আমাদের ভারত, ১০ মার্চ: বাংলাদেশের ছায়া পশ্চিমবঙ্গেও। ইতিমধ্যেই তমলুক ও বসিরহাটে হিন্দু মন্দির ও প্রতিমা ভাঙ্গচুরের ঘটনা জানিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় সরব হয়েছিলেন সুকান্ত মজুমদার ও শুভেন্দু অধিকারী। তারপর আবার রাজ্যের অন্যতম মুসলিম অধ্যুষিত জেলা মুর্শিদাবাদে হিন্দুদের ওপর হামলার অভিযোগ উঠল। সোশ্যাল মিডিয়ায় একাধিক ভিডিও পোস্ট করে বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার, বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী, বিজেপি নেতা অমিত মালব্যরা দাবি করেছেন, গত কয়েকদিন ধরে মুর্শিদাবাদের নওদায় পাটিকাবাড়ি এলাকায় হিন্দুদের ধর্মস্থান ও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানে লাগাতার হামলা চলছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের দাবিও তোলা হয়েছে বিজেপি নেতৃত্বের তরফে।
বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার লিখেছেন, “পশ্চিমবঙ্গের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভেঙে পড়ছে, যা বাংলাদেশের বিশৃঙ্খলার প্রতিফলন। অশান্তির ভিডিয়ো-সহ তিনি লিখেছেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উগ্রপন্থী সমর্থকরা মুর্শিদাবাদের পাটিকাবাড়ি বাজারে হিন্দু মালিকানাধীন দোকানগুলিতে আগুন ধরিয়ে দেয়। গত ৪৮ ঘন্টায় একাধিক হিন্দু মন্দির অপবিত্র করা হয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রীকে কটাক্ষ করে সুকান্ত মজুমদার লিখেছেন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ব্যর্থ হলে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে তার কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের আবেদন জানাচ্ছি।
অন্যদিকে সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ভিডিও পোস্ট করে অমিত মালব্য লিখেছেন, বাংলাদেশের মতো পশ্চিমবঙ্গের আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি ধীরে ধীরে নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে। কয়েক ঘন্টা আগে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের চরমপন্থী সমর্থকরা মুর্শিদাবাদের নওদায় পাটিকাবাড়িতে হিন্দুদের দোকান ও সম্পত্তি ভাঙ্গচুর করে আগুন লাগিয়ে দিয়েছে। এটা কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। গত ৪৮ ঘন্টায় হিন্দু মন্দির ভাঙ্গচুরের বেশ কয়েকটি খবর এসেছে।
সুকান্ত মজুমদারের মতো তিনিও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে ব্যর্থ দাবি করে এই পরিস্থিতিতে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের দাবি জানিয়েছেন।
এদিকে নওদায় বিএসএফ মোতায়েনের দাবি করেছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তিনি লিখেছেন, “মুর্শিদাবাদ জেলার নওদা ব্লকের পাটিকাবাড়ি বাজারে হিন্দুদের মালিকানাধীন দোকান ও সম্পত্তিতে দুর্বৃত্তরা ভাঙ্গচুর করে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে। আমি পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ, রাজ্যের মুখ্যসচিব এবং ডিজিকে অনুরোধ করছি যেন তাঁরা মুর্শিদাবাদ জেলা প্রশাসনকে অবিলম্বে পর্যাপ্ত বাহিনী মোতায়েন করার নির্দেশ দেন, যাতে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা যায়।
একই সঙ্গে তিনি মুখ্যমন্ত্রীকে পরামর্শ দিয়েছেন, “আপনি যদি পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে না পারেন, তাহলে মাননীয় রাজ্যপালকে অনুরোধ করুন যেন বিএসএফ মোতায়েন করে, যাতে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি যত তাড়াতাড়ি সম্ভব পুনরুদ্ধার করা যায়, এবং স্বাভাবিক অবস্থা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা যায়।”
মুর্শিদাবাদের পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বিজেপির রাঢ়বঙ্গের সহ আহ্বায়ক দেবতনু ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, “মুর্শিদাবাদের পরিস্থিতি নিয়ে আমরা উদ্বিগ্ন, সেখানে পুলিশ প্রশাসন নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করছে। পশ্চিমবঙ্গ থেকে মমতা বন্দোপাধ্যায় সরকারকে উৎখাত করা না গেলে হিন্দু বাঙালির উদ্বাস্তু হওয়া সময়ের অপেক্ষা মাত্র।”