আমাদের ভারত, ৬ এপ্রিল: তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষকে নিয়ে শনিবার সামাজিক মাধ্যমে প্রবল কটাক্ষ করলেন নেটনাগরিকদের একাংশ। অপর এক সাংবাদিকের একটি পোস্টকে কেন্দ্র করে কুণালের প্রতি তীব্র বিদ্বেষ উগরে দিয়েছেন কয়েকজন। পাল্টা সরব হয়েছেন কুণাল নিজে।
সাংবাদিক সৌরভ গুহ শুক্রবার গভীর রাতে একটি পোস্টে লিখেছেন, “একটি বিতর্ক সভায় কুণাল ঘোষ বক্তব্য রাখার সময় একদল দর্শক মারমুখী হয়ে উঠলেন। বিরুদ্ধ মতের প্রতি সহিষ্ণুতা, শিক্ষার শিক্ষিতের প্রাথমিক লক্ষণ। এমন অগতান্ত্রিক মনোভাব নিয়ে কারা বিতর্ক সভায় যায়? অত্যন্ত নিন্দনীয়।”
শনিবার বেলা প্রায় সওয়া দুটো পর্যন্ত তার ২৫টি প্রতিক্রিয়া এসেছে। সৌরসেনী ভট্টাচার্য লিখেছেন, “এই আচরণের প্রতিবাদ করছি। তবে উনি নিজের কাজের মধ্যে দিয়েই নিজেকে এই জায়গায় নামিয়ে এনেছেন। মানুষের সহ্যসীমা ছাড়িয়ে গেছে।” শম্পা সেন লিখেছেন, “নিজের সম্মান নিজেই খুইয়েছেন কুণাল”।
প্রসেনজিৎ রায় লিখেছেন, “চোর কুণাল- এর সাথে যা হওয়ার সেটাই হয়েছে।” সুব্রত দাশগুপ্ত লিখেছেন, “উনি নিজে টক শো’তে বসে যা করেন সেটা খুব একটা ভদ্রজনোচিত বলে মনে হয়?” সুব্রতকে ‘একদম’ বলে সমর্থন করেছেন সবিতা দত্ত।
শুভ্রাংশু সরকার লিখেছেন, “এটা না নির্ভর করছে প্রতিপক্ষে কে আছেন তার ওপরে। মানুষেরও ধৈর্যের সীমা আছে।” শিবনারায়ণ বসু লিখেছেন, “ধান্দাবাজদের এই গতিই হয়।” অঞ্জন ভট্টাচার্য লিখেছেন, “কেন লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের প্রভাব কাজ করছে না?”
সৌরভ ঘোষ লিখেছেন, “দু চার ঘা দিলে তবে ভালো হতো।” তরিৎ ভৌমিক লিখেছেন, “অসভ্য কুনালের কথা ও ভাবভঙ্গি শুনে এবং দেখে আমারও রাগ হয়। সহিষ্ণুতা দেখিয়ে বেনিফিসারির পাশে থাকার অর্থটা কি?”
নিমাই বিশ্বাস লিখেছেন, “আপনার বক্তব্যের প্রতি শ্রদ্ধা রেখেই বলছি। এটাকে অশিক্ষিতের অসহিষ্ণুতা বলবেন, নাকি মানুষের স্বাভাবিক প্রতিক্রিয়া বলবেন এটা নিয়েই একটা বিতর্ক সভা হতে পারে। সিনেমা বা মঞ্চের খলনায়করা তাদের স্বার্থক অভিনয়ের স্বীকৃতি স্বরূপ হলের দর্শকাসন থেকে জুতো খেলে ধন্য ধন্য করবেন, আর সফল ভাবে নিজের যাবতীয় প্রতিভা দিয়ে দিনকে রাত, রাতকে দিন, সত্যকে মিথ্যা, আর মিথ্যাকে সত্য বলে চালানো রাজনৈতিক সেলস ম্যান, একই সঙ্গে জনমানসে নিজের কুরুচিকর স্বত্ত্বা (সারদা আর্থিক প্রতারণার ব্যাপারটা যদি ছেড়েও দি।) কে ক্রমাগত মানুষের সামনে সফল ভাবে তুলে ধরে উনি যে নেতিবাচক জনমত তৈরী করেছেন, তার প্রতিক্রিয়াকে আটকাবেন, কিভাবে? সৌরভ দা আপনিও তো বহুদিন সাংবাদিকতায় আছেন। মানুষের মাঝে নিত্য কাজ করছেন এমন “উষ্ণ অভ্যর্থনা” পেয়েছেন কখনো?”
বেলা আড়াইটে পর্যন্ত ওপরের এই কটি পোস্টে লাইক করে সহমত জানিয়েছেন ৪৬ জন। এরপর কুণাল নিমাই বিশ্বাসকে লেখেন, “রোজ হাজার মানুষের মধ্যে থাকি। এসব শেখাবেন না। না জেনে জ্ঞান দেবেন না। তৃণমূলের সমালোচনা হলে হাততালি আর আমি ঠিক যখন থেকে বামেদের একের পর এক কেলেঙ্কারির কথা বললাম, তখন গুটিকয়েক ভাড়াটে অসভ্য ‘রাজনীতি করবেন না’ বলে চেঁচালো, এটার মানে বুঝতে সময় লাগছে?”
এর পরেও মন্তব্য হয়েই চলেছে। অলোক রায় লিখেছেন, “চোর, চোট্টা, মিথ্যাবাদীর অপমানজনক কথা চুপচাপ শুনে যাওয়া বিরুদ্ধ মতের প্রতি সহিষ্ণুতা প্রদর্শন? এই করেই সাংবাদিকতার মান ধূলায় মিশিয়ে দিয়েছেন।”