আমাদের ভারত, ৬ মে: ভোট ব্যাঙ্ককে রাজনীতি করার জন্য রামলালার প্রাণ প্রতিষ্ঠান অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ পেয়েও যাননি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার দুর্গাপুরে ভোট প্রচারে এসে এমনটাই অভিযোগ করেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তথা বিজেপির প্রাক্তন সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ। তাঁর দাবি, ভোট ব্যাঙ্কের জন্য রামলালাকে বহিষ্কার করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
সোমবার অমিত শাহ নির্বাচনী জনসভা করেন দুর্গাপুরে। সেই সভা থেকে রাম মন্দির ইস্যুতে তোপ দাগেন তৃণমূল কংগ্রেসের দুই নেতার বিরুদ্ধে। অমিত শাহের অভিযোগ, রামলালার প্রাণ প্রতিষ্ঠা অনুষ্ঠানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল, কিন্তু তারা যাননি। কেন যাননি? কারণ তারা নিজেদের ভোট ব্যাঙ্ককে ভয় পান। তৃণমূল কংগ্রেসের ভোট ব্যাঙ্ক বলতে তিনি কাদের বোঝাতে চাইছেন? দুর্গাপুরের সভা মঞ্চ থেকে সেই ব্যাখাও দিয়েছেন অমিত শাহ। তাঁর দাবি, অনুপ্রবেশকারীরাই তৃণমূল কংগ্রেসের ভোটব্যাঙ্ক। এই ভোট ব্যাঙ্ককে ভয় পান মমতা ও অভিষেক। সেই কারণেই তারা ভোট ব্যাঙ্ক বাঁচাতে রামলালাকে বহিষ্কার করেছিলেন।
সোমবার জনসভার মঞ্চ থেকে জনতার উদ্দেশ্যে অমিত শাহের প্রশ্ন, যারা ভোট ব্যাঙ্কের জন্য রামকে বহিষ্কার করেন, তাদের কি ভোট দেওয়া উচিত?”
বর্ধমান- দুর্গাপুর লোকসভা কেন্দ্রের এবার বিজেপি প্রার্থী দিলীপ ঘোষ। ফলে ভাষণের শুরুতেই দিলীপ ঘোষের প্রশংসা শোনা যায় অমিত শাহের মুখে। তিনি জানান, বাংলায় যখন বিজেপির শক্তি বৃদ্ধি হয় তখন সভাপতি ছিলেন দিলীপ ঘোষ। তিনি বলেন, “আমাদের দলের বড় নেতা দিলীপ ঘোষ।” প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, দিলীপ ঘোষ যখন পশ্চিমবঙ্গ বিজেপির সভাপতি হন তখন বিজেপির বিধানসভায় কোনো প্রতিনিধি নেই। বাংলা থেকে সংসদও ছিল মাত্র দু’জন। সেখান থেকে ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির তিন বিধায়ক হন। সেই সংখ্যা ২০২১ সালে পৌঁছায় ৭৭ জনে। বিধানসভায় বিজেপি এখন প্রধান বিরোধী দল। অন্যদিকে ২০১৯ সালে লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি বাংলা থেকে ১৮টি আসনে জেতে। বিজেপির এই শক্তি বৃদ্ধির কৃতিত্ব এক রকম দিলীপ ঘোষকেই দেন অমিত শাহ।
অমিত শাহ বলেন, দিলীপ ঘোষকে দেওয়া প্রতিটি ভোট আসলে নরেন্দ্র মোদীকে তৃতীয়বার প্রধানমন্ত্রী করবে। আর তৃতীয় বার নরেন্দ্র মোদী প্রধানমন্ত্রী হলে দেশ বিশ্বের তৃতীয় অর্থনীতি হবে। দেশ থেকে সন্ত্রাসবাদ একেবারে মুছে যাবে।
কাশ্মীর প্রসঙ্গে অমিত শাহ বলেন, রাহুল গান্ধী বলেছিলেন যে কাশ্মীর থেকে ৩৭০ ধারা সরানো হলে রক্ত গঙ্গা বইবে। পাঁচ বছর হয়ে গিয়েছে, কাশ্মীরে তেমন কিছুই হয়নি।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আক্রমণ করতে গিয়ে অমিত শাহ বলেন, আপনাদের কাছে যে চাল আসে তা দিদি নয়, নরেন্দ্র মোদী পাঠিয়েছেন। শৌচালায়, ঘর, সিলিন্ডার, পানীয় জল সব মোদীর জন্যই হয়েছে।
তৃণমূলের দুর্নীতির বিরুদ্ধে সরব হয়ে তিনি প্রশ্ন তোলেন, গরিবের টাকা যারা লুটেছে তাদের কি জেলে যাওয়া উচিত নয়? নরেন্দ্র মোদী ২৩ বছর ধরে মুখ্যমন্ত্রী ও প্রধানমন্ত্রী। কিন্তু মোদীর বিরুদ্ধে কোন দুর্নীতির অভিযোগ নেই।