আমাদের ভারত, ৪ জুন: বিপুল আনন্দ উল্লাস বদলে গেল বিষাদের সুরে। বেঙ্গালুরুতে আরসিবির বিজয়োৎসবে পদপিষ্ট হয়ে মৃত্যু হয়েছে কমপক্ষে ১১ জনের, আহত ৫০- এর বেশি। এই ঘটনায় শোক প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তবে সমর্থকদের সঙ্গে এই ভয়াবহ ঘটনা ঘটার পরেও কিভাবে স্টেডিয়ামের ভিতরে আনন্দ উৎসব পালিত হলো তা নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে।
আরসিবির আইপিএল ট্রফি জয়ের উল্লাসে মৃত্যু হয়েছে ১১ জনের। বুধবার বিকেলে ব্যাঙ্গালুরুর চিন্নাস্বামী স্টেডিয়াম চত্বরের এই ঘটনায় শোক প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। লিখেছেন বেঙ্গালুরুর ঘটনা অত্যন্ত হৃদয়বিদারক।
আরসিবি আইপিএল জেতার পর থেকেই ব্যাঙ্গালুরুজুরে বিজয় উৎসব চলছে। বুধবার শহরে একটি রোড শো হওয়ার কথা ছিল, কিন্তু সেটা প্রশাসন বাতিল করে যানজটের কথা ভেবে। তার বদলে চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামে সেলিব্রেশনের আয়োজন করে কর্ণাটক ক্রিকেট সংস্থা। আর তাতেই বিপত্তি। এই সেলিব্রেশনের জন্য লক্ষ লক্ষ সমর্থক জমা হন স্টেডিয়ামের বাইরে। স্টেডিয়ামে ঢোকার জন্য আলাদা পাস দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু স্টেডিয়ামের আসন সংখ্যার কয়েক গুণ বেশি মানুষ এখানে জড়ো হন। রাস্তায় বিরাট যানজট হয়ে যায়। পুলিশ লাঠিচার্জ শুরু করলে বিশৃঙ্খলা আরো বাড়ে। প্রাণ বাঁচাতে সমর্থকরা একে অপরকে টপকে পালাতে চেষ্টা করে আর তাতেই পদপিষ্ঠ হওয়ার পরিস্থিতি তৈরি হয়। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত কমপক্ষে ১২ জনের মৃত্যু হয়েছে এই ঘটনায়। আহত হয়েছে ৫০ জনেরও বেশি।
বাইরে যখন এই ভয়াবহ পরিস্থিতি, তখন কিন্তু সেলিব্রেশন বন্ধ হয়নি। বিরাট কোহলি, রজত পাতিদাররা সমর্থকদের জন্য ট্রফি নিয়ে ভিকট্রি দেখাচ্ছেন স্টেডিয়ামে। এত বছর ধরে তাদের পাশে থাকার জন্য বিরাট ধন্যবাদ জানান সমর্থকদের। কোহলি, রজত এই সাফল্যের জন্য একে অপরকে বাহবা দিচ্ছেন। কিন্ত একবারও তারা মৃত বা আহত জন্য সমবেদনা জানাননি বলে সমালোচনা শুরু হয়েছে। তবে অনেকেই বলছেন, বিরাটরা হয়তো পুরো ঘটনা তখনো জানতেন না। কিন্তু ঘটনার পর এক ঘণ্টা কেটে গেলেও তাদের প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
প্রশ্ন উঠেছে কর্ণাটক সরকারের ভূমিকা নিয়েও। ঘটনা শুনে মুখ্যমন্ত্রী হাসপাতালে ছুটে গেলেও উপমুখ্যমন্ত্রীর ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। কারণ তিনি স্টেডিয়ামের সামনে গিয়ে জানিয়েছেন, পরিস্থিতি সামলানোর জন্য ৫০০০ নিরাপত্তা রক্ষী থাকলেও তা নিয়ন্ত্রণ করতে পারা যায়নি। ক্ষমা চেয়েছেন এবং তারপর স্টেডিয়ামে ঢুকে বিরাটদের সেলিব্রেশনের মধ্যমণি হয়েছেন। যেন তার আগে কোন ঘটনাই ঘটেনি। এসব নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তার বক্তব্য ছিল, দুর্ঘটনার কথা ভেবে সেলিব্রেশন ১০ থেকে ১৫ মিনিটে শেষ করে দেওয়া হয়েছে।