Rampurhat, Navin Club, অবলুপ্তির পথে জারোয়া উপজাতি, থিম রামপুরহাটের নবীন ক্লাবের

আশিস মণ্ডল, রামপুরহাট, ৮ অক্টোবর: অবলুপ্তির পথে জারোয়া উপজাতি। সেই উপজাতি গোষ্ঠীকেই এবারের থিমে ফুটিয়ে তুলেছে বীরভূমের রামপুরহাট শহরের অন্যতম পুজো কমিটি নবীন ক্লাব। নামে নবীন হলেও থিম ভাবনায় শহরে এই ক্লাবেই প্রথম ছোট্ট জায়গার মধ্যে থিম ভাবনাকে ফুটিয়ে তুলে মানুষকে নিজেদের মণ্ডপের দিকে টেনেছে।

নবীন ক্লাবের বয়স ২৪ বছর। আগামী ২০২৫ সালে তাদের রজত জয়ন্তী বর্ষ। ইতিমধ্যে রাজত জয়ন্তী পালনের প্রস্তুতি শুরু করেছে তারা। তবে এবারও থিম ভাবনায় কোনো খামতি রাখেনি ক্লাব কর্তারা। ক্লাব কর্তা উজ্জ্বল ধীবর বলেন, “জারোয়া উপজাতি কেমন, সেটা আমরা বইয়ে পড়েছি। সকলের পক্ষে আন্দামান দীপপুঞ্জে গিয়ে তাদের চাক্ষুস করা সম্ভব হয়নি। বর্তমান প্রজন্ম তো জারোয়া উপজাতির নামই শোনেনি। সেই জারোয়া উপজাতিকেই আমরা মণ্ডপে তুলে ধরেছি। মণ্ডপ তৈরি করা হয়েছে শরকাঠি, হোগলাপাতা, বেল কাঠ দিয়ে। ২০টি জারোয়া মূর্তি দিয়ে মণ্ডপ সাজানো হয়েছে। মায়ের মূর্তি তৈরি করা হয়েছে উপজাতির আদলে। তবে মূর্তির বিশেষ আকর্ষণ মা দুর্গার ২০টি হাত। প্রতি হাতে অস্ত্র। ২০ হাত দেওয়ার কারণ, দেশে যেভাবে আসুরিক শক্তি বৃদ্ধি পাচ্ছে তাতে মায়ের দশ হাতে অসুরদের বধ করা যাবে না। সেই কারণেই আমাদের এই ভাবনা। এই ভাবনা থেকে যদি বর্তমান অসুরকুল সচেতন হয় তাহলেই আমাদের সার্থকতা”।

ক্লাবের সদস্য, পেশায় শিক্ষক সন্দীপ মণ্ডল বলেন, “জারোয়া জাতিগোষ্ঠী হলো ভারতীয় আদিবাসীদের মধ্যে এক গোষ্টীর আদিবাসী, যাদের বসবাস আন্দামান দীপপুঞ্জে। তারা মূলত যেহেতু বাইরের সঙ্গে পারস্পরিক ক্রিয়া এড়িয়ে চলে, তাদের সমাজ, সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্যের বিবরণ বোধ দুর্বল। তাদের নামের মানে মূলত “পৃথিবীর মানুষ” অথবা “প্রতিকূল মানুষ”। তাদের বর্তমান সংখ্যা আনুমানিক ২৫০-৪০০-র মধ্যে। রোগ দ্বারা তারা বিলুপ্ত হতে থাকে বলেই সন্দেহ করা হয়। ফলে সাধারণ মানুষ তাদের কাছে পৌঁছোতে পারে না। সেই সমাজকে তুলে ধরে তাদের জীবনযাত্রা ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করা হয়েছে মণ্ডপে। আমাদের বিশ্বাস দর্শনার্থীদের ভালো লাগবে এই থিম”।

পুজোর কটাদিন মণ্ডপ এবং প্রতিমা দেখতে লম্বা লাইন পড়ে যায়। তাই চতুর্থী থেকেই শহরের মানুষ নবীন ক্লাবের মণ্ডপ দর্শন করতে শুরু করেছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *