বিজেপিকেই দেশ ছাড়তে বললেন মমতা

সাথী প্রামানিক, পুরুলিয়া, ৩০ ডিসেম্বর: সিএএ ও এনআরসি ইস্যুতে বিজেপি বিরোধী জোট গড়তে ফের বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলিকে আহ্বান জানালেন তৃণমূল সভানেত্রী তথা পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ঝাড়খণ্ডে হেমন্ত সরেনের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে বিজেপি বিরোধী নেতা নেত্রী ও একাধিক মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতে ভরসা পেয়ে বিজেপির বিরুদ্ধে জোট গড়তে তৎপরতা দেখা গেল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। রবিবার রাঁচী থেকে সরাসরি পুরুলিয়ায় এসে প্রশাসনিক বৈঠকের পর সোমবার পদযাত্রার নেতৃত্ব দেন তিনি।

সিএএ ও এনআরসি-র বিরোধীতা করে মন্ত্রী, বিধ্যয়ক, নেতা নেত্রী ও কর্মী সমর্থকদের শপথ বাক্য পাঠ করান মমতা। পুরুলিয়া শহরের বাস স্ট্যান্ডের কাছে ভিক্টোরিয়া স্কুল মোড়ে পদযাত্রার সূচনা স্থলে প্রায় ১৫ মিনিট বক্তব্য রাখেন। সেখানে আগাগোড়া বিজেপি, কেন্দ্র সরকারের কঠোর ভাবে সমালোচনা করেন তিনি। আর সিএএ ও এনআরসি বলবত্‍ কোনও মতে রাজ্যে এমন কি দেশেও হতে দেবেন না বলে হুঁশিয়ারি দেন তৃণমূল নেত্রী। তিনি বলেন, ‘জোট বাঁধতে তৈরি হোন। বিজেপিকে একা করে দিন। যাঁরা অন্য মানুষকে তাড়াতে চায় তাদের জায়গা ভারত বর্ষের মাটিতে নেই। ইউপি, পঞ্জাব, রাজস্থান, 
গুজরাট বা বাঙালি হোক সবাই আমরা এক সঙ্গে থাকি, এক সঙ্গে বাঁচি। কাউকে তাড়িয়ে দেওয়ার অধিকার বিজেপির নেই। আমরা এক সাথে মরবো, এক সাথে বাঁচব। আর সাড়ে জাঁহা সে অচ্ছা হিন্দুস্থানকে আগে বাড়াবো।’
    

তিনি বলেন, নাগরিকত্ব সংশোধিত আইন ও এনআরসির প্রতিবাদে প্রতিটি রাজ্যে আন্দোলন হচ্ছে।আমাদের ছাত্র সংগঠনও পুরোপুরিভাবে এই আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত। আর তাদের উপরেও অত্যাচার চালানো হচ্ছে। ১৮ বছর হলে ভোট দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বানাতে পারে, আর তারা মতামত দিতে পারবে না, এটা কি? কী ধরনের লোকতন্ত্র? আমরা চাই ছাত্ররা এই আন্দোলনে আগে বাড়াবে। আর আমরা তাদের সব রকম সহযোগিতা করব। আমরা এক জনকেও ভারতের বাইরে যেতে দেব না। এটা আমাদের প্রতিজ্ঞা।

 

এদিন তৃণমূল নেত্রী দাবি করে বলেন, ভারত বর্ষের ৯৯ শতাংশ রাজ্য বিরোধীদের দখলে। শুধু মাত্র ইউ পি, কর্নাটক আর গুজরাট বাদে আর কোথাও বিজেপি নেই। আর কয়েকদিন পরে তাদের দূরবীন নিয়ে দেখতে হবে। ‘বিজেপি বলেছে জনরা তাদের সমর্থক তাঁদের নাগরিকত্ব দেবে। ১৩০ কত জনসংখ্যার মনধ্যে ১০০০ জনকে বিজেপি নাগরিকত্ব দেয় তাহলে বাকিগুলোই কি কলা খাবে না কি ললিপপ খাবে? স্বাধীনতার ৭২ বছর পর আজ আমাদের নাগরিকত্ব প্রমাণ দিতে! এর থেকে লজ্জা জনক ব্যাপার আর কী হতে পারে? ৭২ বছর ধরে সরকার চলল কত প্রধানমন্ত্রীর সময়কাল পেরোল। এরকম ঘটনা কোনও দিন হয় নি। আর বিজেপি এসে বলছে দেশ ভাগো। সবাই যদি চলে যায় তাহলে বিজেপি একলা থাকবে?
  

এদিন দুপুর সাড়ে বারোটার পর মিছিলের সূচনা হয়। রাস্তায় কাঁসর বাজিয়ে নেতা কর্মী সমর্থকদের উদ্বুদ্ধ করেন তৃণমূল নেত্রী মমতা। পুলিশি নিরাপত্তা বেষ্টনীর মধ্যেই চার কিলোমিটার জুড়ে চলে মিছিল। জেলার লোকসংস্কৃতির হাত ধরে পদযাত্রা বর্ণাঢ্য মিছিলে পরিণত হয়। 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *