পার্থ খাঁড়া, আমাদের ভারত, পশ্চিম মেদিনীপুর, ৪
মে: দোপদি মেঝেন, রূপ কওঁর, নাঙ্গেলি– পিতৃতন্ত্র আর বর্ণবাদী সমাজের বহুস্তরীয় নিপীড়নের শিকার এই তিন নারীর জীবনকে নিয়ে লেখা নাটক “দোপদী, রূপ, নাঙ্গেলি”। মেদিনীপুর কলেজের সাংস্কৃতিক প্রশিক্ষণশালায় এই নাটকের লেখক ও নির্দেশক রজত দাসের কাছে তালিম নিয়ে কলেজের ছাত্রছাত্রীরা নাটকটি মঞ্চস্থ করেছিল কলেজের মঞ্চে। দর্শকদের ভূয়সী প্রশংসাপ্রাপ্ত এই নাটক এবার পৌঁছে গেল রাজ্যস্তরে। পশ্চিমবঙ্গের বিখ্যাত নাট্যদল ‘নটধা’ আয়োজন করেছিল রাজ্যের কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলির মধ্যে এক প্রতিযোগিতা। সেই প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে রাজ্যের বিভিন্ন কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে তৃতীয় স্থান অধিকার করল মেদিনীপুর কলেজ।
গত ২৮ এপ্রিল হাওড়ার রামগোপাল মঞ্চে প্রতিযোগিতার মূল পর্বে অংশ নিয়েছিল রাজ্যের এগারোটি উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান। কলকাতার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়, রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়, প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়, ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ, স্কটিশ চার্চ কলেজ এবং উত্তরবঙ্গের গৌড়বঙ্গ বিশ্বাবিদ্যালয় সহ রাজ্যের নামী প্রতিষ্ঠানগুলির সঙ্গে লড়াই করে তৃতীয় স্থান অধিকার করায় আনন্দিত মেদিনীপুর কলেজের সবাই।
কলেজের সাংস্কৃতিক শাখার দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষক শ্যামলেন্দু ঘোষ বলেন যে, মিউজিক থেকে আলো, প্রোডাকশন থেকে এক্সপোজার সবেতেই কলকাতার কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়গুলি অনেক এগিয়ে। প্রতিবন্ধকতা সত্ত্বেও মেদিনীপুর কলেজের ছেলেমেয়েদের ফল বিশেষ কৃতিত্বের দাবি রাখে এমনটাই মনে করেন তিনি। গতকাল, ৩ মে কলকাতার রবীন্দ্র সদনে এক মনোজ্ঞ অনুষ্ঠানে বিজয়ী প্রতিষ্ঠানগুলির হাতে পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়। প্রশাসনিক চাপ সত্ত্বেও ছাত্রছাত্রীদের অনুরোধে তাদের সঙ্গে রবীন্দ্রসদনে উপস্থিত হয়ে পুরস্কার গ্রহণ করেন মেদিনীপুর কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যাপক সত্যরঞ্জন ঘোষ।
কলেজের ছেলেমেয়েদের এহেন সাফল্যে গর্বিত ঘোষ বলেন যে, পড়াশোনার পাশাপাশি খেলাধুলো আর সংস্কৃতি চর্চা সবেতেই গুরুত্ব দেওয়া মেদিনীপুর কলেজের ঐতিহ্য। আর এই ঐতিহ্যকে বাঁচিয়ে রাখার অঙ্গীকারও করেন তিনি। প্রতিযোগিতায় প্রথম হয় কলকাতার বিবেকানন্দ কলেজ, দ্বিতীয় যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়।