আমাদের ভারত, ব্যারাকপুর, ১৩ ডিসেম্বর: ব্যারাকপুরের উন্নয়ন তথা ব্যারাকপুর বি এন বসু হাসপাতালের উন্নয়নে যারা বাধার সৃষ্টি করছে সেই সমস্ত ঠিকাদার সংস্থাকে ব্ল্যাক লিস্টেড করার হুঁশিয়ারি দিলেন ব্যারাকপুরের বিধায়ক রাজ চক্রবর্তী। ব্যারাকপুর মহকুমার বাসিন্দাদের চিকিৎসার জন্য অনেকাংশে নির্ভর করতে হয় ব্যারাকপুর বি এন বসু হাসপাতালের উপর। তাই উন্নত চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়ার লক্ষ্যে এই হাসপাতালকে ঢেলে সাজানোর পরিকল্পনা নেন বিধায়ক রাজ চক্রবর্তী। সেই মত বিধায়ক তহবিল থেকে এই হাসপাতালের ভবন সহ হাসপাতালের খোলনলচে বদলে রোগীদের উন্নত চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়ার জন্য প্রায় আড়াই কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়। কিন্তু সেই টাকা দেওয়া সত্বেও সেই অর্থে হাসপাতালের উন্নয়ন করা হচ্ছে না। আর সেই তথ্য বিধায়কের কাছে পৌঁছাতেই বৃহস্পতিবার বিকেলে ব্যারাকপুর মহকুমা হাসপাতালের সংস্কারের কাজ খতিয়ে দেখলেন বিধায়ক রাজ চক্রবর্তী। সেই সঙ্গে দীর্ঘক্ষণ বৈঠক করলেন জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সমুদ্র সেনগুপ্ত, ভারপ্রাপ্ত সুপার সঞ্জয় গুহ, কাউন্সিলর নৌসাদ আলম সহ অন্যান্য আধিকারিকদের সঙ্গে। এদিন বিধায়ক হাসপাতাল ঘুরে দেখেন। আর তাঁর ভাবনা অনুযায়ী উন্নয়নের কাজ না এগোনোয় ক্ষোভ প্রকাশ করলেন বিধায়ক।
প্রসঙ্গত, এই হাসপাতালে প্রচুর রোগী আসেন। বিশেষ করে আর্থিক দিক থেকে পিছিয়ে পড়া মানুষরা আসেন সু চিকিৎসার আশায়। তাই এই হাসপাতালকে উন্নত মানের করার জন্য সচেষ্ট হন বিধায়ক। সেই মত হাসপাতালের কাজের বরাত দেওয়ার জন্য টেন্ডার ডাকা হয়। কিন্তু অভিযোগ, যে ঠিকাদারি সংস্থা এই কাজের বরাত পেয়েছে তারা সময় মত কাজ শেষ করতে পারছেন না, অথচ বরাদ্দ অর্থ তাদের দিয়ে দেওয়া হয়েছে। আর টাকা নিয়ে সময় মত উন্নয়নের কাজ না হওয়ায় ব্যাপক ক্ষুব্ধ বিধায়ক। তিনি এদিন স্পষ্ট জানিয়ে দেন, ঠিকাদারি সংস্থার ঢিলেমির জন্য রাজ্য সরকার ও তিনি মানুষের কাছে খারাপ হয়ে যাচ্ছেন। সেই কারণে তিনি এই ঠিকাদারি সংস্থাকে ব্ল্যাক লিস্টেড করার হুঁশিয়ারি দেন। এদিন তিনি বলেন “এই হাসপাতালে প্রচুর অসহায় মানুষ চিকিৎসা করাতে আসেন। তাই এই হাসপাতালকে আরও উন্নত করার দরকার রয়েছে। কিন্তু উন্নয়নের যে কাজগুলো করার কথা সেগুলো গত দেড় বছরে তেমন ভাবে হয়নি। বিধায়ক তহবিলের অর্থ দেওয়া সত্বেও উন্নয়নের কাজ খুব ধীর গতিতে হচ্ছে। যেটুকু হয়েছে সেটা ভালো হয়েছে, কিন্তু আরো অনেক কাজ বাকি রয়েছে। এই কাজ সম্পন্ন না হলে আমি পরবর্তী কাজগুলোর জন্য অর্থ আনতে পারব না আর তার জেরে বি এন বসু হাসপাতালে উন্নয়ন থমকে যাচ্ছে। আজ এই বৈঠকে একথা স্পষ্ট জানানো হয়েছে এবং সময় সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছে, এবং যাতে উন্নয়নের জন্য শুরু হওয়া কাজ দ্রুত শেষ হয়ে যায়। তাহলে পরবর্তী কাজের জন্য আরো অর্থের ব্যবস্থা করা সম্ভব হবে। আগামী জুন- জুলাই মাস পর্যন্ত সময় চাওয়া হয়েছে তার মধ্যে কাজ না হলে ওই ঠিকাদারি সংস্থাকে ব্ল্যাক লিস্টেড করে দেওয়া হবে।”
অপর দিকে মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সমুদ্র সেনগুপ্ত বলেন, এখানে উন্নয়ন করতে গেলে যেই সমস্যা হচ্ছে, সেটা হলো জায়গা অপ্রতুল এই হাসপাতালে। সেই সঙ্গে অনেক প্রাচীন এই হাসপাতালের ভবন। তবে সকলে মিলে বি এন বসু হাসপাতালকে উন্নত করার চেষ্টা চালিয়ে যাওয়া হবে।