Kunal, TMC, নটি বিনোদিনীর উদ্দেশে প্রণাম কুণালের

আমাদের ভারত, ২৫ ডিসেম্বর: শেষবারের মতো নটি বিনোদিনীর মঞ্চে ওঠার দিনটিকে স্মরণ করলেন তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ।

বুধবার তিনি এক্সবার্তায় লিখেছেন, “২৫ ডিসেম্বর, ১৮৮৬। শেষবারের মত মঞ্চে উঠেছিলেন নটি বিনোদিনী। মুখে ছিল মন্ত্র: “হরি গুরু, গুরু হরি।”

শ্রীরামকৃষ্ণদেবের মৃত্যু ১৬ অগাস্ট ১৮৮৬। তার ঠিক ১৩০ দিন পর বঙ্গ নট্টমঞ্চের নক্ষত্র বিনোদিনীর অকাল অবসর। সকলের সব অনুরোধ ফিরিয়ে মঞ্চের আলো থেকে সরে যান তিনি স্বেচ্ছায়। এক অদ্ভুত জীবন।

মৃত্যুপথযাত্রী শ্রীরামকৃষ্ণ যখন শ্যামপুকুরের বাড়িতে, প্রবেশের কড়াকড়ি এড়াতে ছদ্মবেশে কোট প্যান্ট টুপিতে পুরুষ সেজে একটিবার দেখতে গেছিলেন বিনোদিনী। সঙ্গে কালীপদ ঘোষ। কেউ চিনতে না পারলেও ঠাকুর একবার তাকিয়েই হেসে বলেছিলেন সেই কথা, যা বারবার অনুপ্রাণিত করেছে বিনোদিনীকে। “মা, তোমার চৈতন্য হোক।”

টুপি খুলে ঠাকুরের পা জড়িয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েছিলেন বিনোদিনী। সেদিনই বোধহয় মন ঠিক করে নেন ঠাকুর চলে গেলে তিনিও নিজেকে সরিয়ে নেবেন মঞ্চ থেকে। ২৫ ডিসেম্বর তাই নটি বিনোদিনীর শেষ অভিনয়।তখনকার সমাজ, গিরিশ ঘোষের সাহস, শ্রীরামকৃষ্ণের আশীর্বাদ, পতিতাপল্লী থেকে আসা ব্যক্তিগত জীবনের ভাঙাগড়ার সঙ্গে যুদ্ধ করে মঞ্চে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করা, থিয়েটার বাঁচাতে আত্মত্যাগ ও বঞ্চনার যন্ত্রণা— বিনোদিনী সব মিলিয়ে হয়ে উঠেছেন বাংলা অভিনয় জগতের সর্বকালের শ্রেষ্ঠ চরিত্র।

নটি বিনোদিনীর উদ্দেশে জানাই প্রণাম। আমার ‘পূজারিনি’ উপন্যাসটিতে এই গোটা সময়টিকে ধরে রাখার চেষ্টা করেছি। জীবনে আমি বহু ধরণের বহু লেখা, বই লিখেছি। কিন্তু আমার কাছে এটা আমার সেরা লেখা। সেরা কাজ। আমি তৃপ্ত। ঈশ্বরকে ধন্যবাদ এটা আমাকে লেখার সুযোগ দিয়েছেন। যদি মনে হয়, পড়ে দেখবেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *