আমাদের ভারত, ২৭ ফেব্রুয়ারি: আজকের তৃণমূলের বর্ধিত কর্মী সভাকে মুখ্যমন্ত্রীর নাটক বলে কটাক্ষ করেছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা রাজ্য বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। বৃহস্পতিবার নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে আয়োজিত তৃণমূল কংগ্রেসের বিশেষ বৈঠক নিয়ে প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে সুকান্ত মজুমদার বলেন, প্রতিবারে নির্বাচনের আগে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই ধরনের নাটক করেন। একইসঙ্গে তাঁর দাবি, রাজ্যের হিন্দুরা নিজের দাবিতে সরব হয়েছেন বলেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবার ভয় পেয়েছেন। ভয় পেয়ে তিনি হিন্দু সাজতে চাইছেন।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সম্প্রতি বলছেন, তিনি হিন্দু ব্রাহ্মণ পরিবারের মেয়ে। আজ তৃণমূলের সভাতেও এই প্রসঙ্গ উত্থাপন করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। আর এর প্রেক্ষিতেই সুকান্ত মজুমদার বলেন, বাংলাদেশে হিন্দুদের ওপর যে ধরনের অত্যাচার হয়েছে তা দেখে পশ্চিমবঙ্গের বাঙালি হিন্দুরা এখন এক হতে চাইছেন। রাজনৈতিকভাবে এক হয়ে নিজেদের মত প্রকাশ করার প্রবণতা বেড়েছে এখন। আর এই কারণেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভয় পাচ্ছেন। তাই তিনি এখন হিন্দু সাজার চেষ্টা করছেন।
বঙ্গ বিজেপির সেনাপতি বলেন, মুখ্যমন্ত্রীর মুখে গত ১২-১৩ বছর এই ধরনের কথা শোনা যায়নি, কিন্তু এখন তিনি বলছেন, আমি ব্রাহ্মণ ঘরের মেয়ে। এর আগে তিনি নিজেকে হিন্দু পর্যন্ত বলতেন না। তিনি বন্দ্যোপাধ্যায় পদবি না লিখে শুধু মমতা ব্যাবহার করতেন। মুখ্যমন্ত্রীর ভয়টা হল, বাংলার হিন্দুরা বুঝতে পেরেছেন। আগামী দিনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাতে থাকা মানে হচ্ছে তোষণকারীর হাতে থাকা। সিপিএম যা তৃণমূলও তাই, দুই’ই তোষণকারী। আর সঙ্গে কংগ্রেস তো এক নম্বরের তোষণকারী। এই তোষণকারীদের হাতে যদি বাংলার ক্ষমতা থাকে তাহলে বাঙালি হিন্দুর উদ্বাস্তু হওয়া ছাড়া আর কোনো উপায় থাকবে না।”
নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে তৃণমূল কংগ্রেসের মেগা বৈঠক ছিল বৃহস্পতিবার। সেখানে তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় সহ সমস্ত প্রথম সারির নেতা কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। এই সভাকে কটাক্ষ করে বিজেপির রাজ্য সভাপতি বলেছেন, প্রত্যেকবার নির্বাচনের আগে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই ধরনের নাটক করেন। ১১ বা ১২ হাজার কর্মীদের ডেকে এই ধরনের স্ট্র্যাটেজি বৈঠক করে তৃণমূল। ১৫ হাজার লোককে নিয়ে কোনো স্ট্র্যাটেজি তৈরি হতে পারে না। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভোটে স্ট্র্যাটেজি তৈরি হতে পারে না। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ডিএম ও এসপিদের সঙ্গে বৈঠকে ভোটের স্ট্র্যাটেজি তৈরি করে। কারণ তৃণমূলের কর্মীরা নন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হয়ে ভোট করান ডিএম ও এসপিরা।
অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় সম্পর্কে সুকান্ত মজুমদার বলেন, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় আসলে গাঁয়ে মানে না আপনি মোরল- এর মতো।
সবাই বুঝতে পারছেন যার নাম চার্জশিটে আছে, সেই ব্যক্তি আসলে কে, কালীঘাটের কাকু অর্থাৎ সুজয় কৃষ্ণ ভদ্র প্রকাশ্যে বলেছেন যে, তার বস হচ্ছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। যাকে ধরা যায় না ছোঁয়া যায় না।
একই সঙ্গে তৃণমূলের বিরুদ্ধে সুকান্ত মজুমদারের অভিযোগ, নিজেরা ছাপ্পা ভোট করে এখন সেই তৃণমূল অন্যের উপর দোষ দিচ্ছে, যে বিজেপি নাকি ফেক ভোটিং করায়। এটা কেউ বিশ্বাস করবে না। আসলে তিনি হারবেন, তাই তিনি ভয় পেয়েছেন। আগামী দিনে এই রাজ্য থেকে তৃণমূলকে হটানো না গেলে বাংলাদেশের হিন্দুদের যে অবস্থা হয়েছে বাংলার হিন্দুদেরও সেই একই অবস্থা হবে।