পারুল খামারিয়ার, আমাদের ভারত, কলকাতা, ১৫ এপ্রিল: ইতিহাস বইয়ে লেখা আছে ‘বঙ্গাব্দ’ নাকি সম্রাট আকবর প্রচলন করেন। অপরদিকে দীর্ঘদিন ধরে জাতীয়তাবাদী বিচার ধারার ‘দেশের মাটি’ ও অন্যান্য অনেক সংগঠন দাবি করে আসছেন যে, মহারাজ শশাঙ্ক হলেন বঙ্গাব্দের প্রবর্তক। শশাঙ্কের রাজ্যাভিষেকের দিন থেকেই বঙ্গাব্দ চালু করেন রাজা।
আর সেই দাবিকেই মান্যতা দিয়ে আজ ১লা বৈশাখ’ ১৪৩২, ‘দেশের মাটি কল্যাণ মন্দির’ এবং ‘দেশের মাটি মাতৃ মিলন মন্দির’, ১৪৩২ বঙ্গাব্দের প্রথম দিনে নববর্ষের সুবাতাস অপরাহ্নে সুবেশে, সনাতনী সংস্কৃতির মঙ্গলালোকে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রায় অংশ নিয়ে কলকাতা মহানগরীর পথ পরিক্রমা করে এদিন। পথে হেঁটেছেন আরও দু’টি রাষ্ট্রবোধ সম্পন্ন অরাজনৈতিক সংগঠনের সদস্যরা। তাদের সম্মিলিত স্লোগানে, গানে, কীর্তনে, বাদ্যযন্ত্রে, সাংস্কৃতিক-সজ্জায় রাজপথ উজ্জ্বল হয়ে ওঠে। মহারাজা শশাঙ্ক সাজিয়ে ঘোড়ায় চড়িয়ে ঘোরানো হয়। পথচলতি মানুষেরা তাদের সাধুবাদ জানান। সোশ্যাল মিডিয়ায় ছবি/ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে। নববর্ষ এভাবেই পালিত হয় কলকাতা মহানগরীতে।
বাঙালির কয়েক হাজার বছরের সংস্কৃতি চিরজীবী হোক, এটাই ছিল এদিনের শোভাযাত্রার মূল উদ্দেশ্য। বাঙালি-সংস্কৃতি বৃহত্তর ভারতীয় সংস্কৃতির অঙ্গ, তার যথার্থ ইতিহাস জাগরিত হোক, এই প্রত্যয় নিয়েই এদিন পথে নেমেছেন শুভবুদ্ধি সম্পন্ন মানুষ। ‘দেশের মাটি’ গোষ্ঠীর অন্যতম কার্যকর্তা মিলন খামারিয়া এদিন বলেন, “আমরা শশাঙ্ক প্রবর্তিত বঙ্গাব্দের ঐতিহাসিক সত্যের সন্ধানে বিগত কয়েক বছর ধরেই অনুসন্ধান চালিয়ে এসেছি৷ এখন বহু সংগঠন এই সত্যকে মান্যতা দিচ্ছেন। সত্যকে তো আর চেপে রাখা যায় না! একদিন প্রকৃত সত্য প্রকাশিত হবেই। আমরা চাই, বাংলা ও বাঙালি সংস্কৃতির সত্য ইতিহাস উন্মোচিত হোক৷ ‘বঙ্গীয় সনাতনী সংস্কৃতি পরিষদ’, ‘বাংলা আবার’ — এরা সকলেই একই চিন্তাধারার পথিক, তাই তাদের সঙ্গে পা মিলিয়েছি। তাই তাদের সঙ্গে রাজপথে হেঁটে লক্ষ লক্ষ মানুষের কাছে বার্তা পৌঁছে দিয়েছি।” দেশের মাটির আর এক সদস্য ড. কল্যাণ চক্রবর্তী এই সফল পথ পরিক্রমায় সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, কোনো মিথ্যা ইতিহাসই জোর করে লিখিয়ে নেওয়া যায় না। মিথ্যা বলার মোটিভটি কী, তা বোঝা দরকার। মানুষ সত্যের উপাসক, তাই চেষ্টা করে নতুনভাবে অনুসন্ধান করে সত্যরূপ পুনঃপ্রকাশ করতে। আজকে একটি শ্লোগান, ‘জয় বঙ্গ জয় শশাঙ্ক’ বাঙালির মুখে মুখে ধ্বনিত হচ্ছে; যে শ্লোগান দেশের মাটি ৬ বছর আগে থেকে শুরু করেছে। ছবি এঁকেছেন দেশের মাটির শিল্পীরা। এই ছবি আজ বাঙালির অন্দরমহলে পৌঁছে গেছে। এটাই সংগঠনের সার্থকতা।”
এদিন দেশের মাটির পক্ষ থেকে সোমা ব্যানার্জি, নিবেদিতা কর,বিধান সরকার, নিতাই চন্দ্র মন্ডল, প্রবীর মন্ডল, অদ্বয় কুমার সরকার, রণদৃপ্ত শীল ও আরও অনেকে উপস্থিত ছিলেন।