আমাদের ভারত, ২০ ফেব্রুয়ারি: বহু বাধা পেরিয়ে শেষপর্যন্ত মঙ্গলবার সন্দেশখালি পৌঁছে সেখানকাল নির্যাতিতা মহিলাদের নানা অভিযোগের কথা শুনলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। এলাকায় বিক্ষোভ শুরু হওয়ার পর থেকে নানা অভিযোগের কথা জানিয়েছেন মহিলারা। এই দিনও তারা শুভেন্দু অধিকারীর কাছে বলেন, রাত্রিবেলা গ্রামে ঢুকে ভয় দেখানো হচ্ছে। এই সবকিছুর প্রতিরোধে গ্রামবাসীদের একজোট হয়ে লড়াই করার পরামর্শ দেন শুভেন্দু অধিকারী।
আদালতের নির্দেশে বিজেপির কোনো নেতা কর্মী ছাড়া শুধুমাত্র শুভেন্দু অধিকারী ও বিধায়ক শঙ্কর ঘোষের সন্দেশখালিতে যাওয়ার অনুমতি পান তারা। এরপর তারা সন্দেশখালির ৮ নম্বর মাঝের পাড়ায় যান। সেখানে বীণাপাণি ক্লাবের মাঠে বসে গ্রামবাসীদের সঙ্গে কথা বলেন। সেই সময় শুভেন্দু অধিকারী নন্দীগ্রামের অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন তাদের কাছে। বিরোধী দলের নেতা বলেন, সন্ধের পর কোনো বহিরাগতকে দেখলেই শাঁখ বাজাবেন সেই অনুযায়ী সবাই সতর্ক হয়ে যাবে। একজোট হয়েই লড়াই করবেন।
পাত্র পাড়ায় নির্যাতিতার বাড়িতে সিঁড়িতে বসে মহিলাদের অভিযোগ শোনেন বিরোধীদল নেতা। ওই মহিলা বলেন, “আমার বাড়ি ঘর সব ভেঙ্গে দিয়েছে। ঘরের নিচে দিয়ে দেখার চেষ্টা করছিল, আমি ঘরে আছে কিনা। আমি লুকিয়ে ছিলাম বাচ্চা নিয়ে। রাত সাড়ে এগারোটা নাগাদ এসেছিল। দেখতে পেলে আমাকে মেরে ফেলত।
সন্দেশখালি অপর এক মহিলা বিজেপি কর্মীর স্ত্রী জানান, রাতে পুলিশের পোশাক পরে কয়েকজন দুষ্কৃতী তার বাড়িতে ঢুকে সন্তানকে কোল থেকে ফেলে দেয়। বাড়িঘর ভাঙ্গচুর করে। গ্রামের লোক ছুটে আসতেই তারা পালিয়ে যায়।
গ্রামবাসীরা বারবার অভিযোগ করেন, বহিরাগতরা এসে অত্যাচার চালাচ্ছে। তার পরিপ্রেক্ষিতে বিরোধী দলনেতা একজোট হয় লড়াইয়ের পরামর্শ দেন।
ওই এলাকার বাসিন্দাদের কাছে শুভেন্দু অধিকারী জানতে চান, কতদিন তারা ভোট দিতে পারেননি? বাসিন্দারা বলেন, তাদের ভোট দিতে যেতে দেওয়াই হয় না। বাচ্চাদের স্কুল পাঠাতে ভয় পাচ্ছেন বলে শুভেন্দুকে জানান মহিলারা। বিরোধী দলের নেতা আশ্বাস দেন, “আজ থেকে বাচ্চাদের স্কুলে পাঠাও কিছু হলে আমার দায়িত্ব।”
অশান্ত সন্দেশখালি শান্ত কবে হবে সেটাই এখন প্রশ্ন। ক্ষোভ প্রশমনের চেষ্টা শুরু করেছে শাসক পক্ষ। কিন্তু স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, শেখ শাহজাহান ধরা না পড়া পর্যন্ত এলাকা শান্ত হবে না।
মানুষের ক্ষোভের আগুনে জ্বলছে সন্দেশখালি। মানুষ আতঙ্কিত, তাদের সন্তানদের ভবিষ্যৎ নিয়ে। বেশ কয়েকজন অভিভাবক তাদের সন্তানকে নদী পার করিয়ে অন্য জায়গায় পাঠিয়ে দিয়েছেন বলেও জানান শুভেন্দু অধিকারীকে। সেখানে রামকৃষ্ণ মিশন আশ্রমের হোস্টেলে রেখে পড়াশোনা করার জন্য তাদের ভর্তি করেছেন তারা।