আশিস মণ্ডল, আমাদের ভারত, সিউড়ি, ১৯ মার্চ: “দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশ মানা হচ্ছে না বীরভূমে। ডাকা হচ্ছে না কোর কমিটির মিটিং। উল্টে বর্ধিত জেলা কমিটিকে গুরুত্ব দিয়ে মিটিং ডাকা হচ্ছে। তাই দুটি মিটিংয়ে আমি উপস্থিত হইনি। বিষয়টি রাজ্য নেতৃত্বকে জানাবো।”
বুধবার বীরভূম জেলা পরিষদে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে এমনই বিস্ফোরক মন্তব্য করেন সভাধিপতি ফায়েজুল হক ওরফে কাজল শেখ। রাখঢাক না করে বক্তব্যে তিনি জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের বিরুদ্ধে সরাসরি উষ্মা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, “দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সকলকে নিয়ে চলার বার্তা দিয়েছেন। একই বার্তা দিয়েছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একটি কোর কমিটি গঠন করে দিয়েছিলেন। সেই কমিটিকে নিয়ে মাসে অন্তত দুটি মিটিং ডাকার নির্দেশ দিয়েছিলেন। সেই সঙ্গে বোলপুর, সিউড়ি এবং রামপুরহাটে পর্যায়ক্রমে মিটিং ডাকার নির্দেশ দিয়েছিলেন। কিন্তু সেই নির্দেশ মানা হচ্ছে না। গত বছরের ডিসেম্বর মাসে শেষ মিটিং ডাকা হয়েছিল রামপুরহাটে। সিউড়ি মহকুমায় এখনও কোনো মিটিং ডাকা হয়নি। সিউড়িতে কেন মিটিং ডাকা হচ্ছে না সেটা বুঝতে পারছি না।”
কাজল শেখ আরও বলেন, “গত পঞ্চায়েত এবং লোকসভা নির্বাচন এই কোর কমিটির নেতৃত্বে পরিচালিত হয়েছিল। তাতে আমরা ভালো সাফল্য পেয়েছিলাম। কিন্তু যারা সেই সময় আমাদের সঙ্গে লড়াই করেছিল তাদের গুরুত্ব বা সম্মান কিছুই দেওয়া হচ্ছে না। সামনে বিধানসভা নির্বাচন। আমরা ১১টি আসনে জয়লাভ করব ঠিকই। তবুও কোর কমিটির মিটিং ডাকা উচিত বলে আমরা মনে করি।
প্রসঙ্গত, তৃণমূলের বীরভূম জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল জেল থেকে মুক্তি পাওয়ার পর কোর কমিটিতে তাকে অন্তর্ভুক্ত করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অনুব্রত ছাড়াও কোর কমিটিতে আগে থেকেই ছিলেন সভাধিপতি কাজল শেখ, সিউড়ির বিধায়ক বিকাশ রায় চৌধুরী, লাভপুরের বিধায়ক অভিজিৎ সিংহ ওরফে রানা, বোলপুরের বিধায়ক, কারামন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিনহা, ডেপুটি স্পিকার, রামপুরহাটের বিধায়ক আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়, সুদীপ্ত ঘোষ। অনুব্রত’র জেল মুক্তির পর গত বছরের নভেম্বর মাসে বোলপুরে এবং ডিসেম্বর মাসে রামপুরহাটে কোর কমিটির মিটিং ডাকা হয়। সিউড়িতে এখনও কোর কমিটির মিটিং ডাকা হয়নি বলে কাজল শেখ ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
এবিষয়ে লাভপুরের বিধায়ক অভিজিৎ সিংহ বলেন, “কাজল শেখের অভিযোগের প্রতিক্রিয়া দেবেন বিকাশ রায় চৌধুরী। এবিষয়ে আমি কিছু বলতে পারব না।”
প্রতিক্রিয়া নিতে কোর কমিটির আহ্বায়ক বিকাশ রায় চৌধুরীকে ফোন করা হয়েছিল। কিন্তু তিনি ফোন তোলেননি। খবর লেখা পর্যন্ত হোয়াটসঅ্যাপে পাঠানো বার্তার কোনো প্রতিক্রিয়া দেননি।”