সৌভিক বন্দ্যোপাধ্যায়, কলকাতা, ১৯ অক্টোবর: সকলের একটা চিরাচরিত ধারণা যে, পুরুষ মানেই সে সর্বকালের সেরা। তাই তারা অত্যাচারী তো হতেই পারে না বা তারা কষ্ট পেতেই পারে না।
পুরুষতান্ত্রিক সমাজে প্রতিনিয়ত তো নারীদেরই অত্যাচারিত হতে দেখা যায়। কিন্তু কখনও কি পুরুষরাও অত্যাচারিত হতে পারেন বা হন, এমন কেউ ভেবেছেন? কিন্তু এই তথাকথিত ভ্রান্ত ধারণাকে মুছে ফেলে আধুনিক সমাজে পুরুষ ও নারী একে অপরের পরিপূরক এবং পুরুষরাও অত্যাচারিত হন, এমন বার্তা দিলেন এক অসামান্যা নারী। তিনি অল বেঙ্গল মেনস ফোরাম’-এর প্রেসিডেন্ট নন্দিনী ভট্টাচার্য। আন্তর্জাতিক পুরুষ দিবসের প্রাক্কালে অনুষ্ঠিত হল ‘অল বেঙ্গল মেনস ফোরাম’-এর অভিনব উদ্যোগ ‘পুরুষ তোমার জন্য’।
আমরা ৮ মার্চ আন্তর্জাতিক নারী দিবস নিয়ে মাতামাতি করি। কেউ বোধহয় জানি না যে, আন্তর্জাতিক পুরুষ দিবস বলেও একটি দিন ধার্য করা রয়েছে, সেটি হল ১৯ নভেম্বর। নারী তো দূরের কথা, অনেক পুরুষরাও সে কথা বোধ হয় জানেন না। তবে যে পুরুষ কোনও নারীর সন্তান, যে পুরুষ কোনও নারীর ভাই, যে পুরুষ কোনও নারীর স্বামী, যে পুরুষ কোনও নারীর বাবা, সেই পুরুষও সংসারের জোয়াল টানার জন্য প্রতিনিয়ত আত্মত্যাগ করে থাকেন, তা বোধ হয় আমরা কেউই ভেবে দেখি না।
আর সেই সব পুরুষদের জন্য আন্তর্জাতিক পুরুষ দিবসের প্রাক সন্ধ্যায় সোমবার গড়িয়াহাটের মোড়ে খোলা মঞ্চে ‘অল বেঙ্গল মেনস ফোরাম’ এক অভিনব অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। যেখানে বিভিন্ন প্রান্ত থেকে উঠে আসা পুরুষরা নিজেদের জীবনের লড়াইয়ের কথা বলেন। সকলে দাবি করেন, পুরুষরা নারীদের বা নারীরা পুরুষদের যে অত্যাচার করে, এর কোনওটিই ঠিক নয়। দু’জনেই পৃথিবীতে একে অপরের পরিপূরক। কারোরই কারোর জীবন বা কাজকে ছোট করা উচিত নয়। দু’জন একে অপরের পাশে না দাঁড়ালে সুন্দরভাবে চলবে না এই পৃথিবী।
এই অভিনব অনুষ্ঠান সম্পর্কে ‘অল বেঙ্গল মেনস ফোরাম’-এর প্রেসিডেন্ট নন্দিনী ভট্টাচার্য বলেন, ‘আমি নারী বিদ্বেষী নই। আমি নিজেও একজন নারী। তবে দিন দিন পুরুষদের সম্মান বিপন্ন হচ্ছে বলে আমি মনে করছি।” তাঁর দাবি, সব সময় সব অত্যাচারের শিকার শুধু নারী হন না। পুরুষরাও অনেক ত্যাগ করেন। তারাও ঘরে-বাইরে অনেক অত্যাচারের শিকার হন। তাই সেই সব পুরুষদের পাশে দাঁড়াতেই এই অনুষ্ঠানের আয়োজন।