Jadavpur University, ABUTA, যাদবপুরে অচলাবস্থা নিরসনের দাবিতে শিক্ষকদের অবস্থান-বিক্ষোভ

আমাদের ভারত, কলকাতা, ১৯ জানুয়ারি: যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান পঠনপাঠন ও প্রশাসনিক অচলাবস্থা নিরসনের দাবিতে শুক্রবার বেলা ৩টে থেকে ৪টে পর্যন্ত শিক্ষকদের অবস্থান-বিক্ষোভ কর্মসূচি পালিত হয়। এই কর্মসূচির উদ্যোক্তা ছিল সারা বাংলা
বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি (আবুটা)।

আবুটা-র যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আহ্বায়ক দেবব্রত বেরা এই কর্মসূচিতে বলেন― সমাবর্তনের কয়েক ঘণ্টা আগে উপাচার্যকে অপসারণের স্বেচ্ছাচারী সিদ্ধান্তে গোটা শিক্ষাসমাজ গভীরভাবে হতাশ ও অসন্তুষ্ট। উপাচার্যকে অপসারণের ধরণ এবং তার পরবর্তী পদক্ষেপগুলি অত্যন্ত স্বৈরাচারী। যা উপাচার্যের পদ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো প্রতিষ্ঠানের প্রতি সীমাহীন অবজ্ঞার বহিঃপ্রকাশ। আচার্যের পদ থেকে এটা প্রত্যাশিত নয়।

তাঁর ক্ষমতার নির্বিচার প্রয়োগে বলি হচ্ছে ছাত্রদের স্বার্থ। উপাচার্যের মতো নির্বাহী প্রধানকে রাতারাতি অপসারণের ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ে সম্পূর্ণ অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। আচার্য ভালো করে জানতেন সুপ্রিম কোর্টের অন্তর্বতীকালীন আদেশ থাকায় তিনি নতুন কোনও স্থায়ী বা অস্থায়ী উপাচার্য নিয়োগ করতে পারবেন না। তা সত্বেও তিনি ভারপ্রাপ্ত উপাচার্যকে রাতারাতি অপসারণ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রমে অভূতপূর্ব অচলাবস্থার সৃষ্টি করলেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রমবর্ধমান সঙ্কট নিরসনে তাঁর কোনও বাস্তব পদক্ষেপ আজও দেখা গেলনা। যদিও বিশ্ববিদ্যালয়ের অচলাবস্থা নিরসনে মাননীয় আচার্য-রাজ্যপাল সম্প্রতি তাঁর মতামত ব্যক্ত করেছেন। তিনি বলেছেন, সুপ্রিম কোর্ট সার্চ কমিটি তৈরি করলেই স্থায়ী উপাচার্য নিয়োগের বিষয়টি এগোবে। তার আগে যাদবপুরের উপাচার্য নিয়ে কী করা যায়, সে বিষয়ে তিনি আইনজীবীদের মাধ্যমে সুপ্রিম কোর্টের কাছে জানতে চাইবেন।

বর্তমান পরিস্থিতিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনও কাজ যাতে আটকে না থাকে, তার জন্য আচার্য আইনি পরামর্শ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনের মধ্যে দিয়ে নির্দেশ দেবেন।”

আবুটার সাধারণ সম্পাদক গৌতম মাইতি তাঁর বক্তব্যে প্রশ্ন তোলেন, সুপ্রিম কোর্ট সার্চ কমিটি তৈরি করলেই যদি স্থায়ী উপাচার্য নিয়োগের বিষয়টির সমাধান সম্ভব হয় তাহলে কেন তিনি তাঁরই নিযুক্ত অন্তর্বর্তী উপাচার্যকে অপসারণ করে বিশ্ববিদ্যালয়ে চরম অচলাবস্থা তৈরি করলেন? অন্তর্বর্তী উপাচার্যকে অপসারণ করার আগে বিশ্ববিদ্যালয়ে সম্ভাব্য অচলাবস্থা এড়াতে তিনি কেন আগেভাগেই সুপ্রিম কোর্টের কাছে জানতে চাইলেন না যে, সেই দায়িত্ব অন্য কাউকে দেওয়া যাবে কিনা?

বর্তমান পরিস্থিতিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনও কাজ যাতে আটকে না থাকে, তা নিয়ে এখন কেন তিনি আইনি পরামর্শ নেওয়ার কথা ভাবছেন? অন্তর্বর্তী উপাচার্যকে অপসারণ করলে অচলাবস্থা তৈরি হবে তা কি তিনি জানতেন না? তিনি কেন এ বিষয়ে আইনি পরামর্শ উপাচার্যকে অপসারণের আগে নেননি?

আমরা মনে করি, বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান অচলাবস্থা আচার্যেরই সৃষ্টি। অচলাবস্থা নিরসনের দায় তাঁকেই নিতে হবে। রাজ্য সরকারকেও এই অচলাবস্থা নিরসনে উপযুক্ত ব্যবস্থা নিতে হবে।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *