড়ে যায়। এমনকি ভারতমাতার জয় বললেও তিনি ক্ষুব্ধ হন। কিন্তু দেশের কেউ যখন বিরুদ্ধাচরণ করেন তখন দিদি রেগে যান না।” প্রধানমন্ত্রী বলেন, খবরে দেখছেন ভারতকে বদনাম করতে আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। অথচ এই বিষয়ে একটি শব্দ বলেননি দিদি।

মোদী আশ্বস্ত করেন, এবার রাজ্যে আসল পরিবর্তন হতে চলেছে। তাঁর কথায় বিজেপি সরকারের হাত ধরেই দুর্নীতি ও তোলাবাজ মুক্ত শাসন ব্যবস্থার পরিবর্তন হবে। ত্রিপুরার মানুষ এই পরিবর্তনের স্বাদ পেয়েছে ‌ওখানে বেশ কয়েক বছর ধরে দুর্নীতি হয়েছে। ত্রিপুরার মানুষ আমাদের উপর ভরসা করেছেন। সবাই ওখানে নতুন ছিল। কিন্তু পরিশ্রমে কোনো ঘাটতি নেই। আর উদ্দেশ্য যদি সৎ হয় তাহলে দারুন কাজ হবেই যা ত্রিপুরায় হচ্ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *