আমাদের ভারত, ২২ মে:
২০১০ সাল থেকে পশ্চিমবঙ্গের জারি করা সমস্ত ওবিসি শংসাপত্র বাতিল করে হাইকোর্ট যে রায় দিয়েছে তা কার্যকর করবে ভারতীয় জনতা পার্টি। বুধবার সন্ধ্যায় সংবাদ সংস্থা এএনআই কে এ কথা জানিয়ে দিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। তিনি বলেন, পিছিয়ে থাকা সম্প্রদায়ের সংরক্ষণ ছিনতাই করে মুসলিমদের দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিজেপি আদালতের এই রায়কে স্বাগত জানায়।
অমিত শাহ বলেন, মামলাটি ১১৮টি মুসলিম জাতিকে পদ্ধতি অনুসরণ না করে পশ্চাৎপদতার কোনও সমীক্ষা ছাড়াই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ওবিসি সংরক্ষণের আওতায় এনেছেন। আদালত বিষয়টির গুরুত্ব বুঝেছে। তাই ২০১০ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত যত শংসাপত্র জারি করা হয়েছে তাতে স্থগিতাদেশ দিয়েছে আদালত। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভোট ব্যাংকের জন্য পিছিয়ে থাকা সম্প্রদায়ের সংরক্ষণের ডাকাতি করে সেই সংরক্ষণ মুসলমানদের দিয়েছেন। আমি হাইকোর্টের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাই।
এরপরে মুখ্যমন্ত্রীকে আক্রমণ শানিয়ে অমিত শাহ বলেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন আমরা হাইকোর্টের এই সিদ্ধান্তকে মানি না। আমি বাংলার জনতাকে প্রশ্ন করতে চাই, কোনো মুখ্যমন্ত্রী বা সাংবিধানিক পদে থাকা এমন কোনো ব্যক্তি হতে পারেন যিনি বলতে পারেন আমি আদালতের নির্দেশ মানি না? তিনি প্রশ্ন তোলেন, “কি ধরনের মানসিকতার মধ্যে দিয়ে বাংলার গণতন্ত্র এগিয়ে যাচ্ছে? আমি এর কঠোর নিন্দা করছি। হাইকোর্টের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাই আমরা এটা নিশ্চিত করব যে হাইকোর্টের নির্দেশ কার্যকর হোক আর পশ্চাৎপদ শ্রেণির যেসব মানুষের সত্যিই সংরক্ষণের প্রয়োজন তারা নিজেদের অধিকার পাক। তোষণ এবং ভোট ব্যাংকের রাজনীতির জন্য কাউকে সংরক্ষণের সুবিধা পেতে আমরা দেব না।”
আদালতে রায়কে হাতিয়ার করে ইন্ডিয়া জোটকেও আক্রমণ করতে ছাড়েনি অমিত শাহ। তিনি বলেন, গোটা ইন্ডি জোট, কংগ্রেস তেলেঙ্গানায় ও কর্নাটকে ওবিসি সংরক্ষণ ছিনতাই করেছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ওবিসি সংরক্ষণ ছিনতাই করেছেন। পিছিয়ে থাকা শ্রেণি তপশিলি জাতি উপজাতির সংরক্ষণ ছিনতাই করে এরা সংখ্যালঘুদের বিশেষ করে মুসলমানদের দিতে চায়। ভারতীয় জনতা পার্টি এর কঠোর বিরোধিতা করছে কারণ সংবিধান ধর্মের ভিত্তিতে সংরক্ষণের অনুমতি কাউকে দেয় না। অমিত শাহের স্পষ্ট দাবি, ষড়যন্ত্র চলেছে বাংলায় সেই জন্যই হাইকোট এই নির্দেশ দিয়েছে।
প্রসঙ্গত ওবিসি শংসাপত্র নিয়ে বুধবার বড় রায় দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। ২০১০ সালের পর থেকে সম্পূর্ণ ওবিসি তালিকা বাতিল বলে জানিয়ে দিয়েছে আদালত। হাইকোর্ট বলেছ, ওয়েস্ট বেঙ্গল ব্যাকওয়ার্ড ক্লাস কমিশন অ্যাক্ট ১৯৯৩ অনুযায়ী ওবিসিদের নতুন তালিকা তৈরি করতে হবে। তারপর সেই তালিকা বিধানসভায় পেশ করে চূড়ান্ত অনুমোদন নিতে হবে।
হাইকোর্টের রায়ে তীব্র আপত্তি জানিয়েছেন তৃণমূল সুপ্রিমো তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর স্পষ্ট কথা এই রায় তিনি মানেন না। এই রায়ের বিরুদ্ধে তিনি উচ্চতর আদালতের দ্বারস্থ হবেন।