TMC, Abhishek, Belda, “দিল্লির অহঙ্কার ও ঔদ্ধত্য চূর্ণ করতে তৃণমূলের বেশি সময় লাগবে না,” বেলদায় বললেন অভিষেক

পার্থ খাঁড়া, আমাদের ভারত, পশ্চিম মেদিনীপুর, ১৬ মার্চ: দিল্লির অহঙ্কার ও ঔদ্ধত্য চূর্ণ করতে তৃণমূলের বেশি সময় লাগবে না। শনিবার বিকেলে বেলদা স্টেডিয়ামে জনসভায় বিজেপিকে এভাবেই হুঁশিয়ারি দিলেন তৃণমূলের সর্ব ভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।

তিনি বলেন, রামমন্দিরকে সামনে রেখে ২০১৯- এ ভোট নিল বিজেপি। ৩ হাজার কোটি টাকা খরচ করা হয়েছে। আর মানুষের মাথার ছাদ কেড়ে নেওয়া হলো। এটাই বিজেপির আসল রূপ।

এবারের লোকসভা নির্বাচন বিজেপিকে উচিত শিক্ষা দেওয়ার নির্বাচন বলে তিনি জানান। তিনি বলেন, এটা বিজেপিকে উচিত শিক্ষা দেওয়ার ভোট। প্রতিরোধ করার, প্রতিশোধ নেওয়ার ও জবাব দেওয়ার ভোট।

বিজেপিকে ১০-০ গোলে হারানোর কথা বলে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ওঁদের নেতারা চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করুক, শ্বেত পত্র প্রকাশ করুক। মানুষের কাছে বলুক, বাংলার জন্য কী করেছে। ২০২১ সালে গো হারা হারার পর বাংলাকে জব্দ করতে ৩ বছর ধরে বাংলা আবাস প্রকল্পে ১০ পয়সাও দেয়নি। ২ বছর ধরে ৫৯ লক্ষ শ্রমিকের একশো দিনের কাজের টাকা আটকে রেখেছে।
তৃণমূল কথা দিলে কথা রাখে তা জানিয়ে তিনি বলেন, শুধুমাত্র পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার ২ লক্ষ ৭০ হাজার ৮৬৭ জন শ্রমিকদের জন্য ২৮২ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে। মার্চ মাসের প্রথমেই তাঁদের অ্যাকাউন্টে টাকা ঢুকে গেছে।

শনিবার বিকেলে যখন জাতীয় নির্বাচন কমিশন লোকসভা নির্বাচনের নির্ঘন্ট ঘোষণা করেছেন সেই সময় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় সভা থেকে জানান, তাঁর এদিনের সভা দশ দিন আগে ঠিক ছিল। তৃণমূল আগেই প্রার্থী ঘোষণা করে দিয়েছে। অথচ বিজেপি এখনো তা করতে পারেনি। তিনি বলেন, ওরা দেখছে তৃণমূলের কারা কারা উচ্ছিষ্ট,কাদের ডাস্টবিনে ছুঁড়ে ফেলে দিয়েছে তাদের প্রার্থী করবে। তৃণমূল যাঁদের বর্জন করছে, বিজেপি তাদের গ্রহণ করছে। কোনো ভদ্রলোক বিজেপি করেন না। যতসব সিপিএমের খড়কুটো প্রোডাক্ট দিয়ে এরাজ্যে বিজেপি শুরু করেছিল।

লক্ষ্মীর ভান্ডার, কন্যাশ্রী, বাংলা আবাস প্রকল্প, একশো দিনের বকেয়া টাকা, রাস্তার টাকা সব রাজ্য সরকার দিচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, শুধুমাত্র লক্ষ্মীর ভান্ডারের মতো সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্পে রাজ্য সরকারের প্ৰতি বছর খরচ হয় ২৫ হাজার কোটি টাকা।

জনগণের গর্জন, বিজেপির বিসর্জন, শ্লোগান তুলে ভিড়ে ঠাসা কর্মী সভায় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, বিজেপির দয়া দক্ষিণ্যে আর বাঁচা যাবে না। মাথা উঁচু করে বাঁচবেন। গলা কেটে দিলেও জয় বাংলা বেরবে।

মঞ্চে থাকা মেদিনীপুর লোকসভা কেন্দ্রের প্রার্থী জুন মালিয়াকে সামনে ডেকে নেন তিনি। এরপর জনগণের উদ্দেশ্যে প্রশ্ন ছুঁড়ে দেন, কাকে সাংসদ হিসেবে দিল্লি পাঠাবেন? যে মেয়ে আপনাদের পাশে থেকে পাশে দাঁড়িয়ে কাজ করবেন না? না যে দাদা রোজ সকালে শুধু প্রাতঃভ্রমন করেন। বিজেপির বিদায়ী সাংসদ দিলীপ ঘোষের নাম উল্লেখ করে তিনি বলেন, উনি শুধু পার্কে হাঁটেন। ৫ বছরে একটাও উন্নয়ন মূলক বৈঠক পর্যন্ত করেননি, কাজ করা তো দূরের কথা।

তিনি কথা দিলে কথা রাখেন বলে বলেন, কথা দিয়েছিলেন গরিব মানুষের একশো দিনের বকেয়া টাকা দেওয়া হবে। তা দেওয়া হয়েছে। এবার কথা দিচ্ছেন লোকসভা ভোটের পর গরিব মানুষের বাড়ি হবে। তিনি বলেন, আপনাদের যাকে ইচ্ছে ভোট দিন, কিন্তু নিজেই নিজের অধিকারকে সামনে রেখে ভোট দিন। ২০১৪- এ মানুষ বিজেপিকে ভোট দিয়ে জিতিয়ে এনেছিলেন। পরে বুঝতে পেরেছেন খাল কেটে কুমির এনেছেন।

এদিনের সভায় উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী মানস ভুঁইঞা, শিউলি সাহা, শ্রীকান্ত মাহাতো, জেলা সভাপতি সুজয় হাজরা সহ জেলার সমস্ত বিধায়করা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *